দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
চম্পাহাটি
সরু সুতোয় বিকিকিনি
প্রতি দিন সকালে বারুইপুর শহরতলির চম্পাহাটি এলাকায় রেললাইনের পাশে মাছের বেচাকেনা চলে। দীর্ঘ দিন ধরেই তা চলে আসছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাছের বাজার রেললাইনের উপরে উঠে আসে। বিপজ্জনক ভাবে চলে বেচাকেনা। চম্পাহাটির এই পাইকারি মাছের বাজার থেকেই দক্ষিণ শহরতলির বিভিন্ন বাজারে মাছ যায়।
পঞ্চায়েত সমিতির প্রতিনিধি থেকে প্রাক্তন এবং বর্তমান বিধায়ক সবাই স্বীকার করেছেন এ ভাবে বাজার বসা বিপজ্জনক। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে এ ভাবেই তা চলছে। বাজারটির আধুনিকীকরণ এবং স্থানান্তর নিয়ে আশু কোনও পরিকল্পনা নেই বলেও তাঁরা জানান। বারুইপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তৃণমূলের প্রকাশচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে এ ভাবে চলে আসছে। এখনও কোনও পরিকল্পনা হয়নি। তবে এই বাজারের আধুনিকীকরণ জরুরি। এখানে যে ভাবে কেনাকাটি হয় তা খুব বিপজ্জনক।”
স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রতি দিন রাত ২টো থেকে চম্পাহাটি স্টেশন সংলগ্ন রেললাইনের পাশে এই পাইকারি মাছের বাজার শুরু হয়। চলে সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার চম্পাহাটি স্টেশনে ট্রেন চলাচল শুরু হয় ভোর সাড়ে ৪টে থেকে। শীতে কুয়াশার মধ্যেও রেললাইনের উপরে মাছের দরাদরি চলতে থাকে বলে বাসিন্দারা জানান।
চম্পাহাটি পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের হেমকুমার মণ্ডল বলেন, “সমস্যাটা আমাদেরও নজরে এসেছে। আমরা ওখানকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনাও করেছিলাম। যে ভাবে ওই বাজারে কেনাকাটি হয় তা সত্যিই বিপজ্জনক। জায়গার অভাবে সেই কাজ করতে পারিনি।” এলাকার বাসিন্দারা জানান, পঞ্চাশ বছরেরও বেশি রেললাইনের পাশে এ ভাবে মাছের বাজার বসে। বারুইপুর, সোনারপুর, চম্পাহাটি সংলগ্ন এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ীরা এই পাইকারি বাজারে মাছ বিক্রি করেন। বাজার সংলগ্ন এলাকার মানুষের অভিযোগ, এক এক সময়ে দুর্গন্ধে টেকা যায় না। সকালে বাজার উঠে গেলেও সারা দিন রাস্তায় নোংরা জল পাড়িয়েই যাতায়াত করতে হয়। বর্ষায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
এলাকার সোমা কয়াল বলেন, “সারা বছর আমাদের এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে কাটে। এই বাজারের আধুনিকীকরণ হলে আমাদের সুবিধে হয়।” চম্পাহাটি মৎস্য আড়ত কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সভাপতি শম্ভুচরণ পাল বলেন, ‘‘আমাদের ব্যবসার কোনও ক্ষতি না করে সত্যিই যদি একটি আধুনিক বাজার করা যায় তা হলে আমাদের ভাল।”
বারুইপুরের প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের হেমেন মজুমদারের কথায়: “দীর্ঘ দিনের পুরনো এই বাজার। এখনও সে ভাবে কোনও উন্নয়নের পরিকল্পনা হয়নি।” বারুইপুর পশ্চিমের বর্তমান বিধায়ক এবং রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য আশ্বাস দিয়ে বলেন, “বাজারটি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।” পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সমীর গোস্বামী বলেন, “এই সমস্যার কথা জানি। বিষয়টি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হচ্ছে।”

ছবি: সুব্রত রায়




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.