দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
পথ সারাই
আরও কত দূরে...
বাসিন্দাদের বহু আবেদন-নিবেদনেও হাল ফেরেনি এলাকার সবচেয়ে ব্যস্ত রাস্তার। শেষ কবে রাস্তা সংস্কারের কাজ হয়েছে, মনে নেই তাঁদের। মহেশতলা পুর এলাকার নুঙ্গি স্টেশন রোড দু’দশকেরও বেশি বেহাল বলে পারবাংলা, পশ্চিম জগতলা, চ্যাটার্জিপাড়া, জেলেপাড়া সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য: নুঙ্গি এলাকার কয়েক লক্ষ বাসিন্দার দৈনন্দিন যাতায়াত এই রাস্তার উপরে নির্ভরশীল। এক পশলা বৃষ্টি হলেই রাস্তা আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। ঝুঁকি নিয়ে চলাচলই এখানে নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বজবজ ট্রাঙ্ক রোডের ইন্দ্রধনু মোড় থেকে নুঙ্গি স্টেশন রোড গিয়ে মিশেছে গঙ্গার তীরে নুঙ্গি ফেরিঘাটে। প্রায় পাঁচ কিলেমিটার বিস্তৃত এই রাস্তার উপরেই রয়েছে নুঙ্গি স্টেশন বাজার, নুঙ্গি স্টেশন এবং নুঙ্গি শ্মশান। ফলে সারা দিনই এই রাস্তায় যানবাহনের চাপ থাকে। মহেশতলা পুরসভার ২৭, ২৮, ৩১, ৩২ এবং ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য দিয়ে গিয়েছে এই রাস্তা। টালিগঞ্জ, তারাতলা এবং বজবজ ট্রাঙ্ক রোডে যাতায়াতের জন্য এলাকার মানুষ এই রাস্তাই ব্যবহার করেন। স্থানীয় শ্যামসুন্দর মৈত্র বলেন, “গঙ্গার ও পারে হাওড়ার হীরাপুর, সাঁকরাইল এলাকা। কলকাতায় যাতায়াতের জন্য ওই সব এলাকার অসংখ্য মানুষ নৌকায় গঙ্গা পার হয়ে এই রাস্তাই ব্যবহার করেন।”
বাসিন্দাদের এই সব অভিযোগের প্রমাণ মিলল নুঙ্গি স্টেশন রোডে পা দিতেই। জায়গায় জায়গায় পিচ উঠে বেরিয়ে পড়েছে ইট। বিভিন্ন জায়গা খানাখন্দে ভরা। নুঙ্গি রেলগেটের সামনে রাস্তার হাল খুব খারাপ। পিচের রাস্তা ঢেকে গিয়েছে মাটির স্তূপে। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, এই রাস্তায় যানবাহন চলে প্রায় নৌকার মতো দুলে দুলে। যে কোনও সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। অথচ, এই রাস্তা সারাইয়ের কোনও ব্যবস্থা হয়নি।
ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকার অটোচালকরাও। তাঁদের অভিযোগ, এই রাস্তা দিয়ে যাত্রিবোঝাই গাড়ি নিয়ে যেতে তাঁদের খুব ভয় লাগে। একটু অসতর্ক হলেই বিপদ। এক সময়ে মহেশতলা পুরসভা দীর্ঘ দিন বামপন্থীদের দখলে ছিল। সেই সময়েও এই রাস্তা সারাইয়ের জন্য অনেক বার আবেদন করেও লাভ হয়নি। এখন পুরবোর্ড তৃণমূলের দখলে।
এই বোর্ডের কাছেও রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে তাঁরা অনেক বার আবেদন করেছেন বলে অটোচালকরা জানান। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, এখনও কোনও কাজ হয়নি। বার বার আবেদন করেও ফল না মেলায় রাস্তার হাল আদৌ কোনও দিন ফিরবে কি না তা নিয়ে গভীর সংশয় রয়েছে এলাকার বাসিন্দা এবং চালকদের।
মহেশতলা পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সিপিএমের কালী ভাণ্ডারী বলেন, “আমাদের সময়ে এলাকার বেশ কয়েকটি রাস্তা নিয়ম করে দু’-তিন বছর অন্তর সারাই করা হত। তার মধ্যে এলাকার সবচেয়ে ব্যস্ত রাস্তা নুঙ্গি স্টেশন রোডও ছিল। এখন আর সে সব হচ্ছে না।” বর্তমান চেয়ারম্যান তৃণমূলের দুলাল দাস বলেন, “নুঙ্গি স্টেশন রোডের সমস্যা আমাদের নজরে এসেছে। ওই রাস্তা সারাইয়ের জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।”

ছবি: অরুণ লোধ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.