|
|
|
|
অভিনন্দনের সৌজন্য এড়াল নীতীশের দল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটনা |
তাঁর এনডিএ সতীর্থ ‘হ্যাটট্রিক’ করেছেন। শত্রু-মিত্র সবাই তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ব্যতিক্রম নীতীশ কুমার। আহত বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন নীতীশের সৌজন্যবোধ নিয়েই। বিহার বিজেপি-র সভাপতি সি পি ঠাকুরের বক্তব্য, রাজনীতিতে বিজয়ীকে তাঁর বিজিত প্রতিদ্বন্দ্বীও অভিনন্দন জানান। নরেন্দ্র মোদীর প্রতি এই সৌজন্যটুকুও নীতীশ দেখালেন না! যাঁকে ঘিরে এই সমালোচনার ঝড়, তিনি নিজে? গত কাল এবং আজ বারবার এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলেও নীতীশ নীরবই।
কিন্তু কেন? মাস কয়েক আগে মোদীর জন্মদিনেও তো নীতীশ অভিনন্দন জানিয়ে তাঁকে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। তা নীতীশ নিজেই সাংবাদিকদের জানান। মোদীর জন্মদিনে বিহার বিজেপি-র নেতারা বিশাল কেক কেটেছিলেন। তার ভাগ পাননি বলে সাংবাদিকদের সামনে ঠাট্টাও করেছিলেন।
রাজনীতির কারবারীরা বলছেন, রাজ্য-রাজনীতির বাধ্যবাধকতা থেকেই নীতীশ এটা করেছেন। কারণ মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক তাঁর বড় পুঁজি। মোদীকে অভিনন্দন জানিয়ে তাকে চটাতে নীতীশ নারাজ। বিশেষ করে, রাজ্য-রাজনীতিতে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী লালুপ্রসাদকে বাড়তি কোনও অস্ত্র নীতীশ দেবেন না। এক সময় বিহারের মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক ছিল লালুর সঙ্গে। লালু এখন তাঁর হৃত ভোটব্যাঙ্ক উদ্ধারে সচেষ্ট। যে কারণে লালু বারবারই নীতীশ-বিজেপি সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, কটাক্ষ করেন। মোদীকে অভিনন্দন জানিয়ে লালুকে সুযোগ দিতে চান না নীতীশ।
তবে নীতীশের দল জেডিইউ-র বক্তব্য অন্য। মোদীর গুজরাত-বিজয় যে স্রেফ গুজরাতেই সীমাবদ্ধ নয়, এই বার্তা নীতীশরা পেয়ে গিয়েছেন। তাঁরা সিঁদুরে মেঘ দেখছেন এই জয়ে। জেডিইউ নিশ্চিত, ২০১৪-র লোকসভা ভোটে এনডিএ-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে মোদীর নাম নিয়ে সব থেকে বেশি আলোচনা হবে। নীতীশদের মূল আতঙ্ক এখানেই।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী পদে মোদীর নামই যাতে এনডিএ বৈঠকে বিবেচনার জন্য না আসে, তার জন্য প্রকাশ্যেই নীতীশ এনডিএ জোটের প্রধানমন্ত্রী-পদপ্রার্থীর ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ভাবমূর্তির উপর জোর দিয়েছিলেন। নীতীশের সেই চালে মোদী খানিকটা ধাক্কাও খান। কিন্তু তৃতীয় বারের গুজরাত জয় মোদীকে ফের দিল্লির তখ্তের দিকে এগিয়ে দিয়েছে। এতেই শঙ্কিত নীতীশরা।
জেডিইউ-এর জাতীয় মুখপাত্র শিবানন্দ তিওয়ারি বলেন, “এ সব নিয়ে সংবাদমাধ্যম অযথা জল ঘোলা করার চেষ্টা করছে। বিজেপি যদি একা লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করে তা হলে কাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তারা সামনে আনবে, সেটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু সহযোগী দলগুলিকে নিয়ে লড়তে গেলে এনডিএ-র বৈঠকে এই নিয়ে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।” নীতীশ কেন মোদীকে এখনও অভিনন্দন জানালেন না? শিবানন্দ বলেন, “এটা আমার পক্ষে বলা সম্ভব না।” তবে জেডিইউ যে অপেক্ষা করে দেখার পক্ষপাতী, তা জানিয়ে শিবানন্দ বলেন, “আমরা অপেক্ষা করছি। প্রথম এবং শেষ, সবই আমাদের নজরে আছে।”
নীতীশের সমালোচনার পরিবর্তে বিহার বিজেপি নেতারা অবশ্য ‘রাজনৈতিক সৌজন্য’র উপরেই জোর দিচ্ছেন। সি পি ঠাকুর বলেন, “কেন তিনি এখনও নরেন্দ্র মোদীকে অভিনন্দন জানাননি, তা নীতীশই বলতে পারবেন। তবে এটা সৌজন্যের মধ্যে পড়ে। নীতীশ নিশ্চয় পরে এই নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানাবেন।” |
|
|
|
|
|