নতুন বছরের শুরুতেই শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ির ৩১-ডি জাতীয় সড়কের সংস্কারের কাজ শুরু না হলে মহাসড়ক কর্তৃপক্ষের দফতরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার হুমকি দিল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার দুপুরে কংগ্রেসের ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি ব্লক কংগ্রেস এবং জলপাইগুড়ি যুব কংগ্রেসের তরফে মহাসড়ক কর্তৃপক্ষের দফতরে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। পরে আধিকারিকদের স্মারকলিপি দিয়ে তালা ঝোলানোর বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়। কংগ্রেস নেতারা জানিয়েছেন, রাস্তাটির অবস্থা দিনের পর দিন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। খানাখন্দ, পিচের চাদর উঠে গিয়ে পরিস্থিতি ভয়ানক হয়ে উঠেছে। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে মহাসড়ক কর্তৃপক্ষ রয়েছে। সেখানে দাঁড়িয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের কংগ্রেসকেই দোষারোপ করছেন। তাই এই অবস্থা আর চলতে দেওয়া যাবে না।
ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির ব্লক কংগ্রেস সভাপতি দেবাশিস প্রামাণিক বলেন, “জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ি যাতায়াত করতে বাসিন্দাদের শরীরের হাড় ভেঙে যাওয়ার জোগাড় হয়েছে। আমরা মহাসড়ক কর্তৃপক্ষের আধিকারিকদের রোজ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে বলেছি। তার হলেই ওঁরা টের পাবেন কী চলছে।” জলপাইগুড়ি জেলা যুব কংগ্রেস সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “৭ জানুয়ারি অবধি সময় দিয়েছি। কাজ না হলে দফতরে তালা ঝুলিয়ে দেব। গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী সিপি যোশির সঙ্গেও দেখা করব।”
এ দিন স্মারকলিপি দেওয়ার আগে মহাসড়ক দফতরের বাইরে মঞ্চ তৈরি করে বিক্ষোভ সমাবেশও করে কংগ্রেস। মহাসড়ক কর্তৃপক্ষের প্রজেক্ট ম্যানেজার পঙ্কজ মিশ্র শুধু বলেন, “সমস্ত কিছুই আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি।” দফতর সূত্রের খবর, চলতি মাসেই ওই রাস্তার সংস্কারের জন্য দিল্লির কাছে ৭.৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে পাঠানো হয়েছে। টাকা মিলতেই জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে কাজ শুরু হয়ে যাবে।
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ির মধ্যে ৪৫ কিলোমিটার রাস্তা তিন বছর আগে ৩১-ডি জাতীয় সড়কের তকমা পায়। পূর্ত দফতরের হাত থেকে তা মহাসড়ক কর্তৃপক্ষের হাতে যায়। ঘোষপুকুর থেকে সলসলবাড়ি অবধি চার লেনের রাস্তার জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় ৬২৫ হেক্টর জমির অন্তত ৮০ শতাংশ অধিগ্রহণ না হওয়ায় চার লেনের রাস্তার ‘বিড’ও হয়নি। এর মধ্যেই শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি রাস্তাটি রয়েছে। এতে আলাদা করে সংস্কারের জন্য অনুমোদন নিয়ে টালবাহানা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের ক্ষোভ চরমে পৌঁছালে ফুলবাড়ি মোড় থেকে বাকুয়াবাড়ি অবধি সংস্কারের কাজ হলেও তা ঠিকঠাক হয়নি বলে কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ।
তাঁরা বক্তব্য, সবচেয়ে খারাপ অবস্থা করতোয়া এলাকা থেকে জলপাইগুড়ি অবধি। যে এলাকা সংস্কার হয়েছে তাও মসৃণ নয়। তার পরে সেবক করোনেশন সেতু ক্ষতিগ্রস্থ থাকায় ৬০ মেট্রিক টনের উপর গাড়ি এই রাস্তায় চলাচল করছে। ঠিকঠাক সংস্কার না হলে দুর্ভোগ কমবে না। কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ২২ ডিসেম্বর থেকে ওই জাতীয় সড়কে ছয়টি এলাকায় গণস্বাক্ষর অভিযান শুরু হবে। তার পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করবে কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল। পাশাপাশি, জানুয়ারি মাসে চার লেনের জন্য জমি অধিগ্রহণ দ্রুত করার জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে অভিযানও করা হবে বলে কংগ্রেস নেতারা জানিয়েছেন। |