|
|
|
|
জঙ্গলমহলে স্বশাসন চেয়ে পদযাত্রা, স্মারকলিপি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
জঙ্গলমহলের তিন জেলার স্বশাসনের দাবিতে গণ আন্দোলন শুরু করল ‘ঝাড়খণ্ড আন্দোলন সমন্বয় মঞ্চ’। পিসিসি-সিপিআই (এমএল), ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টি, ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা-সহ ৫টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত ওই মঞ্চের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার লোধাশুলি থেকে ঝাড়গ্রাম পর্যন্ত পদযাত্রার পর মহকুমাশাসক বাসব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে স্বশাসনের দাবি-সহ মোট ১১ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
রাজ্যে পালাবদলের পর গত বছর জুন মাসে সমন্বয় মঞ্চের পক্ষ থেকে মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে স্বশাসনের দাবি জানানো হয়। মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়েছিল, জঙ্গলমহলে স্বশাসিত পর্ষদ গঠন না-করলে প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। ভূমিপুত্রদের নিয়ে নির্বাচিত স্বশাসিত পর্ষদের মাধ্যমে জঙ্গলমহলের উন্নয়ন ও যাবতীয় সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে মনে করেন মঞ্চের নেতৃত্ব। কিন্তু দেড় বছর কেটে গেলেও রাজ্য সরকারের তরফে কোনও সাড়া না-পেয়ে এ বার স্বশাসনের দাবিতে পথে নেমে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঝাড়খণ্ড আন্দোলন সমন্বয় মঞ্চ। |
|
মঞ্চের সদস্যরা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
বৃহস্পতিবার দুপুরে মঞ্চের নেতা সন্তোষ রানা, আদিত্য কিস্কু, অসিত খাটুয়া, মনোরঞ্জন মাহাতো প্রমুখের নেতৃত্বে লোধাশুলি থেকে গণ-মিছিল শুরু হয়। প্রায় ১৬ কিলোমিটার পদযাত্রার পর লাল-সবুজ পতাকায় মোড়া মিছিলটি দুপুর আড়াইটে নাগাদ শহরে পৌঁছয়। মিছিল ঘিরে চূড়ান্ত সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছিল পুলিশ-প্রশাসন। এসডিও অফিসে আসার সব ক’টি রাস্তায় ছিল পুলিশের ব্যারিকেড। এসডিও অফিসের সামনে মজুত ছিল জল-কামান, লাঠিধারী পুলিশ। মহিলা পুলিশও ছিল চোখে পড়ার মতো। এসডিও অফিসের অদূরে সুভাষ চকে মিছিলটিকে আটকে দেওয়ার পর সন্তোষবাবু, অসিতবাবু-সহ মঞ্চের ৯ জন নেতাকে এসডিও অফিসে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। বিকাল তিনটে নাগাদ মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন তাঁরা। মঞ্চের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য দাবিগুলি হল, সমস্ত রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে ও যৌথ বাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে, বন অধিকার আইন অনুযায়ী সমস্ত আবেদনকারীকে ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত পাট্টা দিতে হবে, বনজ সম্পদের ৭৫ শতাংশ ভাগ বন সুরক্ষা কমিটিকে দিতে হবে, আদিবাসী অধ্যুষিত স্কুলে আদিবাসী শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে, জঙ্গলমহলের কলেজ গুলিতে পূর্ণ সময়ের শিক্ষক নিয়োগ করে সাঁওতালি ভাষা বিভাগ চালু করতে হবে, কুর্মি সম্প্রদায়কে (মাহাতো) তফসিলি উপজাতি ভুক্ত করতে হবে, সরকারকে প্রতি অঞ্চলে ন্যায্য মূল্যে ধান কেনার ব্যবস্থা করতে হবে, সেই সঙ্গে ন্যায্য মূল্যে সারও সরবরাহ করতে হবে। মঞ্চের পক্ষে অসিত খাটুয়া বলেন, “জঙ্গলমহলে উন্নয়নের শুধু প্রচারই হচ্ছে, কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। স্বশাসন ছাড়া প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়।” তাঁর অভিযোগ, “জঙ্গলমহলে আগে ছিল মাওবাদীদের সন্ত্রাস। এখন সেই পুরোনো মুখগুলিই শাসক দলের হয়ে সন্ত্রাস করছে। পুলিশ-প্রশাসনও নির্লজ্জ ভাবে শাসক দলের হয়ে কাজ করছে। বিরোধীদের দমনপীড়ন করা হচ্ছে। তাঁদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|