|
|
|
|
মেদিনীপুর সংশোধনাগার |
রাতভর গাছে বন্দির দেহ, ছ’জন কর্মীকে শো-কজ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
নিরাপত্তার নজর এড়িয়ে কী ভাবে এক আসামী জেল চত্বরে আত্মহত্যা করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ঘটনার তদন্তে নেমে এ বার ৬ জন কর্মীকে শো- কজ করলেন জেল কর্তৃপক্ষ। শো- কজের সদুত্তর না- এলে এঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে বলে জেল সূত্রে খবর। বিষয়টি নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে নারাজ জেল সুপার খগেন্দ্রনাথ বীর। তাঁর কথায়, “এ নিয়ে আমি কিছু বলব না।”
মঙ্গলবার মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে এক আসামীর অপমৃত্যু হয়। গলায় মাফলারের ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন অনুপ হাইত (৪৩) নামে এক সাজাপ্রাপ্ত আসামী। ওই দিন দুপুরে যখন আসামীর সংখ্যা মিলিয়ে দেখা হয়, তখনই একজন আসামীর সংখ্যা কম হয়েছিল। এরপরই খোঁজ শুরু হয়। পরে সংশোধনাগার চত্বরের এক গাছে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। সংশোধনাগার চত্বরে একটি সেলের পিছনে দু’টি গোডাউন রয়েছে। গোডাউন দু’টির মাঝখানে একটি কাঁঠাল গাছ রয়েছে। সেই গাছেই তাঁর দেহ ঝুলতে দেখা যায়। অনুপ একটি ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন। আগে তমলুক জেলে ছিলেন। চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি সাজাপ্রাপ্ত ওই আসামী মেদিনীপুরে কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ছিলেন। তাঁর ১০ বছর কারাদন্ডের নির্দেশ হয়েছিল। মানসিক অবসাদেই তিনি গলায় মাফলারের ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক অনুমান।
বন্দির ঝুলন্ত দেহ নামানো নিয়েও সমস্যা দেখা দেয়। কোন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দেহ নামানো হবে, জুডিশিয়াল না এক্সিকিউটিভ, এই টানাপোড়েনের জেরে রাতভর গাছে ঝুলে থাকে মৃতদেহ। শেষমেশ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বুধবার দুপুরে গাছ থেকে দেহ নামানো হয়। মেদিনীপুর জেলের অন্দরে কড়া নিরাপত্তা থাকে। তারমধ্যেই কী ভাবে এই আসামী আত্মহত্যা করলেন, তা নিয়ে ঘটনার পরপরই প্রশ্ন ওঠে। পরিস্থিতি দেখে তদন্ত শুরু করেন জেল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে এসেছিলেন কারা দফতরের আইজি কল্যাণ প্রামানিক, ডিআইডি শোভন দীন। বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখেন। জেল সূত্রে খবর, সবমিলিয়ে ৬ জন কর্মীকে শো- কজ করা হয়েছে। তারমধ্যে ৩ জন ওয়ার্ডার, ১ জন চিফ হেড ওয়ার্ডার, ১ জন হেড ওয়ার্ডার এবং ১ জন টাস্ক টেকার রয়েছেন। এই কর্মীরা ঠিক মতো তাঁদের দায়িত্ব পালন করলে এমন ঘটনা ঘটত না বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন জেল কর্তৃপক্ষ। একসঙ্গে ৬ জন কর্মীকে শো-কজ করার ঘটনায় জেলের অন্দরেও শোরগোল পড়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কারা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “এটা বিভাগীয় ব্যাপার। যাঁদের গাফিলতির জন্য ওই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হয়েছে, তাঁদের শো- কজ করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। এ ক্ষেত্রে সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|