আরও জটিল হল গোঘাট হাইস্কুলের পরিস্থিতি।
স্কুলের টিচার ইনচার্জের বিরুদ্ধে মারধর, উচ্ছ্ঙ্খল আচরণের অভিযোগ তুলে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল পরিচালন সমিকি। এ বার অভিযুক্ত শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে পরিচালন সমিকির সভাপতি-সম্পাদকের অপসারণ চেয়ে বৃহস্পতিবার স্কুল গেটে তালা লাগিয়ে দিল কিছু ছাত্র। গেটের সামনে অনশনেও বসে তারা। দিনভর স্কুলে আটকে থাকেন ২৭ জন শিক্ষক।
সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে ওই ছাত্রেরা। তাদের বক্তব্য, টিচার ইনচার্জ উদয়মনি ভট্টাচার্য সে সবের প্রতিবাদ করাতেই তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা কুৎসা করা হচ্ছে।
এ দিকে, পুরো পরিস্থিতির পিছনে রাজনীতির প্রসঙ্গও এসে পড়েছে। ছাত্রদের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করে পরিচালন কমিটির সম্পাদক অরুণ ঘোষ, সভাপতি সমীরকুমার দে বলেন, “স্কুল পরিচালন কমিটি তৃণমূলের। কিন্তু দলেরই একটি গোষ্ঠীকে হাত করে টিচার ইনটার্জ ছাত্রদের মাঠে নামিয়েছেন। তাঁরই নেতৃত্বে অনশন হচ্ছে।” অন্য দিকে, উদয়মনিবাবুর বক্তব্য, “ছেলেদের অনশনে আমার ইন্ধন জোগানোর প্রশ্নই নেই। মহকুমা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি।”
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু পড়ুয়া এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ স্কুল গেটে তালা মেরে দেয়। গোলমালের আঁচ পেয়ে তার আগেই স্কুল ছেড়েছিল বাকি ছাত্র-ছাত্রীরা। স্টাফরুমে আটকে পড়েন শিক্ষকেরা। বিকেলের দিকে গোঘাট ১ বিডিও দেবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস আসেন স্কুলে। প্রশাসনের তরফে সমস্ত বিষয়টি তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দেওয়া হলে ছাত্রেরা অনশন তুলে নেয়। শিক্ষকেরাও রেহাই পান। বিডিও বলেন, “ছাত্রদের তরফে পরিচালন কমিটির সম্পাদক-সভাপতির বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ আছে। তা লিখিত জানাতে বলেছি।”
কয়েক মাস আগে উদয়মনিবাবু টিচার ইনচার্জ পদে বসার পরেই স্কুলে গোলমাল লেগে আছে। বুধবার পরিচালন কমিটির সভাপতি-সম্পাদককে হেনস্থা, মারধরের অভিযোগ ওঠে কিছু ছাত্রের বিরুদ্ধে। তাতে উদয়মনিবাবুর উসকানি ছিল বলে অভিযোগ কমিটির। এ ব্যাপারে পুলিশ ও শিক্ষা দফতরে লিখিত অভিযোগ জানান তাঁরা। উদয়মনিবাবুর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন অভিভাবকদের একাংশও। গোলমালের পিছনে রাজনৈতিক কারণ আছে বলে মানতে চাননি গোঘাটের তৃণমূল নেতা মনোরঞ্জন পাল। তিনি বলেন, “স্কুলে বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত হবে না। পরিচালন কমিটির সিদ্ধান্তই শেষ কথা।” দলেরই আর এক নেতা শান্তিনাথ রায়ের বক্তব্য, “স্কুল পরিচালন কমিটি আমাদের দলের ঠিকই। কিন্তু কেউ দুর্নীতি করলে সরে যেতেই হবে।”
এ দিন বিক্ষোভে আটকে পড়েন শিক্ষক পৃথ্বীশকুমার দে। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “ছাত্রদের আচরণে আমরা মর্মাহত। প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ নিয়েও আতঙ্কিত।” |