|
|
|
|
নীতির জয় দেখছে কংগ্রেস, দ্বন্দ্বে হার বিজেপির |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
মনমোহন সিংহ সরকারের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ। মূল্যবৃদ্ধি, সরকারের দুর্নীতি, খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির মতো বিষয়কে সামনে রেখে দেশ জুড়ে আন্দোলন। তবু হিমাচল প্রদেশে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারল না বিজেপি। বরং কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিকে সামনে রেখে বিজেপির কাছ থেকে হিমাচল প্রদেশ ছিনিয়ে নিল কংগ্রেস। রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন বীরভদ্র সিংহ।
গুজরাতে বিজেপির জয় ব্র্যান্ড নরেন্দ্র মোদীতে সওয়ার হয়ে। কিন্তু হিমাচলের নির্বাচনে যে ভাবে একার ক্ষমতায় সরকার গড়ার পথে কংগ্রেস, তাতে দেশজুড়ে কংগ্রেস-বিরোধী হাওয়ার জেরে বিজেপি নেতারা চিন্তিত। হিমাচলের কংগ্রেস নেতা তথা বাণিজ্য মন্ত্রী আনন্দ শর্মা বলছেন, “খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি নিয়ে মনমোহন-সরকার যে নীতি নিয়েছে, তা রাজ্য জুড়ে প্রচার হয়েছে। তার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে নির্বাচনে।”
বিজেপি অবশ্য কংগ্রেসের জয়কে কৃতিত্ব দিতে নারাজ। বিজেপি নেতা অরুণ জেটলি বলেন, “আমাদের হারের কারণ মূলত গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও বিদ্রোহী নেতাদের সামাল দিতে না পারা। প্রায় আধ ডজন নির্দল বিধায়ক সেখানে জিতেছেন। যাঁরা বিজেপি ছেড়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে দলের বাইরে গিয়েছেন। প্রার্থী বাছাইও সেখানে ঠিক হয়নি।” জেটলির বক্তব্য অমূলক নয়। বিজেপির প্রায় ১৭ জন বিক্ষুব্ধ এ বারে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। অনেকে জিতেছেন। যাঁরা জেতেননি, তাঁরা বিজেপিরই ভোট কেটেছেন। কিন্তু ভোটের ফল প্রকাশের পরেই জেটলি কেন প্রকাশ্যে দলের প্রার্থী বাছাই ও বিক্ষুব্ধদের নিয়ে মুখ খুললেন? দলীয় সূত্রের মতে, জেটলি আসলে বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ীকেই বার্তা দিতে চাইছেন। এ বারে যে দু’টি রাজ্যে ভোট হয়েছে, তার মধ্যে গুজরাতের কৌশল নির্ধারণে মোদী কাউকে ধারেকাছে ঘেঁষতে দেননি। কিন্তু হিমাচলে নজরদারির দায়িত্ব ছিল গডকড়ীর উপরে।
বিজেপির একাংশের মতে, মুখ্যমন্ত্রী প্রেম কুমার ধুমলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরেও মুখ্যমন্ত্রী বদল না করে বিক্ষুব্ধদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয় দল! ধুমলের বিরুদ্ধে এমনিতেই প্রতিষ্ঠান-বিরোধী হাওয়া ছিল। তাঁর মন্ত্রিসভার কিছু সদস্যের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। ফলে সুবিধা পায় কংগ্রেস। খোদ গডকড়ীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকেও হাতিয়ার করে তারা। ফলে কেন্দ্রীয় স্তরে যখন দেশ জুড়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে হাওয়া তৈরির চেষ্টা করেছে বিজেপি, তখন হিমাচলের পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন।
কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, “হিমাচলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটানোর চেষ্টা করেছেন সনিয়া গাঁধী নিজেই। বীরভদ্র ও আনন্দ শর্মার মধ্যে সম্পর্ক সাপে-নেউলে। কিন্তু খুচরোয় বিদেশি লগ্নি প্রশ্নে আনন্দ শর্মাকে ব্যস্ত রেখে হিমাচলের ধারেকাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। পুরো দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে বীরভদ্রের কাঁধে।” |
|
|
|
|
|