ফেল করা ছাত্রদের পাশ করানোর দাবিতে বুধবার বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। সেটা ছিল চেঁচিয়ে প্রতিবাদ।
বৃহস্পতিবার সেই কলেজই দেখল এক ভিন্ন ধরনের প্রতিবাদ। গাছতলায় পড়াশোনা চালিয়ে প্রতিবাদ।
ক্লাসঘরের সংখ্যা কম। তাই ব্যাঘাত ঘটছিল পড়াশোনায়। কলেজ-কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করেও সমস্যার সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। তারই প্রতিবাদে কলেজ-চত্বরে গাছের তলায়, খোলা আকাশের নীচে নতুন ক্লাসঘর ‘খুললেন’ বরাহনগরের একটি কলেজের পড়ুয়ারা।
শতরঞ্চি পেতে সকলে বসলেন মাটিতেই। সেখানে ক্লাসও নিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ক্লাসঘর তৈরিতে কলেজ-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলে এ ভাবে প্রতিবাদ জানানো হল প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশ মহাবিদ্যালয়ে।
ওই কলেজে গিয়ে দেখা যায়, গাছের নীচে বিকম, বিএসসি, বিএ-র ক্লাস চলছে। প্রতিটি অস্থায়ী ক্লাসের সামনে প্ল্যাকার্ডে ক্লাসের নাম লেখা। গাছতলায় চেয়ার পেতে বসে শিক্ষিক-শিক্ষিকারা। উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারাও অনেক ক্লাসের ‘দায়িত্ব’ সামলালেন। ছাত্রছাত্রীরা জানালেন, ক্লাস চলছে রুটিন মেনেই। |
গাছতলাতেই চলছে ক্লাস। বরাহনগরের প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশ মহাবিদ্যালয়ে।—নিজস্ব চিত্র |
ওই কলেজেই বুধবার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কয়েক ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখেন ফেল করা কিছু পরীক্ষার্থী। পরিস্থিতি সামলাতে যেতে হয় পুলিশকেও। ক্লাসঘর তৈরির দাবি নিয়ে এ দিন অবশ্য বিক্ষোভের পথে যাননি অন্য পড়ুয়ারা। তাঁদের কথায়, “চেচাঁমেচি, গোলমাল করে সব সমস্যার সমাধান হয় না। তাই এই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের সিদ্ধান্ত।”
কলেজ সূত্রের খবর, বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও কলা শাখার তিন বছরের পাঠ্যক্রম মিলিয়ে পড়ুয়া প্রায় তিন হাজার। অধ্যক্ষ স্বপনকুমার কর বলেন, “ঘরের সমস্যা আছে। তবে পড়ুয়ারা যত নতুন ক্লাসঘর চাইছে, তত ঘর দরকার নেই। কর্তৃপক্ষকে সব জানিয়েছি।”
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “কলেজ-কর্তৃপক্ষের উচিত ঘর তৈরির জন্য অনুদান চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করা। আমার কাছে প্রস্তাব এলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেব।”
ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, কলেজে দরকার ৪২টি ঘর, আছে মাত্র ১৬টি। ফলে সব সময় ঠিক ভাবে তিনটি বর্ষের তিনটি শাখার ক্লাস হয় না। কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক দেবজিৎ পাল বলেন, “কলেজ-কর্তৃপক্ষকে সমস্যার কথা কয়েক বার জানানো হয়েছে। সমস্যা মেটেনি। তাই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ।” |