শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের ওয়ার্ডে শৌচাগারে পড়ে রোগীমৃত্যুর অভিযোগে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী বিষয়টি জানতে পেরে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ফোন করে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্যের স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য অভিযোগ পেয়ে সোমবারই হাসপাতালে গিয়ে খোঁজ খবর নেন। সাত দিনের মধ্যে তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনিও। সেই মতো তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক শীর্ষেন্দু পালের নেতৃত্বে কমিটিতে আছেন নার্সিং সুপারিনটেন্ডেন্ট ডোলমা ভুটিয়া, সহকারি সুপার সাগর সিট।
ঘটনার পর এক দিন পেরিয়ে গেলেও তদন্তের কাজ সে ভাবে শুরু হয়নি বলে অভিযোগ। রাতে দায়িত্বে থাকা নার্সের সঙ্গে বা রোগী পরিবারের সঙ্গে তদন্ত কমিটির লোকেরা এখনও কথা বলেননি। তদন্তের জন্য রোগীর বিস্তারিত তথ্য থাকে যে নথিপত্রে সে সব তদন্ত কমিটি এখনও সংগ্রহ করেনি। কারা ওই দিন ওয়ার্ডে দায়িত্বে ছিলেন তা নিয়ে খোঁজ নিয়েছেন মাত্র। হাসপাতালের একটি সূত্রেই জানা যায়, ওই দিন এক জন মাত্র নার্স ওয়ার্ডের দায়িত্বে ছিলেন। কোনও স্বাস্থ্য কর্মী বা সাফাই কর্মী ছিলেন না। ওয়ার্ড মাস্টারদের তরফে জানানো হয়েছিল তাঁরা বিশেষ সহায়কের ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা হাসপাতালের কর্মী নন। ‘আয়া’ হিসাবে কাজ করেন। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সঞ্জীব মজুমদার বলেন, “৩ সদস্যের কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই কমিটি দ্রুত রিপোর্ট দেবে।”
উল্লেখ্য, সোমবার সকালে হাসপাতালের পুরুষ বিভাগে শৌচাগারে পড়ে যান বিপুল সিংহ নামে এক রোগী। শ্বাসকষ্ট এবং কিডনির অসুখে গুরুতর অসুস্থ ওই রোগী শৌচাগারে গেলে কর্তব্যরত নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীদের কেউ কেন সাহায্য করেননি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওই রোগী শিলিগুড়ির মেয়রের বাড়ির দারোয়ান ছিলেন। ঘটনায় ক্ষুব্ধ মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত-ও। হাসপাতালের নিয়ম মেনে নার্সের সঙ্গে ওয়ার্ডে অন্তত ১ জন স্বাস্থ্যকর্মী এবং সাফাই থাকেন। ঘটনার সময় নার্স ছাড়া আর কারা ‘ডিউটি’তে ছিলেন তা দেখা দরকার বলে মনে করেন হাসপাতালের কর্মী সংগঠন স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ফেডারেশন। সংগঠনের সম্পাদক কৃষ্ণ ঘোষ জানান, এমন হলে সরকারি হাসপাতালের উপর বাসিন্দারা আস্থা হারাবেন। |