ঘোষণা মতো সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনা এখনও শুরু না হওয়ায় আলিপুরদুয়ারের চাষিরা বিপাকে। নিরুপায় হয়ে তাঁরা বাজারে ফড়েদের কাছে কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। অভিযোগ উঠেছে যে, ফড়েদের কাছে ধান বিক্রি করে যে দাম মিলছে তা দিয়ে চাষের খরচ উঠছে না। ফলে চাষি মহলে ক্ষোভ বাড়ছে। সমস্যার কথা স্বীকার করে মহকুমাশাসক অমলকান্তি রায় বলেন, “সহায়ক মূল্যে চাষিদের কাছ থেকে এখনও ধান কেনা শুরু হয়নি। খাদ্য সরবরাহ দফতরের কর্তাদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হয়ে যাবে।” প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি, জলপাইগুড়ি সদর সহ নানা এলাকায় সহায়ক মূল্যে ধান কেনার কাজ চললেও আলিপুরদুয়ার মহকুমার ৬টি ব্লকে এখনও তা শুরু হয়নি। চাষিদের প্রশ্ন, কবে মহকুমার হাটগুলিতে খাদ্য সরবরাহ দফতরের কর্তারা গিয়ে শিবির করবেন? মহকুমা খাদ্য সরবরাহ দফতরের তরফে মুখ্য পরির্দশক বিবেক বসু বলেন “আগামী ২৪ ডিসেম্বর আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকে ধান কেনা শুরু হবে। কুমারগ্রামের ৫টি, কালচিনির ১টি, মাদারিহাটের ২টি, ফালাকাটার ১৮টি হাটেও ধান কেনার জন্য প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়াও রয়েছে আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের ৯টি হাট।” খাদ্য সরবরাহ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২৫০ টাকা কুইন্টাল দামে প্রতি চাষির থেকে ১০ কুইন্টাল ধান কেনা হবে। কিন্তু সরকারি কর্তারা কবে হাটে আসবেন, কবে তাঁরা শিবির করে ধান কেনার কাজ করবেন সেই ভরসায় থাকতে পারছেন না চাষিরা। তাঁরা হাটে ফড়েদের কাছে ৮৭৫ টাকা কুইন্টাল দামে ধান বিক্রি শুরু করে দিয়েছেন। তাতে লোকসান হলেও নিরুপায় হয়ে তাঁরা ধান বিক্রি করছেন। যেমন আলিপুরদুয়ার জংশন এলাকার দমনপুর হাটে ধান নিয়ে আসা ফোস্কারডাঙার চাষি নিত্য রায়, নারায়ণ ওরাওঁরা জানান, কোথাও সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হয়নি। কিন্তু টাকার খুব দরকার। তাই বাধ্য হয়েই তাঁরা হাটে ধান নিয়ে এসেছেন। ফড়েদের কাছে বিক্রি করবেন। বনচুকাকামারি গ্রামের চাষি অক্ষয় বর্মন বলেন, “কবে ধান কেনা শুরু হবে তার ঠিক নেই। কত দিন বসে থাকব। টাকা দরকার। সংসার চালাতে হবে। তাই হাটে ধান বিক্রি করছি।” |