|
|
|
|
পার্থর সময়সীমা ৩১ মার্চ |
পেট্রোকেম থেকে সরছে রাজ্য |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
লাগাতার আইনি লড়াই ও অর্থাভাবে নাকাল হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল্স-এর মালিকানা চলতি অর্থবর্ষের মধ্যে ছেড়ে দেবে রাজ্য। শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মঙ্গলবার মহাকরণে স্পষ্ট জানিয়েছেন, আগামী ৩১ মার্চের মধ্যেই রাজ্য সরকার এই দায়িত্ব ছাড়তে চায়। গোটা প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পরামর্শদাতা সংস্থাও নিয়োগ করা হয়েছে বলে তাঁর দাবি।
পেট্রোকেমের অন্যতম অংশীদার চ্যাটার্জি গোষ্ঠী অবশ্য এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানাতে চায়নি। গোষ্ঠীর প্রেসিডেন্ট অনিরুদ্ধ লাহিড়ির কথায়, “সরকারের শেয়ার। সরকার তা নিয়ে কী করবে, সে ব্যাপারে আমরা কোনও মন্তব্য করব না। কতগুলি বিষয় এখনও বিচারাধীন।” অনিরুদ্ধবাবুর অবশ্য দাবি, পরিচালন পর্ষদের অনুমতিসাপেক্ষে সংস্থা চালানোর প্রয়োজনীয় টাকা জোগাড় করার প্রস্তাব তাঁরা আগেই দিয়েছিলেন।
একদা পশ্চিমবঙ্গের ‘শো পিস’ হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল্সের আর্থিক হাল পুজোর সময় থেকে আরও শোচনীয় হয়েছে। রাজ্য সরকার ও চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর আইনি বিবাদের জেরে আর্থিক সংস্থাগুলো ঋণ দিতে চায়নি, ফলে কাঁচামাল (ন্যাপথা) কেনার টাকার সংস্থান করাও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ৪০% উৎপাদনক্ষমতায় প্লান্ট চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। উদ্দেশ্য, কারখানা পুরোপুরি বন্ধ না-করে কোনওক্রমে টিকিয়ে রাখা।
আর তারই জেরে সংস্থার ঘাড়ে লোকসানের বোঝা আরও চেপে বসেছে বলে শিল্পমহলের একাংশের দাবি। কারণ, উৎপাদন মার খাওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে গিয়েছে। পুরনো ঋণের দায় শোধের পরে সংস্থা যেখানে মাসে ৫০-৬০ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছিল, তা এক ধাক্কায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০-৮০ কোটি। গত তিন মাসে মোট ক্ষতি ২১০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১৫০ কোটি। সংস্থা-সূত্রের তথ্য: পেট্রোকেমের নিট সম্পদের পরিমাণ ১৭৬০ কোটি টাকার মতো। বিআইএফআরের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও সংস্থার দায় বা ঋণের অঙ্ক নিট সম্পদের সমান হয়ে গেলে তা ‘রুগ্ণ’ বলে গণ্য হয়। সেই হিসেবে রুগ্ণ শিল্পের তকমা থেকে পেট্রোকেম মোটামুটি ছ’শো কোটি দূরে।
তবে বিআইএফআরের বিধি মোতাবেক, লোকসান নিট সম্পদের ৫০% ছাড়ালে সংস্থাটিকে ‘প্রায় রুগ্ণ’ ধরা যাবে। বস্তুত পার্থবাবুও এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন, হলদিয়া পেট্রোকেম প্রায় রুগ্ণ শিল্পেই পরিণত হয়েছে। মন্ত্রীর বক্তব্য: ওখানে কিছু ভাল ইঞ্জিনিয়ার ও যন্ত্রপাতি শুধু পড়ে রয়েছে, উৎপাদন নেই বললেই চলে।
এবং যত দিন কারখানা খোলা থাকবে, লোকসান তত বাড়বে বলে মন্তব্য করেন শিল্পমন্ত্রী। |
|
|
|
|
|