|
|
|
|
এবিজির ছাঁটাই শ্রমিকদের নিতে চায় অন্য সংস্থা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
পণ্য খালাসকারী সংস্থা এবিজি ছাঁটাই করায় অথৈ জলে পড়ে যাওয়া শ্রমিকদের উদ্ধারের একটা উপায় হতে চলেছে। ওই ছাঁটাই শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হচ্ছে হলদিয়া বন্দরের পণ্য খালাসকারী অন্যান্য সংস্থা। বন্দরে পণ্য খালাসের সমস্যা মেটাতে গড়া কমিটির কাছে এই ব্যাপারে সম্মতির কথা জানিয়েছে তারা। হলদিয়া বন্দরের বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে তারা কথা বলবে বলে জানিয়েছে সংস্থাগুলি। হলদিয়া বন্দরের শিপিং ম্যানেজারের নেতৃত্বে গড়া তিন সদস্যের কমিটি গত ২৯ নভেম্বর এই মর্মে প্রস্তাব পেশ করেছে বন্দরের অছি পরিষদের বৈঠকে।
কমিটির প্রস্তাব পাওয়ার পরে বন্দর-কর্তৃপক্ষ হলদিয়ার সব বার্থে পণ্য খালাসকারীদের কাছ থেকে টন-প্রতি ২৫ টাকা রয়্যালটি আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাহাজ মন্ত্রকের অনুমোদনসাপেক্ষে আপাতত এই ব্যবস্থা চালু হলেও পরবর্তী ক্ষেত্রে বন্দর প্রতিটি বার্থেই নিলাম করে পণ্য খালাসের ব্যবস্থা চালু করতে চায় বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে অছি পরিষদের বৈঠকে। তবে এবিজি ২ এবং ৮ নম্বর বার্থে ফিরে এলে অন্যান্য পণ্য খালাসকারী সংস্থার কাছ থেকে টন-পিছু ২৫ টাকার বদলে ১৫ টাকা রয়্যালটি আদায় করা হবে।
এবিজি চলে যাওয়ায় বন্দরের রাজস্ব-ক্ষতি সামাল দেওয়া যে মুশকিল হবে, অছি পরিষদে পেশ করা প্রস্তাবে সেটা স্বীকার করে নিয়েছে তিন সদস্যের কমিটি। তাদের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, হলদিয়া নদীবন্দর হওয়ায় নাব্যতার সমস্যা রয়েছে। বিশ্ব জুড়ে মন্দার কারণে পণ্য আসাও কমেছে। এবিজি-র বার্থ থেকে রোজগার হলেও অন্য বার্থ থেকে তা হয় না। ফলে এবিজি চলে যাওয়ার পরে রাজস্ব আদায়ের বিকল্প খুঁজতেই অন্যান্য বার্থ থেকে রয়্যালটি আদায় করা জরুরি। অছিদের দেওয়া নোটে বলা হয়েছে, ২০০৭-’০৮ সাল থেকেই হলদিয়া বন্দরে পণ্য কমছে। পেনশন খাতেই বছরে ৩২০০ কোটি টাকার দায় রয়েছে বন্দরের ঘাড়ে। এই অবস্থায় বাড়তি রাজস্ব আদায়ের ব্যবস্থা করা ছাড়া অন্য উপায় নেই বলেই মনে করছে অছি পরিষদ।
আদালতে অবশ্য এবিজি বিতাড়ন পর্বের জের আপাতত মিটছে না। কোনও পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া না-মেনেই এবিজি সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে বলে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগ করেন ওই সংস্থার আইনজীবী সমরাদিত্য পাল। তিনি জানান, কোনও সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করতে গেলে কিছু পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া মেনে চলতে হয়। তা না-করে কোনও সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করা যায় না। কলকাতা বন্দর-কর্তৃপক্ষের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দরপত্র চেয়েই এবিজি-কে কাজের বরাত দেওয়া হয়েছিল। এবিজি চুক্তি অমান্য করে হলদিয়া বন্দর থেকে চলে গিয়েছে বলেই তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
এবিজি-কে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে বলে বন্দর-কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল। তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই এবিজি মামলা করে। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের এজলাসে তার শুনানি চলছে। সমরাদিত্যবাবু বিচারপতিকে জানান, এবিজি বন্দরে কাজ করেনি, এই অভিযোগ তোলাই যায় না। কারণ, এবিজি নিজেরাই তাদের আরও কাজ দেওয়া হোক বলে হাইকোর্টে মামলা করেছিল। হলদিয়া বন্দরে সামগ্রিক কাজের পরিবেশ এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার পরেও তারা যাতে সেখানে কাজ চালিয়ে যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা করার জন্য হাইকোর্টে আবেদনও জানায় এবিজি। জয়ন্তবাবুর অভিযোগ, বন্দরের তরফে বারবার এবিজি-কে কাজ শুরু করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তারা চলে যায়। |
|
|
|
|
|