|
|
|
|
এখনও আগুন-আতঙ্কে ভুগছে গোপীনাথপুর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
আগুন-আতঙ্ক কাটেনি গোপীনাথপুরে। এখনও খড়ের ছাউনিতে আগুন জ্বলছে। উদ্বিগ্ন গ্রামবাসীরা মাঠের ধান ঝেড়ে ঘরে তোলার ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। সোমবারও কয়েক দফায় একাধিক বাড়িতে আগুন জ্বলেছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার দুপুরে গ্রামে এসেছিলেন খড়্গপুর ২-এর বিডিও সোমা দাস। তিনি বলেন, “গ্রামবাসীদের সরকারি প্রকল্পে বাড়ি করে দেওয়া যায় কি না, তা দেখা হচ্ছে।”
খড়্গপুর ২ ব্লকের ছোট্ট গ্রাম এই গোপীনাথপুর। আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় বেশ কিছু দিন ধরেই এমন ঘটনা ঘটছে। প্রথমে কুসংস্কারের বশে আগুনের উৎস সম্পর্কে নানা বিশ্বাস আঁকড়ে ছিলেন গ্রামবাসীরা। পরে প্রশাসন আইআইটিকে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেয়। সেই মতো গ্রামে এসে নমুনা সংগ্রহ করেন খড়্গপুর আইআইটির রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক সৌমেন হাজরা। তিনি প্রাথমিক ভাবে জানান, খড়ের ছাউনির ভেতরে জল জমে এক রকম দাহ্য গ্যাস জন্মায়। তাপ বাড়লেই তা জ্বলে ওঠে। প্রশাসনকেও এই বিষয়টি জানানো হয়েছে। আপাতত, গ্রামবাসীদের খড়ের ছাউনি সরিয়ে বাড়িতে ত্রিপলের ছাউনি দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সে জন্য তাঁদের দুটি করে ত্রিপলও দিয়েছে ব্লক প্রশাসন। |
|
পরিদর্শনে প্রশাসনিক দল। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
গ্রামবাসীদের আতঙ্ক অবশ্য কাটছে না। মঙ্গলবার গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, যে সব বাড়ির ছাউনিতে আচমকা আগুন জ্বলথে, সেই সব বাড়ির সামনে ১-২টি করে জল ভর্তি হাঁড়ি রাখা রয়েছে। কেন এমন ব্যবস্থা? রবি বলছিলেন, “বালতিতে করে জল এনে আগুন নেভাতে গেলে অনেকটা সময় চলে যায়। তাই তাড়াতাড়ি আগুন নেভানোর জন্য এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।” স্থানীয় বাসিন্দা রবি হাঁসদা বলেন, “আমরা যে কী অবস্থায় আছি, বলে বোঝাতে পারব না। রাতের বেলা ফাঁকা জায়গায় ত্রিপল খাটিয়ে তার নীচে ঘুমোই। বাড়ির খড়ের ছাউনিতে তো যখন-তখন আগুন জ্বলে যাচ্ছে। কেউই বাড়িতে ঘুমোচ্ছি না।” তাঁর কথায়, “মাঠের ধান মাঠেই পড়ে রয়েছে। এখনও ঝাড়া হয়নি। ধান কেটে এখানে আনলে যদি আগুন ধরে যায়!” আগেও গ্রামে এসেছিলেন বিডিও। এসেছিলেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, জেলা পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরীও। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলার পর গোপীনাথপুরে দু’জন পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। বিষ্টু হাঁসদা, রাম মুর্মুরা বলেন, “সোমবার দুপুরে গ্রামে পুলিশ ছিল। পুলিশ কর্মীদের সামনেই ফের খড়ের ছাউনিতে আগুন জ্বলে যায়।”
আপাতত পরিস্থিতি সামলাতে ত্রিপলের ছাউনি করার উপর জোর দিচ্ছে প্রশাসন। প্রয়োজনে আরও ত্রিপলের ব্যবস্থা করা হবে বলে এ দিন বিডিও জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে আশপাশের পুকুরগুলো সংস্কারের ব্যবস্থা হচ্ছে। গ্রামে ঢোকার রাস্তাটি বেশ সংকীর্ণ। সেটিও চওড়া করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। |
|
|
|
|
|