|
|
|
|
গরিবদের বাড়ি তৈরি থমকে খড়্গপুরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
টাকা পড়ে রয়েছে। অথচ, কাজ সে ভাবে এগোচ্ছে না। খড়্গপুরে ‘ইন্দিরা গাঁধী হাউসিং স্লাম ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্ট’-এর (আইএইচএসডিপি) এমনই হাল। শহরবাসী গরিব মানুষের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পে রেলশহরে ৮১০টি বাড়ি তৈরি হওয়ার কথা। এখনও পর্যন্ত হয়েছে ৪১০টি। ২৬১টির কাজ অর্ধেক হয়ে পড়ে রয়েছে। বাকি ১৩৯টির কাজ শুরুই হয়নি!
কেন এই পরিস্থিতি? পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএম কাউন্সিলর অনিতবরণ মণ্ডল এ জন্য সরকারি তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডকে দুষছেন। তাঁর কথায়, “পুর-কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই প্রকল্পের এই হাল। এ ক্ষেত্রে দেখভালের অভাব রয়েছে। প্রকল্পের উপর যথাযথ নজর রাখা হলে আগেই বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হত।” অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ পুরসভার ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধান তুষার চৌধুরী। তাঁর কথায়, “প্রকল্পটি যখন চালু হয়েছিল, তখন আমরা ক্ষমতায় আসিনি। কংগ্রেসের বোর্ড ছিল। দেখভালের অভাব সেই সময়ই ছিল।” তুষারবাবুর বক্তব্য, “৫ বছর আগে বাড়ি তৈরির সরঞ্জামের দাম যা ছিল, এখন তা নেই। বেড়েছে। ফলে, ঠিকাদারেরা কাজ করতে রাজি হচ্ছিলেন না। তবে ১৫৩টি বাড়ি জন্য নতুন করে আরও ১৬ হাজার টাকা করে বরাদ্দ হয়েছে। যে ১৩৯টি বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়নি, সেগুলির কাজ দ্রুত শুরু হবে। পাশাপাশি, যে ২৬১টি বাড়ি তৈরির কাজ এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি, তাও যত দ্রুত সম্ভব শেষ করার চেষ্টা চলছে।” আপাতত, ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধানের এই আশ্বাসই ভরসা প্রকল্পের উপভোক্তাদের। যাঁদের নাম প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে। তবে এখনও বাড়ি পাননি।
শহরবাসী গরিব মানুষদের পাকা বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার লক্ষ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার আইএইচএসডিপি প্রকল্পটি চালু করেছে। খড়্গপুরে ২০০৮ সালে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। রেলশহরের জন্য সব মিলিয়ে ৮১০টি বাড়ি তৈরির টাকা বরাদ্দ হয়। প্রতিটি বাড়ি তৈরির জন্য খরচ ধরা হয়েছিল ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। এর মধ্যে উপভোক্তা দেবেন ১৬ হাজার টাকা। বাকি ১ লক্ষ ৪ হাজার টাকা দেবে সরকার। মোট ২৭০ বর্গফুটের বাড়ি হবে। তাতে থাকবে দু’টি ঘর, শৌচাগার ও রান্নাঘর। প্রথমে উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি করা হয়। সেই মতো বাড়ি তৈরির বরাত দেওয়া হয়। তবে, গোড়া থেকেই প্রকল্পের কাজে পুর-কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারি ছিল না বলে অভিযোগ। কয়েক মাস ধরে প্রকল্পের কাজ থমকে রয়েছে। মজুরি ও বাড়ি তৈরির সরঞ্জামের দাম বেড়ে যাওয়ায় কাজ করতে রাজি হচ্ছিলেন না ঠিকাদারেরা। তাহলে উপায়? ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধান বলেন, “সমস্যা সমাধানে আমরা পদক্ষেপ করেছি। ১৫৩টি বাড়ির জন্য আরও ১৬ হাজার টাকা করে বরাদ্দ হয়েছে। এর ৫০ শতাংশ টাকা চলেও এসেছে। ফলে পড়ে থাকা কাজ দ্রুত শুরু হবে।” তাঁর কথায়, “আইএইচএসডিপি প্রকল্প নিয়ে বোর্ড মিটিংয়েও আলোচনা কার হয়েছে। ঠিক কী কারণে প্রকল্পের কাজ এগোনো যাচ্ছিল না, তা কাউন্সিলরদের জানানো হয়েছে। এরপর আর সমস্যা হবে না।”
কত দিনে বাকি ৪০০টি বাড়ির কাজ পুরোপুরি শেষ হয়, সেটাই এখন দেখার। |
|
|
|
|
|