হাতি তাড়াতে স্থানীয় চেষ্টা বিশ-বাঁও জলে
সুতো ছিঁড়ে হাতির পাল গ্রামে ঢুকলেই সাইরেন বাজবে, এমন ব্যবস্থা পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করেছিল বন দফতর। তাতে প্রথম দিকে কাজও হচ্ছিল। হাতির পাল সুতো ছিঁড়ে ঢুকতেই গ্রামের ঘরে ঘরে বেজে উঠছিল ঘণ্টা। একসঙ্গে একাধিক ঘণ্টার আওয়াজে হাতিরা যেমন ঘাবড়ে যাচ্ছিল, তেমন গ্রামবাসীরা জোট বেঁধে রাত-বিরেতে লাঠিসোটা, মশাল নিয়ে বেরোতে পারছিলেন। সব ঠিকই চলছিল।
কিন্তু, ফি বার হাতির হানার পরে নতুন করে নাইলনের সুতো লাগানোর খরচ দিতে জেরবার গ্রামবাসীরা। প্রতিবারে প্রায় ১ হাজার টাকার সুতো দরকার। বন দফতরও সে খরচ দেবে না। যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সহায়তা করছিল, তারাও খরচ দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত ওই সাইরেন বাজানোর পরিকল্পনা শিকেয় উঠেছে। গ্রামবাসীরা জানান, হাতির পাল প্রথম কদিন ঘণ্টা বাজলে পালিয়েছে। তার পরে ঘণ্টা বাজলেও হাতির পাল গ্রামে ঢুকে আগের মতোই দাপিয়েছে। তাই প্রতি বার হাতির হানার পরে সুতোর খরচ জোগানো অসম্ভব বলে গ্রামবাসীরা জানিয়ে দেন। জলপাইগুড়ির ডিএফও বিদ্যুৎ সরকার বলেন, “সূতো বারবার কেনা সমস্যা। বন সুরক্ষা কমিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে সমাধানের উপায় খুঁজে বার করা জরুরি।”
ডায়না নদীর পাড়ে জঙ্গল লাগোয়া দুই গ্রাম আপার কলাবাড়ি ও প্রয়াগপুর। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০০ টি পরিবারের বাস। বছরে ধান ও ভুট্টা চাষ ওই দুই গ্রামের প্রধান জীবিকা। তবে ধান বা ভুট্টা ফলানোর সময় গরুমারা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পড়া হাতির পাল ডায়না নদী পেরিয়ে দুই গ্রামে হানা দিয়ে ফসল খেয়ে,ঘর বাড়ি ভাঙচুর করে। গ্রামবাসীদের মৃত্যুর ঘটনাও কম নেই। তাই বন দফতর ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে মাস সাতেক আগে গ্রামের সীমানায় আট কিমি এলাকা জুড়ে মাছ ধরার জন্য ব্যবহৃত শক্তপোক্ত সুতো দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। গাছ ও বাঁশের সঙ্গে প্যাঁচানো সূতোর অপর প্রান্ত নিয়ে যাওয়া হয় বাসিন্দাদের উঠোনে। ৫০টি পৃথক বাড়ির উঠোনে বসানো হয় ব্যাটারি চালিত সাইরেন। দু কেজি-র বেশি ওজন সুতোয় পড়লেই সাইরেন বাজবে। বাসিন্দারা জেগে সার্চলাইটের আলো হাতির চোখে ফেলে পটকা ফাটিয়ে তাড়াতে পারবেন।
প্রথম মাসে হাতির দল গ্রাম ঘিরে রাখা সুতো দেখে ভয় পেয়েছিল। দ্বিতীয় মাসে তারা যখন দেখল সুতো ক্ষতিকারক নয় তখন তা ছিঁড়তে শুরু করল। বেশ কয়েক বার সুতো পাল্টানো হলেও খরচের কারণে এখন তাতে উৎসাহী নন বাসিন্দারা। বছর তিনেক আগে ওয়াইল্ড লাইফ অব ইন্ডিয়ার সহযোগিতায় ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দে ওই কাজ করে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। ওই সংস্থার কর্ডিনেটর নিধি সিংহ বলেন, “এক কিমি এলাকা ঘিরতে ৯০০ টাকার সুতো প্রয়োজন। সে টাকা গ্রামবাসীরা প্রথম দিকে দিলেও পরে দিতে চাননি। আমরা কী করব!” আপার কলাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চি ছেত্রী জানান, তাঁরা টং-ঘরে রাতপাহারা চালু করেছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.