বাঁশ-ফাঁদেই জব্দ ইঁদুর স্বস্তি নদিয়ার গ্রামে
ইঁদুরের উপদ্রবে মাথায় হাত পড়েছিল কৃষকদের। প্রতি দিনই ধান ‘চুরি’ করে চাষিদের কপালে ভাঁজ ফেলে দেওয়া সেই ইঁদুর কুলকে জব্দ করতে এ বাক তাই এগিয়ে এসেছেন কৃষক সমাজই।
ত্রিপুরার খোয়াই জেলার গনকি এলাকার কৃষকেরা এ ব্যাপারে বিশেষ পারদর্শী জানতে পারা গিয়েছিল। ইঁদুর-সমস্যা ওই এলাকার দেবাশিস রায় তৈরি করেছেন এক বিশেষ ধরনের ফাঁদ। বাঁশের তৈরি ওই ফাঁদই এখন ইঁদুর রুখতে হাতিয়ার হয়ে উঠেছে ত্রিপুরার। এ বার সেই ফাঁদ এল নদিয়ায়। শুরু হয়েছে তার ব্যবহারও। মিলেছে সুফল।
বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিজ্ঞানী এবং শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট ইন প্লান্ট প্রটেকশন’ ওই বিশেষ ফাঁদ তৈরির জন্য পুরস্কৃত করতেছে দেবাশিসবাবুকে। সম্প্রতি কল্যাণী কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ‘খাদ্য সুরক্ষার আবহাওয়া পরিবর্তন এবং উদ্ভিদ স্বাস্থ্য’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক আলোচনা চক্রের আয়োজন হয়েছিল। দেশ-বিদেশের প্রায় দুশো জন কৃষি বিজ্ঞানীর উপস্থিতিতে ত্রিপুরার ওই কৃষক দেবাশিসবাবুকে ‘শস্য সুরক্ষা’ সম্মান দেওয়া হয়। রোগপোকা দমন, জৈব সারের ব্যবস্থা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনাও হয় ওই আলোচনা চক্রে। সংগঠনের সম্পাদক কৃষি বিজ্ঞানী শান্তনু ঝা বলেন, “দেবাশিসবাবু বাঁশ দিয়ে ইঁদুর ধরার যে ফাঁদ তৈরি করেছেন তাতে গ্রামের কৃষকরা খুবই উপকৃত হয়েছেন। ওই ফাঁদ তৈরিতে খরচও খুব সামান্য।” সহজলভ্য বাঁশ দিয়ে খুব স্বল্প পরিশ্রমেই ওই ফাঁদ তৈরি করা যায়।
এ ভাবেই বাঁশের ফাঁদে ধরা হয় ইঁদুর।—নিজস্ব চিত্র।
এ ধরনের সম্মান পেয়ে আপ্লুত বছর চল্লিশের দেবাশিসবাবু। তিনি বলেন, “আমার আট বিঘা জমি। তাতে ধান ও সব্জি সবই হয়। কিন্তু এক সময় চাষ করা শিকেয় উঠেছিস। যাই চাষ করিনা কেন ইঁদুরে নিয়ে যেত। তার সিংহ ভাগ। বাঁশের চটা দিয়ে তাই পরীক্ষামূলকভাবে ওই ফাঁদ তৈরি করি।
পশ্চিম ত্রিপুরার কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের কার্য সঞ্চালক লক্ষ্মণচন্দ্র পাঠেল বলেন, “ধান চাষের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে খোয়াই এলাকায় গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে বাঁশের তৈরি ইঁদুর ধরার ফাঁদ দেখি। জানতে পারি, দেবাশিসবাবুর কথা। আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা ইঁদুর ধরার জন্য এই ফাঁদ ব্যবহার করছেন। সকলেই স্বীকার করেছেন, তাঁরা এতে খুবই উপকৃত হয়েছেন।” বাঁশ, সুতো, তার, স্প্রিং দিয়ে তৈরি ওই ফাঁদ। ফুট তিনেক লম্বা বাঁশের মাঝের গিটটা ঠিক রেখে দু’দিকের গিঁট দু’টোকে কেটে ফেলতে হয়। ভেতরে ধান বা অন্য খাবার দিতে হয়। তার সামনে সুতো দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়। সুতোটাকে স্প্রিংয়ের সাহায্যে বেঁধে রাখা হয়। খাবারের জন্য সুতো কেটে ভেতরে প্রবেশ করতে গেলেই ফাঁদে পড়বে ইঁদুর। চাষের জমিতে এগুলি ফেলে রাখা হয়। তাতেই কাজ হয়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.