দুশো বছর পূর্তিতে এ বারের কোচবিহার রাসমেলা কেনাকাটা ও বিনোদনে ছিল জমজমাট। জেলার ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির হিসেবে প্রায় ৫০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে মেলায়। গত বছরের তুলনায় ১৫ কোটি টাকা বেশি। ওই বছর ব্যবসা হয়েছিল প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ীদের দুটি সংগঠন ব্যবসায়ী সমিতি এবং ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের প্রাথমিক হিসাবে ব্যবসা বৃদ্ধির ওই পরিসংখ্যান উঠে এসেছে। এ বার রাসমেলা শুরু হয়েছে ২৭ নভেম্বর। শেষ হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর। ব্যবসায়ী সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, টানা ২০ দিন ধরে চলা মেলায় ভাল ব্যবসা করেছেন দু’হাজারের বেশি স্টল মালিক, দুটি সার্কাস, নাগরদোলা, মৃত্যুকূপ, খাবারের দোকানদার সহ রকমারি পণ্যের বিক্রেতারা। সমীক্ষা করে ওই ব্যবসার হিসেব তৈরি করেছেন ব্যবসায়ী সংগঠনের কর্তারা। কোচবিহার ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টিজ সম্পাদক রাজেন বৈদ্য বলেন, “গত বছর রাসমেলায় প্রায় ৩৫ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছিল। এ বার ওই অঙ্ক বেড়ে ৫০ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। এটা রাস মেলার ইতিহাসে রেকর্ড বলা যায়। প্রথম দিকে মেলা জমলে ব্যবসা আরও বেশি হত।” কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বিমল সাহা বলেন, “আমাদের হিসাবেও এ বার মেলায় প্রায় ৫০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে বলে তথ্য উঠে এসেছে। গত বারের তুলনায় অনেকটাই বেশি।” |
ভাঙা মেলায় কেনাকাটা। —নিজস্ব চিত্র। |
ব্যবসায়ী সংগঠনের কর্তারা জানান, রাসমেলায় প্রতিটি স্টলে গড়ে দৈনিক ১০ হাজার টাকার ব্যবসা হয়েছে। সেই হিসাবে দৈনিক ব্যবসার পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ২ কোটি টাকা। ২০ দিন ধরে চলা মেলায় সেটা হয়েছে ৪০ কোটি টাকা। এছাড়াও দুটি সার্কাস, নাগরদোলনা, ড্রাগন ট্রেন, মিউজিক্যাল ড্যান্স-সহ বিনোদনের বিভিন্ন দিক মেলায় দর্শনার্থীদের টেনেছে। কাঠ ও স্টিলের আসবাবপত্র, কাঁসা পেতলের বাসনপত্র, মূর্তির দোকানেও ভাল বিক্রি হয়েছে। ভাঙা মেলায় অসংখ্য খুচরো ব্যবসায়ী দেদার বিক্রি করেন। ব্যবসায়ী সমিতির প্রাথমিক হিসেবে দেখা গিয়েছে, সব থেকে ভাল ব্যবসা হয়েছে জামাকাপড়ের দোকানে। বিক্রির পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি টাকা। মিষ্টি, জিলিপি, রেস্তোরাঁ, হোটেল-সহ অন্যান্য খাবারের দোকানে প্রায় ৭ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। বাংলাদেশের মেলামাইন সামগ্রী, আসবাবপত্র, বাসনপত্র মিলিয়ে ব্যবসা হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকার। মনিহারি সামগ্রীর বিক্রি হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকার। সার্কাস, নাগরদোলা সহ যাবতীয় বিনোদন খাতে ব্যবসার পরিমাণ ধরা হয়েছে প্রায় ৬ কোটি টাকা। অন্য সমস্ত খাত মিলিয়ে প্রায় ১৭ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। মেলায় আসা ব্যবসায়ীদের কয়েক জন জানান, অন্য বছর মেলা ১৫ দিন হলেও এ বার পাঁচ দিন বেশি চলেছে। আর উপরে ধান বিক্রির মরসুম থাকায় গ্রামের মানুষের হাতে পয়সা ছিল। প্রত্যেকে সাধ্যমতো কেনাকাটা করেছে। তাই ব্যবসা ভাল হয়েছে। বিক্রেতাদের সঙ্গে একমত ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টিজের সম্পাদক রাজেন বৈদ্যও। |