হস্তশিল্পের বিপণনের স্থায়ী পরিকাঠামো গড়ে তুলতে শহর ও গ্রাম এলাকায় ‘হাট’ গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে রাজ্য ক্ষুদ্র ও ছোট উদ্যোগ দফতর। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের মেলা মাঠে রাজ্য হস্তশিল্প মেলার উদ্বোধন করতে গিয়ে ওই কথা জানান ক্ষুদ্র ও ছোট উদ্যোগ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।
স্বপনবাবু জানান, ইতিমধ্যে দুর্গাপুরে ‘হাট’ গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। সল্টলেকে পরিকাঠামো গড়ার কাজ চলছে। শিলিগুড়িতে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ) সাড়ে চার একর জমি সংশ্লিষ্ট দফতরের হাতে তুলে দিয়েছে। সেখানে কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া শান্তিকেতনে এবং গ্রাম এলাকার মধ্যে পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর, ঝাড়গ্রাম এবং আলিপুরদুয়ারে হাট গড়ে তোলা হবে বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, “আপাতত অস্থায়ী ভাবে প্রত্যেক জেলা ও মহকুমাতে মেলা করে হস্তশিল্পীদের উৎপাদিত জিনিস বিক্রি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থায়ী পরিকাঠামো গড়ে তুলতে পারলে সারা বছর নিজেদের তৈরি জিনিস বিক্রির সুযোগ পাবেন শিল্পরা। তারা একেক সময় একেক হাটে গিয়ে উৎপাদিত জিনিস বিক্রি করতে পারবেন। তাতে অনেক লাভবান হবেন।” সেদিকে লক্ষ্য রেখেই ‘দিল্লি হাট’-এর আদলে শহরে ও গ্রামে হাট গড়ে তোলা হচ্ছে বলে মন্ত্রী জানান। |
প্রদীপ জ্বালিয়ে শিলিগুড়ি হস্তশিল্প মেলার উদ্বোধন করেছেন ক্ষুদ্র ও ছোট উদ্যোগ
দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক। |
পাশাপাশি, বিদেশের মাটিতে রাজ্যের হস্তশিল্পীদের তৈরি জিনিস নিয়ে যাওয়ার ব্যপারেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে ক্ষুদ্র ও ছোট উদ্যোগ দফতরের অতিরিক্ত প্রধান সচিব অনুপ কুমার চন্দ। তিনি জানান, বার্মিংহ্যাম, প্যারিস এবং ইটালিতে হস্তশিল্পের মেলা বসছে। সেখানে যোগ দেওয়া হবে বলে অনুপবাবু জানান। তিনি বলেন, “বিদেশের মাটিতে মেলাতে গতবছর আমরা যোগ দিয়েছিলাম। সেখানে আরও বেশি পরিমানে জিনিসপত্র নিয়ে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তাতে, হস্তশিল্পীরা লাভবান হবেন।” এ রাজ্যে প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ হস্তশিল্পী রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৪ লক্ষ ৮৭ হাজার জনকে ক্ষুদ্র ও ছোট উদ্যোগ দফতরের তরফে পরিচয় পত্র দেওয়া হয়েছে। এদিন শিলিগুড়ি সার্কিট হাউসে দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করে বাকি হস্তশিল্পীদের দ্রুত পরিচয় পত্র দেওয়ার কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “হস্তশিল্পীরা যাতে সরকারি সমস্তরকম সুযোগ-সুবিধে পান সে জন্য দফতরে নাম নথিভুক্ত করা ও পরিচয় পত্র দেওয়ার কাজ শুরু করা হয়েছে।”
এদিন অতিরিক্ত প্রধান সচিব জানান, গত বছর শিলিগুড়িতে ৭২৫ জল হস্তশিল্পী তাদের জিনিসপত্র নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। ৩ কোটি ৫ লক্ষ টাকার কিছু বেশি জিনিসপত্র বিক্রি হয়েছে। এবারে ৭৫০ জন শিল্পী জিনিসপত্র নিয়ে হাজির হয়েছেন। এবারে বিক্রির পরিমাণ বাড়বে বলে তারা আশাবাদী। কলকাতা, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া সহ উত্তরবঙ্গের সবকয়টি জেলার হস্তশিল্পীরা তাদের তৈরি সামগ্রী নিয়ে মেলায় হাজির হয়েছেন। মেলায় ২৬টি স্টল তৈরি করা হয়েছে। |