ইঙ্গিত জানুয়ারিতে কমানোর সুদ একই রাখল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক
রিবর্তন নয়, তার ইঙ্গিত। চমক নয়, নিয়মমাফিক পথে হেঁটে মূল্যবৃদ্ধিকে বাগে আনা, অর্থনীতির চাকা দ্রুত ঘোরাতে বিপজ্জনক নয়, সতর্ক পদক্ষেপ।
মঙ্গলবার ঋণনীতি ফিরে দেখতে গিয়ে এই রুটিন মেনেই এগিয়েছেন ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর ডি সুব্বারাও। অন্তত বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সেই কারণেই তিনি এ যাত্রায় সুদ কমানোর পথে হাঁটেননি। বরং যথেষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তিনি জানুয়ারিতে সুদ কমিয়ে স্বস্তি দেবেন শিল্পমহল ও সাধারণ মানুষকে। প্রত্যাশিত থাকলেও সুব্বারাওয়ের এই সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার ‘কঠোর’ সিদ্ধান্তে কিছুটা অসন্তোষ জানিয়েছে শিল্পমহল। যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়াও সুদ কমানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন। তিনি বলেন, “রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কোনও ব্যবস্থা না-নেওয়ার সিদ্ধান্ত বেছে নিয়েছে। অর্থনীতিতে কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। সবাইকেই বৃদ্ধির পথে ফেরায় সামিল হতে হবে।”
নিয়মনিষ্ঠ সুব্বারাও। ছবি: পিটিআই
তবে আগামী মাসে সুদ কমবে, এই আশায় ভর করে উঠেছে শেয়ার বাজার। শীর্ষ ব্যাঙ্ক সুদের হারে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার খবরে প্রথম দিকে সেনসেক্স পড়ে গেলেও সুব্বারাও ভরসা দেওয়ায় দিনের শেষে সূচক উঠেছে ১২০ পয়েন্ট। ফলে বাজার বন্ধ হওয়ার সময়ে সেনসেক্স ছুঁয়েছে ১৯,৩৬৪.৭৫ পয়েন্ট। এ দিন মূলত বেড়েছে ভারতী এয়ারটেল, এইচডিএফসি, এল অ্যান্ড টি, টাটা স্টিল, স্টেট ব্যাঙ্ক, টাটা মোটরস, ভেল, সান ফার্মা, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, হিন্দালকো-র মতো সংস্থার শেয়ার দর।
তৃতীয় ত্রৈমাসিকের মাঝামাঝি ঋণনীতির এই পর্যালোচনা পেশ করে সুব্বারাও বলেছেন, “মূল্যবৃদ্ধির চাপ কমে আসছে। এই পরিস্থিতিতে ঋণনীতিকেও তার নজর ক্রমে আরও বেশি করে ফেরাতে হবে বৃদ্ধির হার বাড়ানোর পথে বাধা কাটানোর উপর।” আরবিআই কর্তা স্পষ্টই বলেছেন, “মূল্যবৃদ্ধি ও জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধির গতিবিধির উপর সতর্ক নজর রাখছি। জানুয়ারি থেকে মার্চ ত্রৈমাসিকেই সম্ভবত আরও কম সুদের জমানায় ফেরা সম্ভব হবে।” ব্যাঙ্কিং মহলের ধারণা, সুব্বারাও তাঁর কথা রাখবেন, জানুয়ারিতেই কমবে সুদের হার। ২৯ জানুয়ারি পরবর্তী পর্যালোচনা পেশ করবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
যে-সমস্ত হার শীর্ষ ব্যাঙ্ক অপরিবর্তিত রেখেছে, তার মধ্যে রয়েছে: রেপো রেট ৮ শতাংশে (বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক যে-হারে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে স্বল্প মেয়াদে ঋণ নেয়), রিভার্স রেপো রেট ৭ শতাংশে (রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে-হারে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ নেয়), ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও বা নগদ জমার অনুপাত ৪.২৫ শতাংশে (বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ককে তার আমানতের যে-অংশ বাধ্যতামূলক ভাবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে গচ্ছিত রাখতে হয়)।
বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের প্রেসিডেন্ট রাজকুমার ধুত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্তকে ‘কঠোর’ ও ‘হতাশাজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁর মতে এর ফলে ব্যাহত হবে লগ্নি। সিআইআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল চন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্জি, ২৯ জানুয়ারি পরবর্তী পর্যালোচনা পর্যন্ত অপেক্ষা না-করে তার আগেই রেপো রেট ও সিআরআর কমিয়ে দিক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কারণ, মূল্যবৃদ্ধি ইতিমধ্যেই কমার মুখ নিয়েছে। ফিকি অবশ্য আশা প্রকাশ করেছে যে, মূল্যবৃদ্ধি কমার রুপোলি রেখাই নতুন বছরে শীর্ষ ব্যাঙ্কের সুদ কমানোর পথ সুগম করবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.