সাঁইথিয়া কলেজ নিয়ে রিপোর্ট দেবে প্রতিনিধি দল
|
নিজস্ব সংবাদদাতা • সাঁইথিয়া |
বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সাঁইথিয়ার অভেদানন্দ কলেজে ঘুরে গেলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসি দেবকুমার পাঁজা, উচ্চশিক্ষা সংসদের সরকারি প্রতিনিধি অধ্যাপক পুলকনারায়ণ ধর ও উপাচার্য মনোনীত সদস্য অধ্যাপক সর্বেশ্বর চৌধুরী। সবার সঙ্গে কথা বলে কলেজের নানা সমস্যা খতিয়ে দেখে খুব তাড়াতাড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই প্রতিনিধি দল একটি রিপোর্ট জমা দেবে। ফিরে যাওয়ার সময় দেবকুমারবাবু বলেন, “পরিচালন সমিতির সভাপতিকে কলেজের অধ্যাপকদের মধ্যে থেকেই কাউকে অবিলম্বে অস্থায়ী অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিতে বলা হয়েছে।” পাশাপাশি তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে কলেজের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনাটাই সব থেকে প্রয়োজনীয়। তার জনই কলেজ কর্তৃপক্ষকেই সচেতন হয়ে বিশেষ দায়িত্ব নিতে হবে।”
এ দিন কলেজের তালা খোলা হলেও কোনও ক্লাসই হয়নি। শিক্ষকেরা ছিলেন। এসেছিলেন পড়ুয়ারাও। তাহলে ক্লাস হল না কেন? পরিচালন সমিতির সভাপতি দেবাশিস সাহা-র অবশ্য দাবি, “অধিকাংশ শিক্ষকই ছিলেন না। |
বৈঠকের আগে। মঙ্গলবারের নিজস্ব চিত্র। |
তা ছাড়া প্রতিনিধি দল আসাই বাকিরাও বৈঠকে ব্যস্ত ছিলেন। তাই আজ ক্লাস নেওয়া ক্ষেত্রে সমস্যা ছিল।” ক্লাস না হওয়ায় এ দিনও বহু ছাত্রছাত্রী কলেজ থেকে ফিরে যান। মার্কশিট নিতে এসেছিলেন তৃতীয় বর্ষের বেশ কিছু পড়ুয়া। না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যান তাঁরাও।
প্রতিনিধি দল কলেজে থাকাকালীন কলেজে পুলিশি নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রতিনিধি দল আসার খবর পেয়ে কলেজের গেটের সামনেই বিক্ষোভ দেখায় টিএমসিপি ও তৃণমূল। পরে প্রতিনিধি দল অধ্যক্ষের ঘরে একটি বৈঠক করে। বৈঠকে ছিলেন শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও পরিচালন সমিতির লোকজন। সব পক্ষ থেকেই কলেজের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়। এ দিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করেন কলেজের বেশ কিছু প্রাক্তনীও। তাঁদের পক্ষে সত্যজিৎ সিংহ, অর্ণব মুখোপাধ্যায়, সুশোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা প্রতিনিধি দলকে অবিলম্বে কলেজে পঠনপাঠনের জন্য সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছি।” কলেজে স্থায়ী অধ্যক্ষ নিয়োগ ও অচলাবস্থা কাটিয়ে পঠনপাঠনের সুস্থ পরিবেশ গড়ে তোলার দাবিতে প্রতিনিধি দলের হাতে একটি স্মারকলিপি তুলে দেয় টিএমসিপি ও তৃণমূলও।
পিছিয়ে ছিল না ছাত্র পরিষদ পরিচালিত কলেজের ছাত্র সংসদও। সংসদের প্রতিনিধিরাও দেখা করেন দেবকুমারবাবুদের সঙ্গে। পরে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেন, “ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছাত্র সংসদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। আমরা বরং তাঁর বিরুদ্ধেই কলেজে নানা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছি। এ দিন আমরা রাজ্যপালকে দেওয়া ওই অভিযোগপত্রের প্রতিলিপি প্রতিনিধি দলের হাতে তুলে দিয়েছি।” অন্য দিকে, কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি দেবাশিস সাহা বলেন, “প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি তাঁদের জানিয়েছি, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উত্তম মণ্ডলের পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া সত্ত্বেও তিনি কাউকে চার্জ হ্যান্ডওভার না করেই কলেজে আসছেন। এ বিষয়ে তিনি প্রয়োজনীয় ছুটিও নেননি।” তাঁর দাবি, “উত্তমবাবুর অনুপস্থিতির জন্য পড়ুয়ারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অন্তত একজন শিক্ষক হিসাবে তাঁর এরকম করা উচিত হয়নি।” কলেজে প্রতিনিধি দল আসবেন সে খবর তাঁকে দেওয়া হলেও উত্তমবাবু এ দিনও অনুপস্থিত ছিলেন বলে তিনি দাবি করেছেন। যদিও উত্তমবাবুর পাল্টা দাবি, “আমি সময় মতো জানতে পারিনি। তা ছাড়া ওই কলেজে আমার কোনও নিরাপত্ত নেই। তা-ই আমি কলেজে যাইনি।” |