সুন্দরবনে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়
জমি থাকা সত্ত্বেও সাড়া দেয়নি রাজ্য, কেন্দ্রের দ্বারস্থ বামেরা
জুত রয়েছে সরকারি জমি। এক বছর আগে এই মর্মে রাজ্য সরকারের কাছে সুন্দরবন অঞ্চলে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির জন্য তদ্বির করেছিলেন বাসন্তীর আরএসপি-বিধায়ক এবং প্রাক্তন সেচমন্ত্রী সুভাষ নস্কর ও বাসন্তীর সুকান্ত কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতি লোকমান মোল্লা। তার পর ৬ মাস কেটে গেলেও তা নিয়ে রাজ্য সরকার বা মুখ্যমন্ত্রী কাছে কোনও আশ্বাস মেলেনি। বদলে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে দেন ডায়মন্ড হারবারে মহিলাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কথা। যদিও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা এখনও হয়নি। এই অবস্থায় মাস দুয়েক আগে বিষয়টি নিয়ে প্রধামন্ত্রীর দ্বারস্থ হন বাসন্তীর সুকান্ত কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতি লোকমান মোল্লা। কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ওই আর্জি বিবেচনা করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছেন।
সুভাষবাবু বলেন, “সুন্দরবনে প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষের বসবাস। সে ক্ষেত্রে শিক্ষার হার অনেক বেড়েছে। যোগাযোগও আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। তাই উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার পড়ুয়াদের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার অনুরোধ জানিয়ে রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। ওই চিঠিতে বলা হয়েছিল মাতলা নদীর চরে সরকারি অধিগৃহীত জমি রয়েছে। সেখানে অনায়াসে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা যায়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর কোনও সাড়া দেয়নি। কোনও উত্তর দেননি মুখ্যমন্ত্রীও।”
তিনি আরও জানান, বার বার তদ্বির করেও সাড়া না পেয়ে গত সেপ্টেম্বর মাসে আলিপুরদুয়ারের আরএসপি সাংসদ মনোহর তিরকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ওই আর্জি জমা দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই আর্জি বিবেচনার জন্য মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। লোকমানবাবুর কথায়, রাজ্য সরকারের এখন ‘ভাঁড়ে মা ভবানী’। বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতে অনেক খরচ। তা ছাড়া শিক্ষকদের বেতন-সহ নানা খাতে টাকা মঞ্জুর করতে হবে। সেই কারণেই হয়তো সাড়া দেয়নি। কেন্দ্রীয় সরকার যদি সুন্দরবনে ওই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে তা হলে সুন্দরবনের পড়ুয়ারা উপকৃত হবেন।”
দুই ২৪ পরগনার ১৯টি ব্লক নিয়ে সুন্দরবন। এর মধ্যে ১৩টি দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আর ৬টি উত্তর ২৪ পরগনায়। উচ্চ-শিক্ষার জন্য এই সব এলাকার অধিকাংশ পড়ুয়াকেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে হয়। সুন্দরবনের অধিকাংশ মানুষই দারিদ্রসীমার নীচে বাস করেন। সুন্দরবনে স্কুল ও কলেজের সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে শিক্ষার হার। দারিদ্রের কারণে অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রীই কলকাতায় এসে পড়াশোনার খরচ চালাতে পারেন না। প্রাক্তন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “বাড়ি থেকে যাতায়াত করতে পারলে অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রী সুন্দরবন কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনায়াসে পড়াশোনা করতে পারবেন। শহরে থাকার খরচ বাঁচবে।”
কেন জমির সংস্থান থাকা সত্ত্বেও রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না?
এ প্রশ্নের উত্তরে সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী ও তৃণমূল নেতা মণ্টুরাম পাখিরা বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে কিছু জানি না। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই ডায়মন্ড হারবারে মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মন্ত্রিসভায় তা অনুমোদনও করা হয়েছে।” যদিও ওই বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় হবে সে ব্যাপারে জমির হদিস দিতে পারেননি মন্ত্রী।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির জন্য জমির খোঁজ করা হচ্ছে। রাজ্যে বিশ্বভারতীই একমাত্র কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। মনোহর তিরকে বলেন, “আশা করছি। মানব উন্নয়ন দফতর ও প্রধানমন্ত্রী ওই কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে বিবেচনা করবেন। আমরা আশাবাদী।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.