রবিবাসরীয়তে ‘সুমনামি’ শীর্ষক রচনায় পুরনো দিনের সুরকার, শিল্পীদের কথা ভারী সুন্দর করে লিখেছেন কবীর সুমন। আমাদের অনতি-অতীতে কলাক্ষেত্রগুলিতে যাঁরা স্মরণীয়, যাঁরা সশ্রদ্ধ, যাঁরা মানুষের মনে গভীর আঁচড় কেটেছিলেন এক দিনযাঁরা ক্রমে ক্রমে বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন সুমন। সুধীরলাল চক্রবর্তীর সুরারোপিত উৎপলা সেনের একটি গান ‘এক হাতে মোর পূজার থালা, আরেক হাতে মালা’ গানটি যে তাঁকে অভিভূত করেছিল, এ কথাও লিখেছেন, কিন্তু গানটি কার লেখা, এটি তাঁর মনে নেই (৯-১২)। তাঁকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে, এই অসাধারণ গানটির গীতিকার প্রণব রায়। যাঁর আরও দুটি বিখ্যাত গান হল: ‘হৃদয় আমার সুন্দর তব পায়’ এবং ‘মধুর আমার মায়ের হাসি চাঁদের মুখে ঝরে, মাকে মনে পড়ে আমার, মাকে মনে পড়ে।’
জগন্নাথ বসু। কলকাতা-৩৭
|
কয়েকটি তথ্য। (এক) প্রণব রায়ের লেখা, সুধীরলাল চক্রবর্তীর সুরারোপিত উৎপলা সেনের গাওয়া ‘এক হাতে মোর পূজার থালা’ গানটিই শিল্পীর প্রথম রেকর্ড। (দুই) সুধীরলালের সুরে সুপ্রভা সরকার ছাড়া আরও কয়েকটি গান হল ‘অবহেলা দিয়ে বিদায় করেছ যারে’ (হেমন্ত মুখোপাধ্যায়), ‘বৃন্দাবনে শ্যাম নাই’ (গীতা দত্ত), ‘অলিরে ডাকে আজি চাঁপাকলি’ (ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য), ‘গানের সুরে কাহারে ওগো’ (মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়)। (তিন) তবে সুধীরলালের ঘরানার প্রধান ধারক ও বাহক শ্যামল মিত্র। ১৯৬৭-’৬৮ সালে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকার সময়েও শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর সুর করা চারটি অবিস্মরণীয় গান করেন, ‘শেষ কথা আজি বলে যাও’, ‘তোমার জীবনে চাইনি’, ‘তুমি শুধু বলে যাও’, ‘ঝরা ফুলদলে’। দশ বছর পর ১৯৭৭ সালে, রেকর্ড করেন ‘মধুবনে বাঁধা আছে’ এবং ‘স্মৃতি তুমি বেদনা’। তবে চলচ্চিত্রেও তাঁর প্রথম গান (১৯৫১) সুধীরলালেরই সুরে ‘সুনন্দার বিয়ে’ ছবিতে। সুধীরলাল সম্পর্কে প্রকাশ্যে তেমন কিছু বলা হয়নি বলে সুমন যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, সে প্রসঙ্গে বলি, ১৯৭১ বা ’৭২ সালে আকাশবাণীতে দুপুরে এক অনুষ্ঠানে শ্যামল মিত্র জানিয়েছিলেন, সুধীরলালের গান তাঁকে কতটা উদ্বুদ্ধ করেছিল। শুনিয়েছিলেন তাঁর প্রিয় সুধীরলালের একটি গান ‘এ জীবনে মোর যত কিছু ব্যথা’।
চঞ্চল বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা-৩০
|
খরাপ্রবণ ও বড় বড় ইটভাটা দিয়ে ঘেরা চাঁচলে, হরিশচন্দ্রপুরে যে দু-চারটি সবুজ গাছ দেখা যেত, নির্মম ভাবে সেগুলির ছেদন চলছে। কদম গাছটির নীচে বহু মানুষ, গবাদি পশু সামান্য ছায়ার জন্য দাঁড়াত। কালীপুজোর প্যান্ডেলের আলোকসজ্জা যাতে দূর থেকে দেখা যায়, তাই কুড়ি-পঁচিশ বছরের পুরোনো গাছটির ডালগুলোকে ছেঁটে ফেলা হল। পঁচিশ বছরের গাছটিকে নেড়া করতে সময় লাগল মাত্র দেড় ঘণ্টা। পরিবেশের কথা ছেড়ে দিলেও কাঠফাটা রোদে মানুষের জীবনই ওষ্ঠাগত হয়ে উঠবে।
সুনীল দাস। চাঁচল, মালদহ |