বেহাল কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে চালকের দুঃস্বপ্ন
হরতলিকে শহর কলকাতার সঙ্গে কম সময়ে বাঁধতেই তৈরি হয়েছিল কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। দূরপাল্লার গাড়ি চলার জন্য গোড়া থেকেই পরিকল্পনা ছিল চার লেনের। ব্যারাকপুর-কল্যাণী শিল্পাঞ্চলের মানুষ স্বপ্ন দেখেছিলেন এই রাস্তা নিয়ে। কিন্তু দিনের পর দিন ভাঙা রাস্তায় গতির দৈন্যই এই পথ বর্জন করতে বাধ্য হয়েছেন চালকেরা। শীত হোক বা বর্ষা, পিচ ঢালা রাস্তা বছরভর খানা-খন্দে ভর্তি। বৃষ্টি হলেই যত্রতত্র ডোবার চেহারা। শীতের রাতে কুয়াশায় এমনিতেই দৃশ্যমানতা কমে যায়। তার উপর গোটা এক্সপ্রেসওয়েতে কয়েকটি চৌমাথা ছাড়া কোথাও আলোর ব্যবস্থা নেই। দেখা যাবে না চালকের সুবিধার্থে রাস্তার ধারে রিফ্লেক্টার বা রেলিং। এমনিতেই এই রাস্তা এখনও সিঙ্গল লেন-এর। তার উপর বেশ কয়েকটি জায়গায় দু’পাশে জলাভূমি রেখে যাওয়া এই এক্সপ্রেসওয়েতে বিপজ্জনক বাঁক আছে। যে সব জায়গায় দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রায়ই।
নিমতা থেকে কল্যাণী পর্যন্ত কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি চলাচলের জন্য কর আদায় করা হয় তিন জায়গায়। একে ভাঙা রাস্তায় গাড়ির ক্ষতি, তার উপর কোমর ব্যথা করে সিঙ্গল কাউন্টারের টোল প্লাজায় লাইনে দাঁড়াতে হয় কখনও পাঁচ মিনিট কখনও আবার পনেরো মিনিট। বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে এই ছবি। নিয়ম মেনে এই এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি হয়নি বলে বিগত বামফ্রন্ট সরকারের সময় ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ তড়িৎ তোপদার প্রশ্ন তুলেছিলেন। রাস্তার দু’পাশে গাছ থাকায় কোথায় বাঁক তা বুঝতে চালকদের সুবিধা হত। কিন্তু সম্প্রতি রাস্তা চওড়া করা হবে বলে রাস্তার দু’ধারের গাছ কেটে ফেলায় অন্ধকারে কোথায় বাঁক তা বুঝতে বুঝতেই দুর্ঘটনায় পড়ছেন চালকেরা। পাশাপাশি নির্বিচারে দেদার গাছ কাটা নিয়েও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যে ভাবে ব্যারাকপুরে বিটি রোড বরাবর মেট্রো প্রকল্পের জন্য সমস্ত দামি ও পুরনো গাছ কাটার পরে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন নিয়ে জলঘোলা হচ্ছে, একইভাবে এক্ষেত্রেও তেমনটা হবে না তো?
বেহাল এক্সপ্রেসওয়ে নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগের সদুত্তর নেই টোলপ্লাজার কর্মীদের কাছেও। তাঁদের দাবি, কর আদায়ের পরে সেই টাকা কেএমডিএ-র কোষাগারে জমা পড়ে। রাস্তা সারানোর ঠিকা দেয় কেএমডিএ। বেহাল রাস্তার ফলে কর আদায় কমেছে। অনেক গাড়ির চালক বিশেষত রাতের দিকে এই পথটি এড়াতে বিটি রোড ব্যবহার করছেন। যদিও বিটি রোড ও যশোহর রোডের চাপ কমাতেই বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে কল্যাণী পর্যন্ত এই রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বামফ্রন্ট সরকার। কয়েক দফায় রাস্তাটি তৈরি হলেও জমি অধিগ্রহণ জটে শেষ পর্যন্ত আটকে রয়েছে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগকারী অংশের কাজ। বাম সরকারের শেষ সময়ে তড়িঘড়ি ঘোলা থেকে নিমতা পর্যন্ত অংশটির উদ্বোধন করেছিলেন তদানীন্তন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, ‘‘মাস তিনেকের মধ্যে বাকি অংশের কাজ শেষ হয়ে যাবে।” কিন্তু রাজনৈতিক পালা বদলের পরে বছর ঘুরে গেলেও কাজ যেমন আর এগোয়নি, তেমনই নতুন তৈরি রাস্তাও ভেঙে বসে গিয়েছে। সব থেকে আশ্চর্যের, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের এই অংশে গাড়ির চাপ কম। তারপরেও কি করে রাস্তা ভেঙে বড়সড় গর্ত তৈরি হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘এক্সপ্রেসওয়েটি চার লেনের করার জন্য কাজ চলছে। ভাঙা রাস্তা সারানোর বিষয়টিও দেখা হচ্ছে।’’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.