|
|
|
|
উদ্যোগী এইচডিএ |
হলদিয়া ভবনে অনলাইন বুকিং |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
এ বার অনলাইন বুকিংয়ের সুযোগ চালু হতে চলেছে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের (এইচডিএ) অতিথিশালা ‘হলদিয়া ভবনে’। দরপত্র ডেকে ইতিমধ্যেই কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে আজ, ১৭ ডিসেম্বর পর্ষদের বোর্ড মিটিংয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পরেই এই ব্যবস্থা চালু হবে বলে জানা গিয়েছে। শুধু মাত্র সরকারি বা বেসরকারি ‘অতিথি’ নয়, সর্বসাধারণের জন্য খোলা হচ্ছে এই ব্যবস্থা। হলদি-হুগলির সঙ্গমস্থল হলদিয়াকে রাজ্যের পর্যটনের মানচিত্রে আকর্ষণীয় করে তুলতেই পর্ষদের এই উদ্যোগ।
পূর্ব মেদিনীপুরের শিল্পশহর হিসেবে হলদিয়ার গুরুত্ব বরাবরের। বিগত বাম সরকারের আমলেই বন্দরের থেকে প্রায় ১০ একর জায়গা লিজ নিয়ে গড়ে তোলা হয় এই ভবন। হলদিয়া টাউনশিপের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে বন্দরের তৃতীয় জেটি সংলগ্ন হলদি ও হুগলি নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত এই ভবন। বন্দরের যাওয়া-আসা করা জাহাজ দেখার জন্য সামনেই রয়েছে ‘মেরিন ড্রাইভ’। এখনও পর্যন্ত জেলায় কোনও সার্কিট হাউস না থাকায় ১৯৮১ সাল থেকেই শিল্পনগরীতে আসা দেশ-বিদেশের বহু পুঁজিপতি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রীরা থেকেছেন এই ভবনেই। ৯ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হলদিয়ায় শিল্প কারখানার উদ্বোধনে এসে থেকেছেন এই ভবনেই। এইচডিএ সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী নিজেও ভবনের পরিবেশ দেখে প্রশংসা করেছেন। তিনিই পর্ষদের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে এই ভবনটির সৌন্দর্যায়নে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এর পরেই এই ‘অনলাইন বুকিং’য়ে উদ্যোগী হন এইচডিএ কর্তৃপক্ষ। ভবনের ১৬টি ঘরের মধ্যে ৮টি ঘরই ভাড়ায় দেওয়া হবে। এমনকী ভবনের সভাকক্ষটিও অনলাইনে ‘বুক’ করা যাবে বলে জানা গিয়েছে। এক দিনের জন্য তিন’শো থেকে ছ’শো টাকাতেই মিলবে সাধারণ ও শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘর।
লহরী (‘এস’ আকারের) আকৃতির এই ভবনের ঘরগুলোর নাম রাজ্যের ১৬টি নদীর নামে। যার মধ্যে হলদি, সুবর্ণরেখা, রূপনারায়ণ ও কাঁসাই নামের চারটি ঘর বিশিষ্টদের জন্য বরাদ্দ। এ ছাড়াও রয়েছে একটি সভাকক্ষ। এত দিন এ সব ঘর পেতে গেলে এইচডিএ কার্যালয়ে এসে বুকিং করতে হত। বুকিংয়ের ক্ষেত্রে জটিলতা থাকায় অনেক সময়েই সমস্যায় পড়তেন বেসরকারি সংস্থার আধিকারিকেরা। এ ছাড়া ২০০২ সাল থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষ এখানে একটি ‘মাল্টিপারপাস বার্থ’ গড়ার প্রক্রিয়া শুরু করে। ফলে শেষ পাঁচ বছরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জীর্ণ অবস্থায় পড়ে ছিল এই ভবন। ঘর নেওয়ার ক্ষেত্রেও অনীহা বাড়ছিল বলে খবর। সম্প্রতি শালুকখালিতে হলদিয়া ডক ২ এর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় বন্দর ওই বার্থ গড়ার প্রক্রিয়া থেকে কিছুটা সরে আসে। শুরু হয় মেরামতের কাজ। কিছু দিন আগেই এইচডিএর উদ্যোগে ভবনটির চার দিকের বাগানের শোভা বাড়াতে লাগানো হয় বেশ কিছু বাহারি আলোকবাতি। ‘হলদিয়া ভবনে’র দায়িত্বে থাকা আধিকারিক তাপস রায় বলেন, “এই উদ্যোগে আগের থেকে ঘর বুকিংয়ের জটিলতা কমবে। পর্যটকেরা যাতে বেশি করে হলদিয়ায় আসেন, এটাই আমাদের লক্ষ্য।” উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক নীলাঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, “অনেক বার ওখানে গিয়েছি। পরিবারের অনেকেই বাইরে থেকে এসে হলদিয়া দেখতে চান। এই প্রক্রিয়া চালু হলে সাধারণের উপকার হবে। ভবনের সামনের জায়গায় শিশুদের জন্য পার্ক হলে আরও ভাল হয়।” এইচডিএ’র মুখ্য নির্বাহী আধিকারিক পি উলাগানাথন জানান, হলদিয়ায় আসা সাধারণ মানুষের কাছে ভবনটির গুরুত্ব বাড়াতেই এই উদ্যোগ। আগামী বোর্ড মিটিংয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রক্রিয়া অনেকটা এগিয়েছে তবে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অনলাইন বুকিংয়ে যে সব ঝুঁকি থাকে সেগুলি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। আশা করছি উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে।” |
|
|
|
|
|