নির্বিঘ্নেই মণিপুর, নাগাল্যান্ড হয়ে অসমে প্রবেশ করল আসিয়ান গাড়ি দৌড়ে অংশ নেওয়া ৩৩টি গাড়ি। আজ বিকেলে গুয়াহাটি পৌঁছয় গাড়িগুলি।
মণিপুরে আসিয়ান গাড়িগুলি ঢুকতে না দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল কুকিরা। শেষ অবধি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতরের লিখিত আশ্বাস পেয়ে কুকি রাজ্য দাবি কমিটি ও কুকি জঙ্গি সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ পথ অবরোধ তুলে নেয়। কাল বিকেলে মোরে সীমান্ত পেরিয়ে মায়ানমার থেকে গাড়িগুলি ভারতের সীমানায় প্রবেশ করে। ইম্ফলের কাংলা দুর্গে ১১টি দেশের ১১৬ জন প্রতিযোগিকে সংবর্ধনা দেন মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি সিংহ। তিনি বলেন, “এই বছর ‘আসিয়ান-ভারত অংশিদারির বিশ বছর পূরণ হচ্ছে। এই গাড়ি দৌড় কেবল আসিয়ান দেশের সঙ্গে ভারতের মৈত্রীর সম্পর্ককেই সুদৃঢ় করছে না, উত্তর-পূর্বে বাণিজ্য সম্ভাবনার নতুন দিকও খুলে দিতে চলেছে। ‘আসিয়ান-ভারত ভিশন-২০২০’ আগামী বছরগুলিতে আসিয়ান দেশগুলির মধ্যে বাণিজ্য-সম্পর্কের চালিকাশক্তি হতে চলেছে।” ইন্দোনেশিয়ার ইয়োগজাকার্তায় পথ চলা শুরু করে সিঙ্গাপুর, মালয়শিয়া, তাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস, মায়ানমার হয়ে ভারতে এসেছে ‘আসিয়ান কার র্যালি’। ইবোবির মতে, এশীয় সড়ক ১ ও ২ মণিপুরের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব এশিয়াকে যুক্ত করে। অনেক প্রতিযোগীই আগে মণিপুরের নামও শোনেননি। গাড়ি দৌড় সেই সেতুবন্ধন ঘটালো। পরের বছর ইম্ফল-মান্দালয় বাস পরিষেবা চালু হলে পড়শি দেশগুলির সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের বন্ধন দৃঢ়তর হবে। |
ইম্ফল থেকে কাল রাতে নাগাল্যান্ডের কোহিমা আসেন প্রতিযোগীরা। রাতটা সেখানে কাটিয়ে আজ ফের রওনা। দলের নেতা, সাংসদ তরুণ বিজয় বলেন, “প্রাচীনকাল থেকে সংস্কৃতির বন্ধনে আবদ্ধ দেশগুলি যেন এই গাড়ি দৌড়ের মধ্য দিয়ে স্মৃতির সরণি বেয়ে ৮হাজার কিলোমিটার পথ পার করল। যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নতি হলে, মণিপুর, নাগাল্যান্ড অদূর ভবিষ্যতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ব্যবসা কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।” গাড়ির সারিকে অসমের উদ্দেশে রওনা করিয়ে নাগাল্যান্ডের কৃষিমন্ত্রী চুম্বেন মুরি বলেন, “এই দৌড় বড়দিনের সেরা উপহার ছিল।” অসমে প্রবেশ করার পরে, নামবর সংরক্ষিত অরণ্যের কাছে গোলাঘাটের জেলাশাসক সঞ্জীব গোহাঁই বরুয়া গাড়িগুলিকে স্বাগত জানান। নুমালিগড়ে সংবর্ধনা ও চা গাছ রোপন অনুষ্ঠানে অংশ নেন গাড়ির আরোহীরা। কাজিরাঙায় স্কুলের ছাত্ররা পতাকা নাড়িয়ে ও হস্তিবাহিনী রাজকীয় মেজাজে গাড়ি দৌড়কে অভ্যর্থনা দেয়। এরপর, বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ গুয়াহাটি পৌঁছয় ২৮টি এক্সইউভি-৫০০ গাড়ি ও ৫টি সহযোগী গাড়ি।
আগামিকাল, সরুসজাই স্টেডিয়াম থেকে গাড়িগুলিকে আনুষ্ঠানিকভাবে দিল্লি অভিমুখে রওনা করাবেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ ও কেন্দ্রীয় শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রী আনন্দ শর্মা। অনুষ্ঠানে আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির রাষ্ট্রদূতেরাও থাকছেন। সিআইআই-এর উদ্যোগে শিল্প-বাণিজ্য সমাবেশ হওয়ার কথা সেখানে। তথ্য-প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, সীমান্ত বাণিজ্য, পরিকাঠামো উন্নয়ন, জল ও আকাশপথে যোগাযোগ এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় বিষয়ে সমাবেশে, বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা মত বিনিময় করতে চলেছেন। আগামী ২০ ডিসেম্বর দেশের রাজধানী দিল্লি পৌঁছবে গাড়িগুলি। এখন অপেক্ষা সেখানেও। |