নিষিদ্ধ ক্যারি-ব্যাগের রমরমা ময়নাগুড়িতে
লে না-নিয়ে বাজারে আনাজপাতি কিনতে যাওয়া স্থানীয় মানুষদের অনেক দিনের রেওয়াজ। দোকান থেকে কোনও কিছু কেনাকাটা করার পরে বিক্রেতা বিভিন্ন রংয়ের ফিনফিনে ক্যারিব্যগে তা ভরে দেয় যে! এ ভাবে কয়েকটি ক্যারিব্যাগে সবজি ও মাছ-মাংস নিয়ে হাসি-মুখে বাড়ি ফিরছেন যারা, তাঁদের মধ্যে শিক্ষক থেকে সরকারি দফতরের আধিকারিক সকলেই রয়েছেন। শুধু কী সবজি! ডুয়ার্সের প্রাচীন জনপদ ময়নাগুড়ির ফল সহ নানা বাজার ঘুরে, মুদি ও মিষ্টি দোকানে কিছু কেনাকাটার পরে দেখে একেবারেই মনে হবে না যে এখানে প্লাস্টিক ক্যারি-ব্যাগ নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে অনেক দিন আগেই।
ক্যারি-ব্যাগের এই রমরমা ব্যবহারের ফল জানার জন্য কাউকে অবশ্য বাজারে যেতে হবে না। রাস্তায় পা রেখেই মালুম হবে পরিস্থিতি এখানে কতটা উদ্বেগজনক। পিচের প্রলেপ তলিয়ে গিয়েছে গুটখা সহ ক্যারি-ব্যাগের আস্তরণে। যানবাহন চলাচল করতে সে সব বাতাসে উড়ছে। বাজার চত্বর ভরেছে প্লাস্টিকের জঞ্জালে। মাটি আড়াল হয়েছে আশপাশের এলাকাতেও। কালেভদ্রে সাফাই হলে ডাম্পিং গ্রাউন্ড না-থাকায় সে সব জমা হবে নদীতে। বছরের পর বছর ধরে ওই পরিস্থিতি চললেও প্রশাসন ও গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তাদের কোনও রকম হেলদোলই নেই। এমনকী নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধে টানা প্রচারের ব্যাপারে কেউই উদ্যোগী হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে ময়নাগুড়ি শহরে। অথচ পাশের শহর জলপাইগুড়িতে ওই দূষণ এড়াতে ধারাবাহিক ভাবে অভিযান চালানো হচ্ছে। কেন ময়নাগুড়ি উল্টো পথে! কী বলছেন পঞ্চায়েত কর্তারা!
স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দুলালী অধিকারী বলেন, “প্লাস্টিক দূষণের সমস্যা নিয়ে এক বার আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু সে ভাবে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।” প্রায় একই রকন বক্তব্য ময়নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান গোবিন্দ রায়ের। স্থানীয় বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের দায় ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের উপরে সঁপেছেন। তিনি বলেন, “এটা প্রশাসনের কাজ। ওঁরা ব্যবস্থা না-নিলে আমাদের কী করার আছে!” স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির কর্তারা এ প্রসঙ্গে জানান, প্রশাসনের তরফে ব্যবস্থা না-নেওয়া পর্যন্ত তাঁদের পক্ষে কিছু বলা সম্ভব নয়। সংস্থার সম্পাদক বজরংলাল হিরাউত বলেন, “প্রশাসন উদ্যোগী হলে আমরা পাশে থাকব।”
দূষণ প্রতিরোধের দায় কার? যেন ওই প্রশ্নকে ঘিরে বিতর্কে মগ্ন ময়নাগুড়ি। চোখের সামনে দূষণের মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে গেলেও কেউ প্রতিবাদে এগিয়ে আসেন না। অথচ শহরের নিকাশি ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়েছে। বাজারে কেনাকাটার সূত্র ধরে বিভিন্ন পাড়া থেকে চাষের মাঠেও ঢুকে পড়েছে নিষিদ্ধ প্লাস্টিক। উদ্বিগ্ন ময়নাগুড়ি ব্লক কৃষি আধিকারিক সঞ্জীব দাস বলেন, “ওই ব্যাগ পচনশীল নয়। তাই মাটির মারাত্মক ক্ষতি করছে।” ক্ষতি জেনেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না এটা বুঝে উঠতে পারছেন না প্রশাসনের অনেকেই। তাঁদের মতে, ধারাবাহিক প্রচারের পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেত। সেটা না-হওয়ায় সমস্যা উদ্বেগজনক হয়েছে। বিডিও কল্যাণ বড়ুয়া বলেছেন, “প্রশাসনকে দেখিয়ে কেউ দায় এড়াতে পারেন না। তবু নিষিদ্ধ ক্যারি-ব্যাগের ব্যবহার বন্ধের জন্য দ্রুত আলোচনায় বসে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.