ফের শহরে ফিরছে প্লাস্টিক,অভিযোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
মাস খানেক অভিযান বন্ধ থাকায় ফের শহর জুড়ে শুরু হয়েছে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার। জলপাইগুড়ি শহরের দিনবাজার, স্টেশনবাজার থেকে শুরু করে শহরের শান্তিপাড়া, পান্ডাপাড়ার সর্বত্রই অবাধে ক্যারিব্যাগের ব্যবহার চলছে বলে অভিযোগ। অথচ মাসখানেক আগেও শহরের বাজার এলাকা-সহ বিভিন্ন দোকানে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বলে পুরসভার দাবি করেছিল। নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার রুখতে ‘স্পট ফাইন’ চালু করেছিল পুরসভা। সেই অভিযান বন্ধ রাখাতেই ফের প্লাস্টিকের ব্যাগের ব্যবহার জাঁকিয়ে বসেছে বলে পুর কর্তৃপক্ষ স্বীকারও করে নিয়েছেন। রবিবার সকালে স্টেশন বাজারে গিয়ে দেখা গেল সবজি, ফল থেকে মাছ মাংসের বাজারেও দিব্যি অবাধ ব্যবহার চলছে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের। বেগুনটারি এলাকার মিষ্টির দোকান কিংবা দিনবাজারের কিছু জামা কাপড়ের দোকানেও প্লাস্টিকের ব্যবহার চলছেই।
জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “এ যেন চোর পুলিশ খেলা। কোনও বাজারে অভিযান চালালে তার পরে মোটামুটি এক সপ্তাহ প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার হয় না। তার পরেই আবার লুকিয়ে-চুরিয়ে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার শুরু হয়। দ্রুত আবার অভিযান হবে। তবে এ বার স্থায়ী সমাধানের উপায় খুঁজে বার করা হবে।”
পুরসভার অভিযোগ, জলপাইগুড়ি শহরের এক শ্রেণির ব্যবসায়ীই প্লাস্টিকের ব্যবহারে মদত দিচ্ছেন। সম্প্রতি পুরসভা শহরের দিনবাজার এলাকার ৬টি প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের গুদামে তালা ঝুলিয়ে দেয়। প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের বদলে কাগজ বা কাপড়ের ব্যাগ বিভিন্ন দোকানে রাখাও শুরু হয়। এ জন্য ক্রেতাদের থেকে ১ টাকা ২ টাকা বেশি করে নিয়ে প্লাস্টিকের পরিবর্তে কাপড়ের বা কাগজের ব্যাগ দেওয়াও শুরু হয় বেশ কিছু দোকানে। যদিও বেশির ভাগ দোকানেই কিছু দিন প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বন্ধ রেখে ফের ক্রেতাদের হাতে সেই প্লাস্টিকে ব্যাগ ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগে মুনাফা বেশি বলেই শহরের একশ্রেণির ব্যবসায়ীরা বাজারে ফের প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ছড়িয়ে দিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ।
সম্প্রতি শহরের দু’টি গুদামে প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ঢুকেছে বলে পুরসভার কাছে খবর এসেছে। পরিবেশপ্রেমী সংস্থা সায়েন্স এন্ড নেচার ক্লাবের রাজা রাউত বলেন, “কিছুদিন শহরে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বন্ধ থাকলেও ফের তার ব্যবহার শুরু হয়েছে। প্রতিটি বাজারে যদি কিছু দিন পুরসভা সর্বক্ষণ নজরদারি চালাতে পারে, তবে এই প্রবণতা অনেকটাই বন্ধ হবে।” পুরসভা সূত্রে জানা যায়, পুলিশ-প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে ওই গুদামগুলিতে অভিযান চালানোর পাশাপাশি শহরে বাজার এলাকা থাকা গুদামে কী ধরনের পণ্য ঢুকছে তা দেখার জন্য পাকাপাকি ভাবে চৌকি তৈরি করা হবে। পাশাপাশি, পুরসভাতেও প্লাস্টিক বিরোধী একটি স্থায়ী সেলও তৈরি করা হবে বলে জানা গিয়েছে। চেয়ারম্যান জানান, শুধু অভিযান বা নজরদারি দিয়েই চলবে না সাধারণ মানুষের মধ্যে আরও বেশি করে সচেতনতা প্রসারের প্রয়োজন। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “যে ভাবেই হোক শহরে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধ করতে হবে। এ বার থেকে সন্ধ্যার পরেও বাজারে নজরদারি চালানো হবে।” |