শিয়ালদহের বি আর সিংহ হাসপাতাল চত্বরের এক ধারের একটি ফাঁকা জায়গায় বসানো হয়েছে ‘নার্স’ ও ‘চিকিৎসক’-কে। সামনে আনা হয়েছে জনা কুড়ি চাকরিপ্রার্থীকে। মেডিক্যাল পরীক্ষার পর রেলে চাকরির নিয়োগপত্র পাবেন তাঁরা।
মেডিক্যাল পরীক্ষার জায়গা এবং নার্স-চিকিৎসকের হাবভাবে সন্দেহ হয়েছিল চাকরিপ্রার্থীদের কয়েক জনের। তাঁদের এক জনই বিষয়টি জানান রেলরক্ষী বাহিনীর (আরপিএফ) এক জনকে। জেরা করতেই চম্পট দেয় নার্সের পোশাক পরা মহিলা। ধরা পড়ে ‘চিকিৎসক’। ঘটনাটি মঙ্গলবারের। রেল পুলিশ জানিয়েছে, রামপুরহাটের ওই চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ এবং ধৃত ব্যক্তিকে জেরা করে জানা যায়, রেলের চাকরির মেডিক্যাল পরীক্ষার নাম করে ওই যুবকদের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। শিয়ালদহ রেল পুলিশ সুপার উৎপল নস্কর রবিবার জানান, “চিকিৎসকের পোশাক পরা যুবক ছাড়াও পরে ওই ঘটনায় জড়িত মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার রাতে দমদমের মতিলাল কলোনি থেকে ধরা হয় ওই চক্রের আরও দু’জনকে। আরও কয়েক জন ওই চক্রের সঙ্গে জড়িত।” |
শিয়ালদহ কোর্টে দিব্যেন্দু প্রধান ও প্রসেনজিৎ বাগ। —নিজস্ব চিত্র |
পুলিশ জানায়, ধৃত চার জনের মধ্যে চিকিৎসকের পরিচয় দেওয়া যুবকটির নাম গোপাল মালাকার। নার্সের পোশাক পরা মহিলা সোনালি গুড়ে। শনিবার রাতে দমদম থেকে ধরা পড়া দু’জনের নাম দিব্যেন্দু প্রধান এবং প্রসেনজিৎ বাগ। ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তদন্তকারীরা ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছেন রেলের জাল পরিচয়পত্র, ভুয়ো নথি, মেডিক্যাল পরীক্ষার কাগজপত্র। পুলিশের অনুমান, চক্রটি রেলে চাকরি দেবে বলে কয়েকশো যুবককে ঠকিয়ে কোটি টাকার উপরে আত্মসাৎ করেছে।
পুলিশ ধৃতদের কাছ থেকে জানতে পেরেছে, প্রথমে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ‘এনরোলমেন্ট’-এর নাম করে হাজার পনেরো টাকা নেওয়া হত। এর পরেই মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য ২০ হাজার টাকা দিতে হত তাঁদের। এ ভাবেই বিভিন্ন খাতে কয়েক দফায় লক্ষাধিক টাকা দিতে হত চাকরিপ্রার্থীদের। জাল পরিচয় পত্র এবং বিভিন্ন কাগজপত্র দেখিয়ে তারা বিশ্বাস অর্জন করত। প্রতারিতরা পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁদের বলে দেওয়া হয়েছিল, খুব গোপনে এই চাকরি হবে। তাই লিখিত পরীক্ষা হবে না। শুধু টাকা দিলেই হবে। |