২০১২ অতীতের পাতায় চলে যেতে আর মাত্র সপ্তাহ দুয়েক বাকি। এই ক’দিনে বড়দিনের উৎসব পালনের পাশাপাশি তৈরি করে নিন ২০১৩-র জন্য একটি আর্থিক চেকলিস্ট। এই তালিকায় থাকবে সেই সব কাজ, যা ২০১২-তে করা হয়নি এবং যা যা নতুন বছরে করতে হবে। প্রত্যেকটি কাজের পাশে লিখে রাখুন কোনটি কত দিনের মধ্যে শেষ করা হবে। তালিকাটি তৈরি হওয়া মানেই কিন্তু ব্যাপারটি অনেকটা এগিয়ে গেল। গুরুত্বপূর্ণ বহু কাজ স্মৃতির দেওয়াল টপকে অন্ধকারের জগতে চলে যেতে পারবে না। এখন এক নজরে দেখে নেব নতুন বছরের মেন্যু কার্ডে কী কী থাকবে। তালিকাটি অবশ্যই সম্পূর্ণ নয়। নিজের অবস্থান মাফিক বদলে নিন।
১) করদাতারা প্রথমেই দেখুন ২০১২-’১৩ সালে কর সাশ্রয়ের জন্য ৮০সি ধারায় উপযুক্ত পরিমাণ অর্থ কর সাশ্রয় প্রকল্পে লগ্নি করা হয়েছে কি না। না হয়ে থাকলে দু’মাসের মধ্যে করে ফেলুন।
২) দেখে নিন সব ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট পেলেন কি না। না পেয়ে থাকলে তা সংগ্রহের ব্যবস্থা করুন। পাসবুক লিখিয়ে নিন ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরীক্ষা করে দেখুন যত চেক ও টাকা জমা করেছেন, তা স্টেটমেন্ট বা পাসবুক দেখাচ্ছে কি না।
৩) পরীক্ষা করে দেখুন সব সূত্র থেকে প্রাপ্য সুদ এবং ডিভিডেন্ড ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে কি না। কোনও টাকা জমা না হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে জানান।
৪) লকার ভাড়া না দেওয়া হয়ে থাকলে দ্রুত মিটিয়ে দিন।
৫) মেডিক্লেম অর্থাৎ স্বাস্থ্যবিমা সময় মতো রিনিউ করার ব্যবস্থা করুন। সময়মত মেটান জীবন বিমার প্রিমিয়াম। বাড়ি/ফ্ল্যাটের কর বকেয়া থাকলে তা-ও দিতে হবে চটজলদি।
৬) শেয়ার বাজার এখন তুলনায় তেজি। এই সুযোগে বিক্রি করার কথা ভাবুন দীর্ঘ দিন ধরে পোর্টফোলিওতে থাকা বিভিন্ন অনামী শেয়ার। নজর রাখুন মিউচুয়াল ফান্ডের ন্যাভে। ভাল দাম পেলে বেরিয়ে আসার কথা ভাবতে পারেন।
৭) সেভিংস অ্যাকাউন্টে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত টাকা থাকলে, তা কোনও বেশি আয়যুক্ত প্রকল্পে সরিয়ে নিন।
৮) ‘সিটিএস-২০১০’ ব্যবস্থা অনুযায়ী নতুন চেক বই না-পেয়ে থাকলে, তা সংগ্রহ করুন নিজের ব্যাঙ্ক থেকে।
৯) পিপিএফ অ্যাকাউন্ট না-থাকলে, নতুন বছরে নিজেকে এই অ্যাকাউন্ট-ই উপহার দিন। দীর্ঘ মেয়াদে বড় কাজ দেবে।
১০) নতুন বছরের নতুন ডায়েরিতে লিখে ফেলুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, বিভিন্ন ক্ষেত্রে লগ্নি ইত্যাদি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য। লিখে রাখতে হবে ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড নম্বর, বিভিন্ন ক্ষেত্রের পাসওয়ার্ডও।
১১) দেখে নিন গাড়ির বিমার নবীকরণের সময় হয়েছে কি না। দেখে নিতে হবে দূষণ সার্টিফিকেটের মেয়াদও।
১২) মোটা টাকায় দীর্ঘমেয়াদে কিছু কেনার ইচ্ছে থাকলে বছরের গোড়াতেই খুলে ফেলুন রেকারিং ডিপোজিট বা এসআইপি অ্যাকাউন্ট।
যে এক ডজন কাজের কথা এখানে বলা হল তার সবই আমাদের জানা। কিন্তু ভুলে যাওয়া বা সময় না-পাওয়া এখন জীবনযাত্রার অঙ্গ। নতুন বছরের ছুতোয় এই কাজগুলো যদি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, তবে অযথা ঝঞ্জাটে পড়তে হয় না। বহু ক্ষেত্রে কমে লোকসানও। প্রতিদিন কোনও একটি কাজ অবশ্যই করব এই প্রতিজ্ঞা করে শুরু করলে শেষ করতে বেশি সময় লাগবে না। নিশ্চিন্ত লাগবে কাজগুলি শেষ হলে। |