বরাবর সিপিএমের দখলে থাকা দু’টি স্কুলের পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে জয়ী হল কংগ্রেস। রবিবার কাটোয়া শহরের ভারতীভবন ও কাশীশ্বরী গার্লস হাইস্কুল, দু’টিতেই ছ’টি আসনের সবগুলিতে জেতেন কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থীরা। এ দিন শহরের আরও তিনটি স্কুলে পরিচালন সমিতির ক্ষমতা ধরে রাখল কংগ্রেস। মঙ্গলকোটের শ্যামবাজার হাইস্কুলে অবশ্য জয়ী হন সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীরা। কেতুগ্রামের মৌগ্রাম হাইস্কুলে বাতিল ভোট নিয়ে চাপানউতোরে গণনা বন্ধ হয়ে যায়।
এ দিন কাটোয়া শহরের যে পাঁচটি স্কুলে ভোট ছিল, তার কোনওটিতেই প্রার্থী দেয়নি তৃণমূল। এ দিন সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকেল ৪টে পর্যন্ত ভোট চলে। কেডিআই-তে ১১৮৯ জন, ডিডিসি-তে ১২০২ জন, ভারতীভবনে ৭১৮ জন, রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠে ৪৮৯ জন ও কাশীশ্বরী হাইস্কুলে ৭১২ জন ভোট দেন। সন্ধ্যায় গণনা শেষ হয়। ভারতীভবন ও কাশীশ্বরী গার্লস হাইস্কুল ছাড়াও কাশীরাম দাস বিদ্যায়তন (কেডিআই), রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠ ও দুর্গাদাসী চৌধুরানি (ডিডিসি) স্কুলেও ৬-০ ফলে জেতেন কংগ্রেসের প্রার্থীরা।
ভোটগণনা শেষে সিপিএমের কাটোয়া জোনাল কমিটির সম্পাদক অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “স্কুল ভোটেও কংগ্রেস সন্ত্রাস করেছে, ছাপ্পা ভোট দিয়েছে। পুলিশের সামনেই আমাদের নেতাদের মারধর করা হয়েছে। এমন ঘটনার কথা আশঙ্কা করে আগেই পুলিশকে জানিয়েছিলাম।” এসডিপিও (কাটোয়া) ধ্রুব দাস যদিও বলেন, “সারাক্ষণ পুলিশ ছিল। আমরা বারবার গিয়েছি। এমন কোনও ঘটনা নজরে পড়েনি। কেউ অভিযোগও করেননি।” কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, “ভোটে হেরে সিপিএম মিথ্যা অভিযোগ করছে। কাটোয়ার মানুষ শান্তিপূর্ণ ভাবেই আমাদের ভোট দিয়েছেন।”
মঙ্গলকোটের শ্যামবাজার হাইস্কুলে ছ’টি আসনের সব ক’টিতেই প্রার্থী দিয়েছিল কংগ্রেস, সিপিএম এবং তৃণমূল। ফল বেরোতে দেখা যায়, সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীরা ৫টি ও কংগ্রেসের প্রার্থীরা একটি আসনে জয়ী হয়েছেন। কেতুগ্রামের মৌগ্রাম হাইস্কুলে ৮৭০ জন অভিভাবকের মধ্যে এ দিন ৮২০ জন ভোট দিয়েছিলেন। ছ’টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছিল সিপিএম, কংগ্রেস ও তৃণমূল। স্কুল সূত্রে জানা যায়, গণনা শুরু হওয়ার পরে তৃণমূলের তরফে স্ট্যাম্পের বদলে টিপছাপ দেওয়া ব্যালটগুলিকেও বৈধ ভোট হিসেবে গণ্য করার দাবি জানানো হয়। কিন্তু সিপিএম এবং কংগ্রেসের তরফে তার প্রতিবাদ জানানো হলে গোলমাল শুরু হয়ে যায়। প্রিসাইডিং অফিসার গণনা বন্ধ করে দেন।
সন্ধ্যায় কেতুগ্রাম ব্লক প্রশাসনের আধিকারিক ঘটনাস্থলে গেলে সিপিএম এবং কংগ্রেসের লোকজন বিক্ষোভ দেখান। সিপিএমের ভাগীরথী-অজয় জোনাল কমিটির সদস্য প্রবীর গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, “প্রশাসনিক কর্তারাও তৃণমূলের দাবি মানার ইঙ্গিত দিয়েছেন। আমরা মহকুমাশাসকের হস্তক্ষেপ চেয়েছি। সেখানে বিষয়টি না মিটলে আদালতের দ্বারস্থ হব।” |