বাড়ছে না ভাড়া। তার উপরে বাড়ছে অটোর সংখ্যাও। প্রতিবাদে শনিবার দুর্গাপুরের ৮-বি রুটের সব বাস বন্ধ রাখলেন বাস মালিকেরা। অবিলম্বে ভাড়া না বাড়ালে শহরের সব রুটেই বাস বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকিও দিয়েছেন তাঁরা। পরিবহণ দফতর অবশ্য জানিয়েছে, কয়েক দিনের মধ্যেই বর্ধিত ভাড়ার তালিকা দিয়ে দেওয়া হবে।
কলকাতায় বর্ধিত ভাড়া নিয়ে বাস মালিকদের অসন্তোষ থাকলেও তা চালু হয়েছে শেষমেশ। কিন্তু দুর্গাপুরে বর্ধিত ভাড়া চালু হয়নি। তার উপরে অটোর সংখ্যা বেড়েছে বহু গুণ। সব মিলিয়ে আর্থিক সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের, এমনই দাবি বাস মালিকদের। ৮-বি রুটে দুর্গাপুর স্টেশন থেকে মুচিপাড়া, বিধাননগর, ইস্পাতনগরীর একাংশ হয়ে বেনাচিতির প্রান্তিকা বাসস্ট্যান্ডগামী বাস চলে মোট ৪৮টি। গড়ে প্রতি ১০-১৫ মিনিটে একটি করে বাস চলে। অটোর সংখ্যা বাড়ায় বাসে যাত্রীর সংখ্যা কমেছে। ফলে কমছে আয়ের পরিমাণও।
বাস মালিকদের অন্যতম সংগঠন ‘দুর্গাপুর প্যাসেঞ্জার ক্যারিয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক কাজল দে-র দাবি, “বাসের ভাড়া বাড়ানোর জন্য বার বার দরবার করছি। পরিবহণ মন্ত্রীর কাছেও গিয়েছি। কিন্তু এখনও বর্ধিত ভাড়ার তালিকা দেয়নি পরিবহণ দফতর। তার উপরে ৮-বি রুটে অটোর দৌরাত্ম্য আগের থেকে বহু গুণ বেড়েছে। সব মিলিয়ে আয় প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। অবিলম্বে বর্ধিত ভাড়া চালু না হলে আর্থিক কারণে শহরের সব রুটেই বাস চলাচল বন্ধ করে দিতে হবে।”
জেলা পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মিনিবাসে প্রথম ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত ভাড়া ৫ টাকা। পরে প্রতি কিলোমিটারে তা বাড়ে ৪৫ পয়সা হারে। ২০০৮ সালে এই ভাড়ার হার চালু হয়। বাস মালিকদের দাবি, তার পর বেশ কয়েক দফা ডিজেলের দাম বেড়েছে। বেড়েছে যন্ত্রাংশের দাম। ভাড়া কিন্তু বাড়েনি। ফলে বাস চালাতে হিমসিম খাচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, সর্বনিম্ন ভাড়া হতে হবে ৬ টাকা এবং তার পরে অতিরিক্ত প্রতি কিলোমিটারে ৫০ পয়সা হারে বাড়াতে হবে। যদিও পরিবহণ দফতর থেকে বর্ধিত ভাড়ার তালিকা এখনও হাতে না পৌঁছনোয় ভাড়ার নতুন হার নিয়ে নিশ্চিত নন বাস মালিকেরা। বাস মালিকেরা জানান, পরিস্থিতি এমন যে সরকারি ভাবে ভাড়ার তালিকা না আসায় এ বার তাঁরা নিজেরাই বর্ধিত হারে ভাড়া নেবেন বলে বাসে বিজ্ঞপ্তি লাগিয়ে দিয়েছেন। তখন পরিবহণ দফতর থেকে তাঁদের কাছে দিন কয়েক সময় চাওয়া হয়। জেলা পরিবহণ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, পাঁচ দিনের মধ্যেই বর্ধিত ভাড়ার তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
এ দিকে, আগাম নোটিস ছাড়াই শনিবার ৮-বি রুটের বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। অনেকে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করে ফিরে যান। অটোয় কোনও মতে যাতায়াত করতে দেখা যায় অনেককে। দুর্গাপুর প্যাসেঞ্জার ক্যারিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজলবাবুর বক্তব্য, “লোকসান হতে হতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় আমাদের এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। যাত্রীদের অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত।” |