|
|
|
|
ভোটে গুজরাত |
মহিলা মহলে জনপ্রিয়
মোদীর শত্রুও দুই মহিলা
দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় • মণিনগর (গুজরাত) |
|
|
মোদী মানে মনের মানুষ।
মোদী বড় কাছের লোক।
মোদী মানে রোল মডেল।
মোদীর নামে যজ্ঞ হয়।
মোদীর নামে জয়ধ্বনি।
মোদী ডাকলে সংসার ফেলে এক পায়ে খাড়া।
গোটা গুজরাত জুড়ে মহিলা মহলে মোদীকে ঘিরে এমনই আবেগ। উচ্ছ্বাস। ভোট আসুক না আসুক, মহিলা মহলে বরাবরই জনপ্রিয় মোদী। তাঁর ঘোরতর বিরোধীরাও কবুল করেন সে কথা। এতটাই যে, গুজরাতে শুধু মহিলারা মিলেই ‘মোদী ফ্যান ক্লাব’ বানিয়ে ফেলেছেন! আর কোনও রাজনৈতিক নেতার ভাগ্যে কি জুটেছে এই সুযোগ?
বলা ভার। দীর্ঘদিন ধরে গুজরাতের যে কোনও ভোটে বুথের সামনে মহিলাদের দীর্ঘ সারিই বলে দেয়, মহিলাদের মধ্যে মোদীর জনপ্রিয়তা কতটা।
অথচ গত এক দশক ধরে রাজনীতির উঠোনের বাইরে মোদীর বিরুদ্ধে যাঁরা সবথেকে বেশি আক্রমণাত্মক হয়েছেন, তাঁরা মহিলাই! তিস্তা শেতলওয়াড় থেকে মল্লিকা সারাভাই বা শবনম হাসমি। মায় অতি সম্প্রতি সুনন্দা পুষ্কর পর্যন্ত।
|
জাগ্রুতি পাণ্ড্য |
|
শ্বেতা ভট্ট |
আর এ বারের ভোটে শুধু মাত্র মোদীর বিরুদ্ধে লড়ার জন্যই রাজনীতির ময়দানে পা রেখেছেন আরও দুই মহিলা। শ্বেতা ভট্ট ও জাগ্রুতি পাণ্ড্য।
মোদী আর মহিলা। রাজনীতির কারবারিরা বলেন, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে মহিলারাই মোদীকে বরাবর প্রাসঙ্গিক করে রেখেছেন।
এ বারেও ভোটেও তার অন্যথা নেই। ভোরের আলো ফুটতেই গুজরাতের রাজপথে মোদী-বধে নেমে পড়ছেন দুই গৃহবধূ। খোলা জিপে বা পায়ে হেঁটে। শ্বেতা আর জাগ্রুতি। দু ’জনের মিল অনেক। দু’জনেই এই প্রথম রাজনীতিতে। তাঁদের স্বামীদের নিয়ে বিতর্কও কম নয়। দুজনেই স্বামীর বিচার চাইছেন। আর দু’জনেরই শত্রু এক নরেন্দ্র মোদী।
“ঠিকই করেছিলাম, লড়তে হলে মোদীর বিরুদ্ধেই লড়ব। তাই তাঁর কেন্দ্রেই দাঁড়িয়েছি,” মণিনগরে প্রচারের ফাঁকে বললেন বরখাস্ত হওয়া আইপিএস অফিসার সঞ্জীব ভট্টের স্ত্রী এবং কংগ্রেস প্রার্থী শ্বেতা, “আমার লড়াই কিন্তু সব মহিলার লড়াই। আমি হারলে সব মহিলার হার।” আবেগ মাখিয়ে মোদীর মহিলা ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরানোর চেষ্টা শ্বেতার। তাঁর লড়াই যাতে সফল হয় সে জন্য মণিনগর থেকে নিজের নতুন
দলের প্রার্থীকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন মোদীর ঘোর বিরোধী কেশুভাই পটেলও।
আর মণিনগরের পাশের কেন্দ্র এলিস ব্রিজে দাঁড়িয়ে কেশুভাইয়ের নতুন দলের প্রার্থী জাগ্রুতি সমর্থন পেয়েছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদেরও। খোদ প্রবীণ তোগাড়িয়া মদত যোগাচ্ছেন মোদীর ঘোষিত শত্রুকে! মোদীর রাজ্যে মোদীকেই চ্যালেঞ্জ?
মোদী জানেন, গত ভোটে কংগ্রেসের বড় নেতা ধিংসা পটেলই তাঁকে হারাতে পারেননি মণিনগরে। ‘নবিস’রা আর কী করবেন? তবু ভোটের মধ্যে এই দুই গৃহবধূকে নিয়ে মাতামাতি! অস্বস্তিতে মোদী। তেড়েফুড়ে আক্রমণও করতে পারছেন না। পাছে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়। পাছে বাড়তি গুরুত্ব পেয়ে যান রাজনীতির এই নতুন কুশীলবেরা। আমদাবাদের বিজেপি দফতরে বসে দলের এক নেতার কথায়, “মহিলাদের বিষয়ে মুখ খুলে পচা শামুকে বারবার মোদীর পা-ও কেটেছে। এই তো কিছু দিন আগে। হিমাচল প্রদেশে প্রচারে গিয়ে শশী তারুরের স্ত্রীকে বললেন, ৫০ কোটি টাকার বান্ধবী! সুনন্দার থেকে পাল্টা জবাব এল, মোদী মহিলাদের সম্মান করতে শিখুন। আর দিগ্বিজয় সিংহ এই ফাঁকে মোদীর ছেলেবেলার স্ত্রীকে নিয়ে কটাক্ষ করে বসলেন!” তার আগে মহিলাদের অপুষ্টি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে সৌন্দর্য সচেতনতার উল্লেখ করেও বিপাকে পড়েছিলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী।
এ বারের গুজরাত ভোটে তাই মহিলাদের তাৎপর্য কিছুটা আলাদা।
মোদী-পন্থী না মোদী-বিরোধী? কোন মহিলারা এ বারের ভোটে এগিয়ে থাকবেন?
পরীক্ষা তাঁদেরও। |
|
|
|
|
|