ত্রিপুরার সভায় তৃণমূল নিয়ে হুঁশিয়ারি দীপার
ত্রিপুরায় বাম শাসনের অবসান চেয়ে পরিবর্তনের স্লোগান তুলল কংগ্রেস। কিন্তু আক্রমণের মূল নিশানায় রইল তৃণমূল। এখানে আজ আস্তাবল ময়দানে প্রদেশ যুব কংগ্রেসের সমাবেশে দীপা দাশমুন্সি আঞ্চলিক দলের উপর ভরসা করার বিপদ সম্পর্কে হুঁশিয়ার করলেন ত্রিপুরার কংগ্রেস নেতা ও কর্মীদের। মানস ভুঁইয়ার বক্তব্যে অবশ্য গুরুত্ব পেয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে বাম দলগুলির দ্বিচারিতা ও ত্রিপুরা-পশ্চিমবঙ্গে তাদের অপশাসনের প্রসঙ্গ।
পশ্চিমবঙ্গে পরিবর্তনের যৌথ ডাক সাফল্য দিয়েছে নির্বাচনে। কিন্তু রাজনীতির বদলে যাওয়া সমীকরণে কী পশ্চিমবঙ্গ, কী ত্রিপুরা, সর্বত্রই এখন রাজনৈতিক জমি দখলের লড়াইয়ে নেমেছে তৃণমূল ও কংগ্রেস। এ দিনের সমাবেশে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দীপা সবিস্তার উল্লেখ করেন, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে জোট বাধায় কংগ্রেসের কী তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে সেই কথা। পাশাপাশি তাঁর সতর্কবার্তা, “আসন্ন নির্বাচনে এ রাজ্যে শুধু সিপিএম-কংগ্রেসের লড়াই হবে, এটা ভেবে নেওয়া ভুল হবে। তলে তলে বিভিন্ন প্রাদেশিক দলের বহু সমীকরণ চলছে। তাই প্রাদেশিক দলের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।”
ত্রিপুরার আস্তাবল ময়দানে প্রদেশ যুব কংগ্রেসের সমাবেশে দীপা দাশমুন্সি। ছবি: উমাশঙ্কর রায়চৌধুরী।
দীপার বক্তব্য, প্রাদেশিক দলগুলি কংগ্রেসের মতো জাতীয় দলের সুযোগ নিয়ে বা নির্বাচনী আঁতাত গড়ে কেন্দ্রে বা কোনও রাজ্যে ক্ষমতায় এলেও বেশি দূর এগোতে পারে না।
খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূলের জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গির অভাব নিয়েও বিঁধতে ছাড়েননি দীপা। তাঁর দাবি, ক্ষমতার স্বাদ পেলে প্রাদেশিক রাজনৈতিক দলগুলির আসল চরিত্র বেরিয়ে পড়ে। মানুষ তাদের চিনতে পারে। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসকে কাজে লাগিয়েছে তৃণমূল। এই তৃণমূলই এক সময় বিজেপি-র সঙ্গে জোট গড়ে পরে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, এখন বিশ্বাসঘাতকতা করেছে কংগ্রেসের সঙ্গে। যদিও মণিপুর, অসম, অরুণাচলে প্রাদেশিক দলগুলি থেকে বিধায়ক ও নেতারা আবার কংগ্রেসে ফিরে এসেছেন।
তৃণমূলকে আক্রমণের পাশাপাশি জাতীয় দল হিসেবে কংগ্রেসের ১২৭ বছরের ভূমিকা থেকে শুরু করে কেন্দ্রের বর্তমান ইউপিএ সরকারের উন্নয়নমুখী প্রয়াসের নানা দিকও তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দীপা। উল্লেখ করেন সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর বিশেষ ভরসার প্রকল্প ভর্তুকি ও ভাতার নগদ হস্তান্তরের কথা। এর বিরোধিতা করায় সিপিএমের কড়া সমালোচনা করেন তিনি।
মানসবাবু এ দিনের সভায় জাতীয় রাজনীতিতে সিপিএমের ভুমিকার তীব্র সমালোচনা করেন। বিজেপি-কে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দিয়েও কী ভাবে তাদের সঙ্গে ও প্রাদেশিক দল তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাম দলগুলি এফডিআই প্রশ্নে সংসদে ইউপিএ সরকারের বিরোধিতা করেছে তা-ও উল্লেখ করেন তিনি। মানসবাবুর কথায়, “সিপিএম রাজনৈতিক সন্ত্রাসবাদী দল, বিজেপি ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদী দল।”
ত্রিপুরায় বামফন্টের অপশাসনের কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি মানসবাবু টানেন নিজ-রাজ্যের প্রসঙ্গও। তাঁর কথায়, “পশ্চিমবঙ্গে জ্যোতি বসু এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচাযের্র আমলে ৫২ হাজার মানুষ খুন হয়েছেন। আর এ রাজ্যে গত ১৯ বছরে খুন হয়েছেন কয়েক হাজার কংগ্রেস কর্মী ও ৬ জন বিধায়ক। ভারতে কোন রাজ্যে এতগুলো বিধায়ক খুন হয়েছেন?” ত্রিপুরায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তুলে মানসবাবু বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছর পরে আমরা মুক্তি পেয়েছি। কেরলেও সিপিএম নেই। বামফ্রন্ট থেকে মুক্তি চাইছে ত্রিপুরাবাসীও।”
দীপা দাশমুন্সিও ত্রিপুরার বামফ্রন্ট সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলেন, ‘‘ত্রিপুরা স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্প সবেতেই পিছিয়ে পড়েছে। বাড়ছে শুধু বেকার। নারী নির্যাতনে দেশের শীর্ষে এই রাজ্য।” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুদীপ রায়বর্মণ বেকার যুবক-যুবতীদের উদ্দেশ্য বলেন, “কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত বেকারদের জন্য বেকার ভাতা দেওয়া হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.