তরাই, ডুয়ার্সের অন্তর্ভুক্তির দাবি |
গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (জিটিএ) তরাই, ডুয়ার্সের অন্তর্ভুক্তির দাবি ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ফ্যাক্স মারফত জানালেন জিটিএ চিফ বিমল গুরুঙ্গ। শুক্রবার দুপুরে দার্জিলিঙের গোর্খা রঙ্গমঞ্চ ভবনে জিটিএ-র বৈঠক হয়। পরে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে দাবিপত্রটি ফ্যাক্স করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। জিটিএ-র চেয়ারম্যান প্রদীপ প্রধান বলেন, “এ দিন সভার সিদ্ধান্ত আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। তাতে তরাই ও ডুয়ার্সের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি রয়েছে। এ ছাড়া লেপচাদের জন্য আলাদা উন্নয়ন পর্ষদকে জিটিএ-র অধীনে রাখার জন্য বলা হয়েছে। আমাদের আশা, বিষয়গুলি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে।” জিটিএ সূত্রের খবর, সম্প্রতি রাজ্য মন্ত্রিসভায় পাহাড়ের বহু পুরোনো আদিবাসী লেপচাদের দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে আলাদা উন্নয়ন পর্ষদ তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মোর্চা বাদে পাহাড়ের অন্য দলগুলি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও মোর্চা নেতারা কাগজপত্র না দেখে মন্তব্য করতে রাজি হননি। লেপচাদের জন্য একেবারেই আলাদা উন্নয়ন পর্ষদের বিষয়টি পরিস্কার হতেই এ দিনের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। জিটিএ অধীনে না রেখে আলাদা উন্নয়ন পর্ষদ গঠনের ঘটনা অনেক মোর্চা নেতা মেনে নিতে পারেনি। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রীকে লেপচা উন্নয়ন পর্ষদকে জিটিএতে রাখার দাবি জানানোর সিদ্ধান্ত হয়।
পাশাপাশি, রাজ্যের উপর চাপ বাড়াতে তরাই এবং ডুয়ার্সের অন্তর্ভুক্তির দাবি ফের তোলা হয়েছে বলে পাহাড়ের রাজনৈতিক মহল মনে করছে। সরকারি সূত্রে খবর, ২০১১ সালের জুলাই মাসে জিটিএ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই সময় মোর্চার তরফে পাহাড়ের তিন মহকুমা ছাড়া তরাই ও ডুয়ার্সের ৩৯৮টি মৌজার দাবি জানানো হয়। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্যামল সেনের নেতৃত্বে একটি হাই পাওয়ার কমিটি গঠিত হয়। এর মধ্যে তরাই এবং ডুয়ার্সের এলাকা ছাড়া জিটিএ ভোট করানোর সিদ্ধান্ত হয়। শ্যামল সেনের কমিটি জিটিএতে কেবলমাত্র ৫টি মৌজার অন্তর্ভুক্তির কথা বলে। মোর্চা নেতারা রিপোর্ট প্রত্যাখান করে মুখ্যমন্ত্রী’র দ্বারস্থ হন। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ঠিক হয়, তিন সদস্যের একটি ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি’ গড়া হবে। যার রিপোর্ট এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। জিটিএ-র চেয়ারম্যান বলেছেন, “আমরা প্রথম থেকেই তরাই ও ডুয়ার্সের জিটিএতে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়ে আসছি। এটা নতুন কিছু নয়। নতুন করে সেই দাবিই মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে।” চেয়ারম্যান জানান, নেপালিকে জিটিএ এলাকার সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, ৭০ বছরের ঊর্ধ্বে প্রবীণ নাগরিকেরা যাঁরা বার্ধক্য ভাতা পান না, তাঁদের ৫০০ টাকা করে মাসে ভাতা দেওয়া হবে। জিটিএ চিফ বিমল গুরুঙ্গ খুব দ্রুত দিল্লি যাবেন। সেখানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করে তিনি গোর্খাল্যান্ড পার্সোনেল বা জিএলপি সদস্যদের আধা সামরিক বাহিনী এবং পুলিশে চাকরির ব্যবস্থার দাবি জানাবেন। |