|
|
|
|
অবহেলিতই লোধা-শবরেরা, স্মারকলিপি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
জঙ্গলমহলের আদিম জনজাতিভুক্ত লোধা-শবরেরা এখনও অবহেলিত। প্রশাসনিক মহলে স্মারকলিপি দিয়ে সম্প্রতি এই অভিযোগ করেছে মেদিনীপুর লোধা-শবর কল্যাণ সমিতি। সমিতি’র ঝাড়গ্রাম মহকুমা সম্পাদক তারাপদ মল্লিকের অভিযোগ, “অনগ্রসর আদিম জনগোষ্ঠীর জঙ্গলজীবী লোধা-শবর সম্প্রদায়ের জন্য সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পগুলি যথাযথ ভাবে রূপায়িত হচ্ছে না। উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠক বন্ধ। জনশ্রী বিমা যোজনার পুনর্নবীকরণ হচ্ছে না।” লোধাদের জন্য বাড়ি তৈরির কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা, পাট্টা দান-সহ আরও বেশ কিছু দাবি জানানো হয়েছে সংগঠনের তরফে। দাবিগুলি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক বাসব বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুর লোধা-শবর কল্যাণ সমিতির জেলা সম্পাদক বলাইচন্দ্র নায়েক বলেন, “দাবিগুলি কার্যকর না-হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।”
ঝাড়গ্রাম মহকুমার ৮টি ব্লকের ২৩১টি গ্রামে ৫,২০৬টি লোধা-শবর পরিবারের বসবাস। জনসংখ্যা প্রায় কুড়ি হাজার। মেদিনীপুর লোধা-শবর কল্যাণ সমিতির দাবি, আগে প্রতি মাসের ২০ তারিখ মহকুমাশাসকের দফতরে লোধা-শবরদের উন্নয়ন সংক্রান্ত এক প্রশাসনিক বৈঠক হত। প্রশাসনিক আধিকারিকদের পাশাপাশি লোধা-শবর সংগঠনের প্রতিনিধিদেরও ওই বৈঠকে ডাকা হত। বাম জমানায় নিয়মিত ওই বৈঠকের ব্যবস্থা করা হলেও লোধা-শবর কল্যাণ সমিতি’র ক্ষেত্র-সমীক্ষার তথ্যকে সেই ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আর এখন সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর বৈঠকটিই আর হচ্ছে না। তারাপদবাবুর আরও অভিযোগ, দরিদ্র লোধা-শবরদের জন্য আগের সরকারের চালু করা ‘জনশ্রী বিমা যোজনা’টি পুনর্নবীকরণ করা হচ্ছে না। ২০০৪ সালে বেলপাহাড়ির আমলাশোলে অনাহার ও অপুষ্টিতে ৪ শবর-সহ পাঁচ জনের মৃত্যুর পরে ২০০৫-০৬ সালে কেবলমাত্র লোধা-শবরদের জন্য জনশ্রী বিমা যোজনা চালু করা হয়েছিল। বিমার আওতায় থাকা ব্যক্তির স্বাভাবিক কিংবা দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু হলে উত্তরাধিকারীরা এককালীন কয়েক হাজার টাকা পেতেন। ওই বিমার মেয়াদ ছিল পাঁচ বছর। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন করে আর বিমা প্রকল্পটি চালু করা হয়নি। অন্ত্যোদয় অন্নযোজনা প্রকল্পে পরিবারের সদস্য সংখ্যা পাঁচের বেশি হলে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি করেছে লোধা-শবর কল্যাণ সমিতি। এ ছাড়াও শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি, লোধা-শবরদের একশো দিনের প্রকল্পে নিয়মিত কাজ ও এক সপ্তাহের মধ্যে মজুরি দেওয়ার দাবি করা হয়েছে। লোধা-শবরদের জাতিগত শংসাপত্র প্রদানের পদ্ধতি সরলীকরণ করার দাবি জানিয়েছেন তারাপদবাবুরা। বছর তিনেক আগে ‘আমার বাড়ি প্রকল্পে’ ঝাড়গ্রাম মহকুমায় লোধাদের জন্য চারশোটি পাকা বাড়ি তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয়। এখনও বেশ কিছু বাড়ি তৈরির কাজ বাকি রয়েছে। অবিলম্বে ওই বাড়িগুলি তৈরির দাবি করেছে লোধা-শবর কল্যাণ সমিতি। শতাধিক লোধা-শবর পরিবার আবেদন করেও বনভূমির পাট্টা পাননি বলে অভিযোগ তারাপদবাবুর। |
|
|
|
|
|