দক্ষিণ কলকাতা
ধোবিখানা
শুকনো পাথর
ল পাবে না কাচতে!
দক্ষিণ কলকাতার রিচি রোডের সাউথ ধোবিখানার ধোপারা কাপড় কাচার জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ জল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। মূলত গোটা দক্ষিণ কলকাতার বাড়ির ও হোটেলের কাপড়জামা এই ধোবিখানায় কাচা হয়। সমস্যার সমাধানে ধোপাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছেন পুরকর্তৃপক্ষ।
কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সমস্যাটি শুনেছি। তবে কেউ লিখিত জানাননি। জল সরবরাহ বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে যা করার করব।”
সমস্যা কোথায়?
পুরসভা-সূত্রে জানা গিয়েছে, পুর স্বাস্থ্য দফতরের আওতাভুক্ত এই ধোবিখানায় বহু দিন ধরেই অকল্যান্ড বুস্টার পাম্পিং স্টেশন থেকে পানীয় জল এবং কাপড় কাচার জল সরবরাহ করা হয়। সম্প্রতি জলের চাপ কম থাকায় এখানে সরবরাহ কমে গিয়েছে। অবশ্য, জল সরবরাহ বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল বিভাস মাইতি বলেন, “টালার জলাধার থেকেই জল অকল্যান্ড বুস্টার পাম্পিং স্টেশন হয়ে এই এলাকায় দিনে দু’বার যায়। জলের চাপ কমে গেলে গোটা এলাকা থেকেই অভিযোগ আসত। আমি তেমন কোনও অভিযোগ পাইনি। তবে প্রযুক্তিগত কারণে ধোবিখানার পাইপে কোনও গণ্ডগোল থাকলে পাইপ পাল্টানো বা বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবা যায়। এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।”
দক্ষিণ কলকাতার জল সরবরাহ বিভাগের এক ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক জানান, রিচি রোডে পুরসভার এই ধোবিখানা মূল রাস্তা থেকে খানিকটা ভেতরে। পুরকর্মীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন পানীয় জলের কল থেকে সরবরাহ স্বাভাবিক। কাপড় কাচার জল সরবরাহের পাইপ পাল্টালেই সমাধান হবে না। কারণ, এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি কাপড় কাচা হচ্ছে। বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবা হচ্ছে। স্থানীয় কাউন্সিলর তৃণমূলের অনীতা বসু বলেন, “জলের চাপ কম ঠিকই। তবে জলের হাহাকার নেই। চাপ কম থাকায় কিছু ঘাটতি আছে। বিকল্প নিয়ে পুরকর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।”
পুরসভা-সূত্রের খবর, কাপড় কাচার জলের জন্য এখানে একটি নলকূপ বসানোর সিদ্ধান্ত অনেক দিন আগেই নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ধোপারাই আপত্তি জানান, কারণ নলকূপের জলে কাচলে সাদা কাপড়ে দাগ হয়। পাশাপাশি, এখানকার পরিকাঠামোও বেহাল বলে ধোবিখানার অনেকের অভিযোগ। জল গরম করার উনুনগুলির বেশির ভাগই ভাঙা। ইস্ত্রি করার জন্য লন্ড্রিও নেই। দক্ষিণ কলকাতা ধোবিখানা রজক সঙ্ঘের সভাপতি সন্টু চৌধুরী বলেন, “এখানে মূল সমস্যা জলের। পুরসভার আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। স্থানীয় কাউন্সলিরকেও জানিয়েছি। কোনও কাজ হয়নি।” পুর স্বাস্থ্য দফতরের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ বলেন, “দ্রুত এই বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসব।”

ইতিবৃত্ত
১৯০২-এ সাহেবদের জামাকাপড় কাচার জন্য তৎকালীন পুর-কর্তৃপক্ষ রিচি রোডে প্রায় ২২ বিঘা জমিতে এটি তৈরি করান। এখানে কাপড় কাচার জন্য মোট ১৮০টি পাথর রয়েছে। পাথর-পিছু ভাড়া মাসিক ২০০ টাকা। পুরসভা এই ভাড়া নেয়।
ছবি: বিশ্বনাথ বণিক




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.