দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
রুদ্ধ নিকাশি
মশার আঁতুড়
শীত এলেই বাড়ে মশা-মাছি, পোকামাকড়ের উপদ্রব। আর বর্ষাকালে জমে থাকা জল বাড়িয়ে তোলে বাসিন্দাদের দুর্ভোগ। অভিযোগ, আজ পর্যন্ত কোনও উপযুক্ত নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় গড়িয়া, বোড়াল, বনহুগলি, রানিয়া এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দাকে সারা বছর এ ভাবেই জেরবার হতে হয়। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বার বার বিভিন্ন মহলে আবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি।
বিস্তীর্ণ ওই এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা টলিনালা, রেনিয়া খাল এবং অভ্যন্তরীণ কিছু সরু খাল ও খোলা নর্দমার উপরে নির্ভরশীল। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই এলাকায় এখনও কাঁচা এবং খোলা নর্দমা রয়ে গিয়েছে। দীর্ঘ দিন ওই সব নিকাশিপথগুলির সংস্কার হয়নি। নিয়মিত পরিষ্কারও করা হয় না বলে অভিযোগ। ফলে মশা-মাছির উপদ্রব বেড়েই চলেছে।
এলাকায় ঘুরে দেখা গেল, গড়িয়া ব্রিজের নীচ দিয়ে বয়ে যাওয়া টলিনালার উপরে কুকুর চরে বেড়াচ্ছে। আবর্জনা, প্লাস্টিকে রুদ্ধ নালা। স্থানীয় বাসিন্দা রণজিৎ গুহ বলেন, “এই এলাকার সমস্ত বাজার, দোকান ও হোটেলের আবর্জনা জমা হয় টলিনালায়। এর জেরে রুদ্ধ ওই নিকাশিপথ এখন মশা-মাছির আঁতুড়।” রেনিয়া খালেরও সংস্কার হয়নি দীর্ঘ দিন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, খাল-সংলগ্ন এলাকার অনেক অংশ দখল হয়ে গিয়েছে। নিকাশিপথের উপরেই গজিয়ে উঠেছে বাড়ি। বোড়াল এবং বনহুগলি এলাকার নিকাশিপথের অবস্থাও একই রকম।
কলকাতা পুরসভার ১১১ নম্বর ওয়ার্ড এবং রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকাগুলির বাসিন্দারা জানান, মশা এবং পোকামাকড়ের উপদ্রবে অধিকাংশ সময়েই দরজা-জানলা বন্ধ রাখতে হয়, দিনেও মশারি লাগে। এমনকী, ওই সব এলাকায় মশা মারার কীটনাশকও নিয়মিত ছড়ানো হয় না বলে অভিযোগ। মশাবাহিত রোগের প্রকোপও সারা বছর লেগে থাকে। ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের বক্তব্য: পুরসভা অনেক বার উন্নত মানের নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু কিছুই হয়নি। ফলে আর কোনও আশ্বাসে আস্থা রাখতে পারছেন না তাঁরা।
১১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিএমের চয়ন ভট্টাচার্য বলেন, “বিস্তীর্ণ এলাকার কিছু অংশ রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার মধ্যেও রয়েছে। কেইআইপির দ্বিতীয় প্রকল্পের কাজ শুরু হলেই ওই এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা উন্নত হবে। আশা করছি খুব শীঘ্রই এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।” রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কংগ্রেসের তপেশ ধর বলেন, “কলকাতা-লাগোয়া আমাদের পুর-এলাকার কিছু অঞ্চলে নিকাশির সমস্যা রয়েছে। সে কথা উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) রাজীব দেব বলেন, “ওই এলাকায় আমাদের কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেচ দফতর এবং লাগোয়া পুরসভার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।”

ছবি: সুব্রত রায়




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.