উত্তর কলকাতা
মিড ডে মিল
অভুক্ত পড়ুয়া
গ্যাস সিলিন্ডারের দাম বেড়েছে। হয়নি বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা। অভিযোগ, এ কারণে কামারহাটি ও দক্ষিণ দমদম পুর এলাকার বেশ কিছু স্কুলে মিড ডে মিলের রান্না বন্ধ রয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, প্রশাসনকে বার বার জানিয়েও লাভ হয়নি। যদিও বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ।
মিড ডে মিলে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের জন্য মাথাপিছু দৈনিক ১০০ গ্রাম চাল বরাদ্দ করা থাকে। ডাল, আনাজপাতি, মশলা, জ্বালানির জন্য মাথা পিছু ৩ টাকা ৩৩ পয়সা বরাদ্দ হয়। অভিযোগ, গ্যাসের দাম বাড়ায় এই খরচের মধ্যে রান্না করা সম্ভব হচ্ছে না।
এর ফলে রান্নার জন্য বরাদ্দ চাল, ডাল পড়ে নষ্ট হচ্ছে। মিড ডে মিলের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ করা অর্থ জেলাশাসকের দফতর হয়ে পুরসভায় পৌঁছয়। এর পরে তা যায় স্কুলগুলিতে।
কামারহাটি পুরসভা সূত্রের খবর, পুর এলাকার স্কুলগুলিতে গ্যাসেই মিড ডে মিলের রান্না হত। কিন্তু সিলিন্ডারের দাম বেড়ে যাওয়া ৯০টি প্রাথমিক স্কুলে মিড ডে মিল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বেকার হয়ে পড়েছেন রান্নার দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রায় সাড়ে চারশো মহিলা। অসুবিধায় পড়েছে পড়ুয়ারাও। একই অবস্থা দক্ষিণ দমদম পুর এলাকাতেও। দক্ষিণ দমদম পুরসভা সূত্রের খবর, ৩৩টি স্কুলে মিড ডে মিল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ঋষি অরবিন্দ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং কামারহাটি পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের সমীরণ দাস বলেন, “দরিদ্র পড়ুয়াদের পুষ্টির অভাব হচ্ছে। স্কুলে অনুপস্থিতি বাড়ছে। এ ভাবে চললে সর্বশিক্ষার উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে।”
দক্ষিণ দমদমের পুরপ্রধান তৃণমূলের অঞ্জনা রক্ষিত বলেন, “যাঁরা কাঠে রান্না করতেন তাঁদের রান্না বন্ধ হয়নি। যাঁরা গ্যাসে রান্না করতেন তাঁদের রান্না বন্ধ রয়েছে। কী করা যায় দেখছি।” কামারহাটির পুরপ্রধান সিপিএমের তমাল দে বলেন, “সপ্তাহে প্রতিটি স্কুলে ৩-৪টি সিলিন্ডার লাগে। আমাদের পক্ষে চালানো সম্ভব হচ্ছে না। আমরা অসহায়। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বহু মহিলা বেকার হয়ে পড়েছেন। বার বার জানিয়েও লাভ হয়নি।”
যদিও উত্তর ২৪ পরগনার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারপার্সন মীনা ঘোষের দাবি, “কামারহাটি পুর এলাকায় মিড ডে মিল বন্ধ হওয়ার কোনও খবর আসেনি।” তবে উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ট্রেজারি) পার্থ ঘোষ বলেন, “সমস্যার কথা জানি। এ বিষয়ে পুরসভাগুলির সঙ্গে কথা বলছি।”

—নিজস্ব চিত্র




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.