ঝড়ের শেষে এখন শান্তির খোঁজে বাংলা
ব্লিউ ভি রামন নন। লক্ষ্মীরতন শুক্ল নন। টিম ম্যানেজমেন্টেরই কেউ নন।
বিতর্কবিদ্ধ বাংলা শিবিরে শান্তি ফেরাতে এ বার মাঠে নামতে হল খোদ সিএবি প্রেসিডেন্টকে। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলে’ সেই জগমোহন ডালমিয়া!
কী রকম?
শুক্রবার ইডেনে সবে শেষ হয়েছে বাংলা প্র্যাক্টিস। কিন্তু লক্ষ্মীরতন-ঋদ্ধিমানরা কিট গুছিয়ে বাড়ি ফেরার আগে ঢুকে পড়লেন সিএবি-র লাঞ্চ রুমে। সিএবি প্রেসিডেন্ট ডেকেছেন। টিমের সঙ্গে ডাকা হল নির্বাচক কমিটির প্রধান দীপ দাশগুপ্তকেও। পরের ঝাড়া এক ঘণ্টায় টিমকে ‘ভোকাল টনিক’ দেওয়া থেকে দল নির্বাচনী বৈঠকসিএবি প্রেসিডেন্ট সবই করলেন একে একে।
ক্রিকেটারদের দু’টো বার্তা দেওয়া হল। এক, বাংলার জার্সি কেউ জন্মেই পায় না। অর্জন করতে হয়। দুই, হারের ধ্বংসস্তুপ থেকে জয়ের জীবনস্রোতে ফেরার অতীত রেকর্ডটা দেখে নেওয়া। ডালমিয়া বলেন, বাংলা ক্রিকেটে এমন বিপর্যয় আগেও ঘটেছে। কিন্তু সে সব কাটিয়ে টিম ফিরেও এসেছে। দরকার শুধু একাত্মবোধের। টিমের প্রতি ক্রিকেটারদের দায়বদ্ধতার। দীপও বলে ফেলেন, “আর কিছু নয়, টিম স্পিরিটটা ফেরাও।” যা শুনে নতুন অধিনায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্ল কথা দেন, টিমকে একেবারে অন্য চেহারায় পেশ করবেন। পরে বলছিলেন, “আমার কাছে এ রকম চ্যালেঞ্জ নতুন নাকি? এলিট থেকে বাংলাকে প্লেটে তুলেছি। জানি, কঠিন সময়ের মোকাবিলা কী ভাবে করতে হয়।”
রামন-লক্ষ্মী নতুন রসায়ন জমবে কি? —নিজস্ব চিত্র
মোকাবিলা করার জন্যই প্রথম পনেরোর ধারেকাছে না থাকা অলরাউন্ডার সায়নশেখর মণ্ডলকে ফিরিয়ে এনেছেন লক্ষ্মী। হায়দরাবাদ ম্যাচে খেলাচ্ছেনও। দেবব্রত দাসকে সৌরাষ্ট্র ম্যাচে তিনে পাঠানো নিয়ে বিতর্ক বেঁধেছিল। দেবব্রত এ বার সাতে। অরিন্দম দাস, রোহন বন্দ্যাপাধায়, অভিষেক ঝুনঝুনওয়ালা, ঋদ্ধিমান সাহা, লক্ষ্মীর পরে। অর্থাৎ, ঠিকঠাক ব্যাটিং অর্ডার। ম্যাচের জন্য বেছে নিয়েছেন বাংলা-রাজস্থান ম্যাচের পিচকে। মানে, সেই পেস, সেই বাউন্সের গল্প। “আমাদের শক্তি তো পেস বোলিং। তা হলে ফায়দা নেব না কেন?” পাল্টা প্রশ্ন লক্ষ্মীর। পেস ব্যাটারিতে বারুদ ঠাসাও শেষ। সামি আহমেদের সঙ্গে বীরপ্রতাপ সিংহ। সঙ্গী সায়নশেখর ও লক্ষ্মী নিজে।
সব মিলিয়ে পরিবেশটা এমন, যেন ঝড়ের শেষে শান্তির খোঁজ। কিন্তু তার মধ্যেও কোচ ডব্লিউ ভি রামনের সঙ্গেই লাগল সিএবি কর্তাদের!
ছ’ম্যাচে কপালে সাত পয়েন্ট জুটলে কারওরই মন-মেজাজ ভাল থাকে না। রামনেরও নেই। গ্রুপ টেবিলে টিম ঠোক্কর খাচ্ছে সাত নম্বরে, আগামী দু’ম্যাচে ভাগ্য না ফিরলে চাকরি নিয়ে টানাটানি আরও বাড়বে তা রামনও জানেন। আর সাফাইয়ের খোঁজেই কি না জানা নেই, বাংলা কোচ এমন দু’টো কথা বলে বসলেন যা গত দু’বছরে তাঁর মুখে বিশেষ শোনা যায়নি।
বাংলা ডুবছে কারণ স্থানীয় ক্রিকেটের মান ভাল নয়। স্লিপ ক্যাচিংয়ের অভ্যেস নেই ক্রিকেটারদের। কারণ ক্লাব ক্রিকেটে সেই অভ্যেসের চলটাই নেই!
চার দিনের ম্যাচে ক্রিকেটারদের মনোসংযোগ ঠিকঠাক হচ্ছে না। কেন? নেপথ্যে, সেই ক্লাব ক্রিকেট। সেই অভ্যেসের অভাব।
আর বাংলা ক্রিকেটে তাঁর নিজের ভবিষ্যৎ? অশোক মলহোত্রের মতো প্রাক্তন বাংলা অধিনায়করা তো ‘রামন হঠাও’ হুঙ্কার ছাড়ছেন!
শুনে সোজা স্টেপআউট, “ডব্লিউ ভি রামন মনে করে, তার আশেপাশের লোকগুলোর পরিণতিবোধ তার মতো নয়। আরে ভাই, এটাই তো দুনিয়া। এ রকম কথাবার্তা না বললে, দুনিয়াটা কি আর রঙিন থাকত?”
উপস্থিত মিডিয়া বিস্ময়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট। সিএবি-র উচ্চপদস্থ কর্তারা হা।ঁ এক জন তো বলেও ফেললেন, “ক্লাব ক্রিকেট কোথা থেকে এল বুঝলাম না। ’৯০-এ যখন রঞ্জি জিতেছিলাম, তখন তো এই ক্লাব ক্রিকেটই ছিল!”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.