দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংগ্রামপুরে ‘বিষমদ কাণ্ড’ ঘটে যাওয়ার পর নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আধিকাংশ চোলাই মদের ঠেক ভেঙে ফেলা হয়েছে। এমনটাই দাবি বীরভূম জেলা প্রশাসনের। জেলা আবগারি সুপার অসীম রায় বলেন, “সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যেও বে-আইনি মদের কারবার রুখতে যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হয়।”
কিন্তু বাস্তব চিত্র বলছে অন্য কথা। জেলার রামপুরহাট, নলহাটি, লাভপুর, ময়ূরেশ্বর, খয়রাশোল, দুবরাজপুর— সর্বত্রই চলছে এই বেআইনি মদের কারবার। চোলাইয়ের ঠেক, নিত্য নতুন গজিয়ে ওঠা বেআইনি মদের ঠেককোনও কিছুতেই খুব একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি বলে জানাচ্ছেন এলাকার মানুষ। তা সেটা রামপুরহাটের বামনিগ্রাম, কালীসড়াপাড়া, চাপলামাঠ বা নলহাটির সুলতানপুর, খয়রাশোলের ভবানীগঞ্জই হোক বা ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়া কোথাও ছেদ পড়েনি বেআইনি মদের কারবার। লুকিয়ে ঘরের কোনে চলছে এই ব্যবসা।
অনেক সময় অন্য গ্রাম থেকে এনে বিক্রিও করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু এলাকার বাসিন্দা বলেন, “বেআইনি মদ ওষুধের লেবেল সাঁটা শিশিতে ভরে এবং বিদেশি মদের সঙ্গে দেশি মদ মিশিয়ে বিদেশি মদের বোতলে ভরে নতুন ছিপি লাগিয়ে উঁচু দামে বিক্রি হচ্ছে।” আবগারি ও পুলিশের প্রচ্ছন্ন মদতেই এই ব্যবসা চলছে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
বেআইনি মদের কারবার যে চলছে, সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন জেলার এক আবগারি কর্তা। তাঁর কথায়, “প্রথমত চোলাই মদের ঠেক ভেঙে দিলেও সেই ঠেক পুনরায় তৈরি করতে সময় লাগে মাত্র একদিন। আনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, যাঁরা এর ব্যবসা করছেন তাঁরা হয় বিশেষ কোনও রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় রয়েছেন। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া একটু সমস্যার। দ্বিতীয়ত—সামাজিক ভাবে বেআইনি মদ বিক্রেতার বিরুদ্ধে খুব একটা অভিযোগ থাকে না বা থাকলেও কেউ সররাচর এগিয়ে এসে প্রতিবাদ করেন না। তা ছাড়, এই অবৈধ কারবার রুখতে গেলে যে পরিমাণ কর্মী প্রয়োজন তা নেই। খালি রয়েছে অনেক পদও।” |