ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক সংস্থা খুলে মালদহে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে পালানোর অভিযোগে দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে দু’জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বুধবার রাতে ভাঙড়ের ভাটনগর থানার চন্দনেশ্বর থেকে ওই দু’জনকে ধরা হয়। ধৃতরা সম্পর্কে বাবা ও ছেলে। তাঁদের নাম ইউনিস আলি মোল্লা ও ইকবাল আলি মোল্লা। ঘটনাচক্রে, ধৃত ইউনিস আলি মোল্লা হলেন তৃণমূলের ভাঙড় (১)-এর অঞ্চল সভাপতি।
বৃহস্পতিবার মালদহ আদালত ধৃতদের চার দিন পুলিশি হাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “ওই সংস্থার এক এজেন্ট অভিযোগ জানান, তাঁর ১২ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন ওই দুই ব্যক্তি।” প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ২০১০ থেকে কালিয়াচকের বালিয়াডাঙার ঋষিপাড়ায় ‘বর্তমান প্রজেক্ট লিমিটেড’ নামে ওই সংস্থার অফিস খোলেন বাবা ইউনিস ও ছেলে ইকবাল। দেড় বছরে দ্বিগুণ টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমানত সংগ্রহ করা হয়। পুলিশের অনুমান, অন্তত ৫০০ আমানতকারীর থেকে প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা আদায় করেছে সংস্থাটি। গত বছর জুলাই মাস নাগাদ অফিসে তালা ঝুলিয়ে বাবা-ছেলে পালিয়ে যান। অভিযোগকারী এজেন্ট সাদেক আলি বলেন, “কালিয়াচকে আমরা ৬০-৭০ জন এজেন্ট ওই সংস্থার হয়ে কাজ করতাম। তিন মাসে আমানতকারীদের থেকে ১২ লক্ষ টাকা তুলে জমা দিই। এক দিন দেখি অফিস বন্ধ। আমানতকারীরা আমার বাড়িতে হামলা শুরু করেন। কিছুতেই বোঝাতে পারছিলাম না, তাঁদের টাকা আমার কাছে নেই। পুলিশের কাছে অভিযোগ করি।”
ভাঙড় এলাকার বাসিন্দারা জানান, ধৃতদের বাঘা যতীন ও ধর্মতলায় দু’টি অফিস রয়েছে। বর্তমানে সেগুলি বন্ধ। মালদহ ও তার আশপাশের এলাকা থেকে মাঝে মাঝেই বেশ কিছু লোক ধৃতদের সঙ্গে দেখা করতে যেতেন। সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী বলেন, “তৃণমূলের এক দল সন্ত্রাস চালাচ্ছেন। আর এক দল আর্থিক সংস্থার মাধ্যমে গরিবের টাকা আত্মসাৎ করছেন।” জেলা তৃণমূলের ভাইস চেয়ারম্যান শক্তি মণ্ডল বলেন, “ইউনিস আলি মোল্লা তৃণমূলের সক্রিয় সমর্থক হলেও এখন দলের কোনও পদে নেই।”
তৃণমূলের খবর, এ দিন ভাঙড়ের তৃণমূলের এক ব্লক নেতা মালদহে পৌঁছন। আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে এক তৃণমূল নেতা জানান, দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত দল ইউনিসের পাশে থাকতেই পারে। ইউনিসের গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এড়িয়ে গিয়েছেন ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। তিনি শুধু বলেন, “চার দিকে অনেক কিছু হচ্ছে। কোনও মন্তব্য করতে চাই না।” ঘটনার কথা শুনেছেন তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। তিনি বলেন, “বিশদে খোঁজখবর নিয়েই মন্তব্য করব।” |