এবিজি-কে যন্ত্র সরানোর অনুমতি হাইকোর্টের
হলদিয়ায় সমস্ত বার্থ থেকেই রয়্যালটি নেবে বন্দর
বিজি-কাণ্ডের ধাক্কায় এ বার রয়্যালটি দিতে বাধ্য হচ্ছে হলদিয়া বন্দরের ৮টি বার্থের দায়িত্বে থাকা পণ্য খালাসকারী সংস্থাগুলি।
বৃহস্পতিবার কলকাতা বন্দরের অছি পরিষদের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, এই সংস্থাগুলির কাছ থেকে টন-পিছু ২৫ টাকা রয়্যালটি নেওয়া হবে। এখানেই না-থেমে ভবিষ্যতে সমস্ত বার্থের বরাত দেওয়ার ক্ষেত্রেই নিলাম-নীতি গ্রহণ করা হবে বলে বন্দর সূত্রে খবর।
বিশ্ব টেন্ডারে অংশ নিয়ে হলদিয়া বন্দরের ২ ও ৮ নম্বর বার্থের দায়িত্বে আসা এবিজি, বন্দর কর্তৃপক্ষকে টন-পিছু ১০৬ টাকা করে দিত। কিন্তু বাকি বার্থগুলির দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলি বন্দরের জমিতে ব্যবসা করে মোটা মুনাফা করলেও কোনও রাজস্ব দিত না। এবিজি হলদিয়া ছেড়ে বিদায় নিতে বাধ্য হওয়ার পরে যে বিতর্কের ঝড় ওঠে, তার অন্যতম প্রশ্ন ছিল, অন্য বার্থগুলির পণ্য খালাসকারী সংস্থারা রাজস্ব দেবে না কেন? সেই সমালোচনার মুখে পড়ে এ বার রাজস্ব আদায়ের পথে হাঁটলেন বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দরের এক মুখপাত্র এ দিন জানান, আপাতত প্রতি টনে ২৫ টাকা রয়্যালটি আদায় করা হলেও ভবিষ্যতে প্রতিটি বার্থেই পণ্য খালাসের বরাত দিতে নিলাম-নীতি গ্রহণ করা হবে। হলদিয়া বন্দরের শিপিং ম্যানেজারকে মাথায় রেখে অছি পরিষদ একটি কমিটি তৈরি করে দিয়েছে। সেই কমিটি হলদিয়া ও কলকাতা বন্দরের বার্থ-ভিত্তিক পণ্য খালাসের নিলাম-নীতি ঠিক করে দেবে। একই সঙ্গে পণ্য খালাসকারী সংস্থাগুলি যাতে আমদানি-রফতানিকারীদের কাছ থেকে যেমন খুশি টাকা নিতে না পারে, সে জন্য পণ্য খালাসের দর বেঁধে দেওয়ার ব্যাপারেও উদ্যোগী হবেন বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এবিজি চলে যাওয়ার ধাক্কায় বন্দরের আর্থিক ক্ষতির যে চেহারা গত ২৯ নভেম্বরের বোর্ড মিটিংয়ে পেশ হয়েছিল, এ দিন অছি পরিষদের বৈঠকে তা আমূল পাল্টে ফেলা হয়েছে বলেও বন্দর সূত্রের খবর। আগের বৈঠকে চলতি আর্থিক বছরে মাত্র ৯ কোটি টাকা মুনাফা হবে বলে জানানো হলেও এ দিন পেশ করা বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়েছে লাভ হবে ৩১.১২ কোটি টাকা। পাশাপাশি আগামী আর্থিক বছরে বন্দরের ৩৯ কোটি টাকা লোকসান হবে বলে আগের বৈঠকে জানানো হলেও, এ দিনের বৈঠকে বলা হয়েছে ২৫.৪২ কোটি টাকা লাভ হবে।
বন্দরের এক কর্তার সহাস্য মন্তব্য, “বন্দরের বাজেটও যেন ছিল রুমাল, হয়ে গেল বেড়াল।” তবে এই হিসেবেও এবিজি-বিদায়ের ধাক্কা সামলানো যায়নি। গত আর্থিক বছরে বন্দর ১৩৮ কোটি টাকা লাভ করেছিল। যদিও বন্দরের মুখপাত্রের দাবি, সামগ্রিক ভাবে জাহাজ আসা কমে যাওয়ার ফলেই লাভের পরিমাণ কমেছে। এর সঙ্গে এবিজি-র চলে যাওয়ার কোনও সর্ম্পক নেই।
এ দিনই হলদিয়া বন্দরে এবিজি-র পড়ে থাকা সমস্ত যন্ত্রপাতি ও ক্রেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ সরিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন বলে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। স্পেশ্যাল অফিসারের তত্ত্বাবধানে হলদিয়া বন্দর থেকে তাদের যন্ত্রপাতি অন্যত্র নিয়ে গিয়ে ব্যবহার করতে চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছিল এবিজি। এই ব্যাপারে বন্দর-কর্তৃপক্ষের মতামত জানতে চায় আদালত। বন্দর-কর্তৃপক্ষ বুধবারই জানিয়েছিলেন, তাঁরা স্পেশ্যাল অফিসারের তত্ত্বাবধানে এবিজি-র যন্ত্রপাতি বার্থ থেকে সরিয়ে অন্যত্র রাখবেন। এবিজি-র যুক্তি ছিল, ক্ষতিপূরণের মামলা মিটতে সময় লাগতে পারে। তত দিনে যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাবে।
বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন তাঁর রায়ে বলেন, এবিজি ওই সমস্ত যন্ত্র হলদিয়া বন্দর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারবে। এই রায়ের বিরুদ্ধে আগামী সপ্তাহেই হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানাবে বন্দর।
এবিজি-র সিইও গুরপ্রীত মালহি বলেন, “কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে আমরা খুশি। আদালত নিযুক্ত স্পেশ্যাল অফিসারের উপস্থিতিতে আমরা হলদিয়া ছাড়ব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.