‘সাদা পোশাকের পুলিশ ছড়িয়ে আছে এলাকায়। কে চুরি করেছে, জানি।’ এমনই কিছু কথা এলাকায় রটিয়েছিল পুলিশ। তাতেই বাজিমাত। বারো ঘণ্টার মধ্যে যে বাড়ি থেকে চুরি হয়েছিল, সেখানেই চোর রেখে গেল প্রায় দেড় লক্ষ টাকার গয়না। আদালতের নির্দেশমতো মঙ্গলবার তা ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। চোর অবশ্য পলাতক।
বালি থানার পুলিশের এহেন দাওয়াইতে বেজায় খুশি এলাকাবাসীরা। বিস্মিত পুলিশের কর্তারাও। হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার অজেয় রানাডের সহাস্য মন্তব্য: “এত দিনের চাকরি জীবনে এমন চোরের কথা শুনিনি। যাক জিনিসগুলো তো উদ্ধার হয়েছে!”
পুলিশ জানায়, বেলুড় ভোটবাগানের একটি চারতলা বাড়ির দোতলায় থাকেন সোনি বানু নামে এক মহিলা ও তাঁর তিন ছেলে-মেয়ে। স্বামী কর্মসূত্রে সৌদি আরবে। অভিযোগ, ২৭ নভেম্বর বাপের বাড়ি যাওয়ার সময়ে গয়না বার করতে গিয়ে সোনি দেখেন শোকেসের নীচের পাল্লা ভাঙা। উধাও গয়নার ব্যাগ। তখনই পুলিশে অভিযোগ করেন তিনি।
পুলিশ জানতে পারে, ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় মহরমের মেলা দেখতে বাড়ির সবাইকে নিয়ে পিলখানায় যান সোনি। ফিরেছিলেন রাতে। পুলিশের অনুমান, তার মধ্যেই ঘটনাটি ঘটে। তবে ওই দিন ফিরে সদর দরজার তালা ভাঙা দেখতে পাননি বলেই সোনির দাবি। পুলিশের এক অফিসার বলেন, “ওই মহিলা ও এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছিল চোর স্থানীয় কেউ। বাড়ির সদর দরজার নকল চাবি দিয়ে ঘর খুলে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।”
পুলিশ জানায়, তদন্ত করে বাড়ির নীচে নেমে দেখা যায় অসংখ্য মানুষের ভিড়। তখনই তদন্তকারী অফিসার চেঁচিয়ে বলতে শুরু করেন, চোরের উপরে নজর রাখতে এলাকায় ছড়িয়ে গিয়েছে পুলিশ। মালপত্র এখনও এলাকাতেই আছে। ভোটবাগানেও একই কথা বলা হয়।
পুলিশ জানায়, সেই ওষুধেই কাজ হয়। পরের দিনই পুলিশকে ফোন করে সোনি জানান, ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে দেখেন গোলাপি-সাদা ব্যাগটি। ভিতরে খোয়া যাওয়া গয়নাগুলি। পুলিশ তখনই সেগুলি সোনির হাতে দেয়নি। পুলিশি হেফাজতে নিয়ে আদালতের নির্দেশ পেয়েই তা তুলে দেওয়া হয় মালিকের হাতে। সোনি বলেন, “এ ভাবে মালপত্র উদ্ধার হবে ভাবিনি। চোর ধরা পড়লে আরও ভাল লাগবে।” |