|
|
|
|
অস্বস্তিতে কংগ্রেস |
সম্পত্তি তদন্ত চলবে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বিপাকে সপা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
মুলায়ম সিংহ যাদব এবং তাঁর দুই পুত্র অখিলেশ ও প্রতীক যাদবের বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির অভিযোগ নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে দেখতে সিবিআই-কে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ, তদন্ত রিপোর্ট কেন্দ্রের কাছে না দিয়ে যেন সরাসরি আদালতে পেশ করে সিবিআই। তবে মুলায়মের পুত্রবধূ
তথা অখিলেশ যাদবের স্ত্রী ডিম্পল যাদবকে এই মামলা থেকে আজ রেহাই দিয়েছে আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে মুলায়ম কিছুটা বেকায়দায় পড়বেন বলেই মনে করছেন বিরোধীরা। প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য না করলেও বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, আদালতের রায় সরকারকেও অস্বস্তিতে ফেলবে। সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য কংগ্রেস সিবিআইয়ের অপব্যবহার করেছে বলে এমনিতেই অভিযোগ উঠছিল। বিজেপির বক্তব্য, আজ আদালত সিবিআই-কে নির্দেশ দিয়েছে তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন নেই। এ থেকেই স্পষ্ট যে, তদন্ত
প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের আশঙ্কা রয়েছে সুপ্রিম কোর্টেরও। সর্বোচ্চ আদালতের এই রায় কংগ্রেস ও মুলায়মের মধ্যে দূরত্ব বাড়াবে বলেও ধারণা বিজেপির একাংশের। বিশেষত আদালতের সিদ্ধান্তের পরে মুলায়ম সিবিআই নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করায় খুশি বিরোধীরা।
তবে রাজনীতির কারবারিদের মতে, কংগ্রেস বা মুলায়ম দু’পক্ষই প্রাথমিক ভাবে অস্বস্তিতে পড়লেও কারও এতে বিশেষ ক্ষতি হবে না। কারণ প্রথমত, আদালতের রায়ের পর মুলায়মের বিরুদ্ধে মামলায় কংগ্রেস তথা সরকারের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ কম থাকবে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে সিবিআই তদন্ত কোন দিকে এগোচ্ছে, তা ঘরোয়া ভাবে সবটাই জানতে পারবে সরকার। আদালত আজ মুলায়মকে রেহাই দিলে সিবিআইয়ের অপব্যবহার নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আরও তীব্র হতে পারত। তা ছাড়া আরও একটি বিষয়ে কংগ্রেসের খুশির কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। তাঁদের মতে, যে হেতু মুলায়ম ও তাঁর পুত্রের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত, তাই কংগ্রেসের সঙ্গে বড় কোনও সঙ্ঘাতে যাবেন না এই সপা নেতা। বিশেষ করে অখিলেশ যাদব এখন তরুণ নেতা। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর রাজনৈতিক ভাবমূর্তিতে এখনই কালি লাগুক, এমনটা চাইবেন না মুলায়ম।
প্রসঙ্গত, ২০০৫-এ বিশ্বনাথ চতুর্বেদী নামে উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেসের এক নেতা মুলায়ম তাঁর দুই পুত্র ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে আয়ের অতিরিক্ত সম্পত্তির অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন। ওই মামলার শুনানির পর আদালত সিবিআই-কে তদন্তের নির্দেশ দেয়। কিন্তু এরই মাঝে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে মামলা থেকে অব্যাহতি চায় মুলায়ম পরিবার। তাঁদের বক্তব্য শোনার পর গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রায় ‘রিজার্ভ’ রেখেছিল আদালত। আজ প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীর ও বিচারপতি এইচ এল দাত্তুকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ মুলায়ম পরিবারের রিভিউ পিটিশন খারিজ করে দেয়। সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, সিবিআই-কে তদন্তের যে নির্দেশ অতীতে সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছিল, তা কিছুটা পরিবর্তন করা হচ্ছে। সিবিআই যে হেতু নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান, তাই সরকারের সঙ্গে তাদের আলোচনার প্রয়োজন নেই। তবে এক মাত্র ডিম্পল যাদবের জন্য রিভিউ পিটিশন গ্রহণ করে আদালত। সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, যখন অভিযোগ করা হয়েছিল তখন ডিম্পল কোনও পদে ছিলেন না।
আদালতের রায় নিয়ে গোড়ায় ক্ষোভ জানিয়েছিলেন মুলায়ম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে দেখা করার পরে তিনি বলেন, “রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি।”
|
মুলায়মের মাথাব্যথা |
ডিসেম্বর ২০০৫ |
সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা |
১ মার্চ, ২০০৭ |
সিবিআই-কে প্রাথমিক তদন্তের নির্দেশ |
১৫ মার্চ, ২০০৭ |
নির্দেশ চ্যালেঞ্জ মুলায়মদের |
২৬ অক্টোবর, ২০০৭ |
আদালতে ফৌজদারি তদন্ত করার আর্জি পেশ সিবিআই-এর |
২২ জুলাই, ২০০৮ |
সমাজবাদী পার্টির সাহায্য নিয়ে আস্থা ভোটে জিতল ইউপিএ-১ |
২১ নভেম্বর, ২০০৮ |
সিবিআই তদন্ত বন্ধ করার পরামর্শ দিলেন সলিসিটর জেনারেল |
৬ ডিসেম্বর, ২০০৮ |
ফৌজদারি তদন্ত করতে চাই না, সুপ্রিম কোর্টে বলল সিবিআই |
মে ২০০৯ |
লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ঘুচল সমাজবাদী পার্টির |
৩০ মার্চ, ২০০৯ |
অবস্থান পাল্টে ফের তদন্ত করার আর্জি জানাল সিবিআই |
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১১ |
তদন্তে মুলায়মদের আপত্তি নিয়ে রায়দান স্থগিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট |
১৩ ডিসেম্বর, ২০১২ |
মুলায়মদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালানোর নির্দেশ শীর্ষ আদালতের |
|
|
|
|
|
|