বিনোদন
সুরেলা জীবনকে গ্র্যামির কুর্নিশ
খনও কানে ভাসছে তাঁর গলা। গত সপ্তাহেই কথা হয়েছিল পণ্ডিতজির সঙ্গে। কিন্তু সাত দিনের মধ্যেই যে অবসান হয়ে যাবে রবি-যুগের, ভাবতে পারেননি রেকর্ডিং অ্যাকাডেমির প্রেসিডেন্ট নেল পোর্টনাও। তাই আজ ওই মানুষটির অনুপস্থিতিতেই তাঁদের ঘোষণাটা করতে হল ২০১৩-র ৫৫তম গ্র্যামি অনুষ্ঠানে সারা জীবনের অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া হবে পণ্ডিত রবিশঙ্করকে। মরণোত্তর স্বীকৃতি।
গত কয়েক বছর ধরেই হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন কিংবদন্তি সেতারবাদক। লা জোলা-র স্ক্রিপস মেমোরিয়াল হাসপাতালে গত বৃহস্পতিবার তাঁর হৃদ্যন্ত্রের ভাল্ভ প্রতিস্থাপন হয়। অস্ত্রোপচারের ধকল আর সামলাতে পারেননি তিনি। পরশু, ১১ ডিসেম্বর জীবনাবসান ঘটে রবিশঙ্করের।
গ্র্যামির মুখপাত্র স্টেফানি শেল বলেন, “রবিশঙ্করকে যে এই স্বীকৃতি দেওয়া হবে, সে সিদ্ধান্ত তাঁর মৃত্যুর আগেই নিয়েছিলাম আমরা। সেই মতো, গত সপ্তাহেই প্রেসিডেন্ট নেল পোর্টনাও ফোনে যোগাযোগ করেছিলেন তাঁর সঙ্গে।”
নেল নিজেই জানালেন, এক সপ্তাহ আগে এমন এক জন ব্যক্তিত্বের সঙ্গে কথা বলে কতটা উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সে স্মৃতি তাঁর এখনও টাটকা “খবরটা আমিই ফোন করে জানিয়েছিলাম। নিজেকে ধন্য মনে হয়েছিল।” ...বলে চললেন নেল, “খবরটা শুনে উনি অভিভূত হয়ে যান। এত খুশি হয়েছিলেন, যে ওঁর সঙ্গে ওঁর বাড়িতে যাওয়ার জন্য নেমতন্ন করেছিলেন।” কিন্তু সে নিমন্ত্রণ আর রক্ষা করা হল না নেলের। তার আগেই ছুটি নিলেন রবিশঙ্কর।
রবিশঙ্করের প্রথম গ্র্যামি-জয় ১৯৬৭ সালে। সৌজন্যে ইহুদি মেনুহিনের সঙ্গে যুগলবন্দি ‘ওয়েস্ট মিটস ইস্ট’। এর পর আরও দু’বার গ্র্যামি জেতেন তিনি। শেষ বার জিতেছিলেন ২০০০ সালে।
‘ফুল সার্কেল কারনেগি হল ২০০০’ অ্যালবামের জন্য। তিন বারের বিজয়ী এ বারেও মনোনয়ন পেয়েছিলেন। সামনের বছর ১০ ফেব্রুয়ারি লস অ্যাঞ্জেলেসের স্টেপলস সেন্টারে গ্র্যামি-র পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। রবিশঙ্কর ছাড়াও আরও ছ’জনকে সারা জীবনের অবদানের জন্য পুরস্কার দেওয়া হবে সে দিন। তবে ভারতীয়দের কৌতূহলের কেন্দ্রে ছিল গ্র্যামিতে বাবা-মেয়ের লড়াই। ‘দ্য লিভিং রুম, সেশনস পার্ট ১’ অ্যালবামের জন্য ওয়ার্ল্ড মিউজিক বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছিলেন রবিশঙ্কর। একই বিভাগে নিজের ‘ট্রাভেলর’ নিয়ে বাবার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামার কথা ছিল অনুষ্কাশঙ্করের। বাবা এগিয়ে রেখেছিলেন মেয়েকে। আর মেয়ে বলেছিলেন, জিতবেন বাবাই।
চূড়ান্ত ফলাফল জানতে গ্র্যামি সন্ধ্যায় থাকবেন না রবিশঙ্কর।
জানবেন না কে জিতলেন, তিনি না তাঁর ছোট মেয়ে।
বড় মেয়ে নোরা জোন্সের সঙ্গে কোনও দিনই সম্পর্ক সহজ হয়নি রবিশঙ্করের। অনুষ্কাই এক বার বলেছিলেন সে কথা। সেই নোরা, রবিশঙ্করের ‘গীতালি’ জানিয়েছেন, বাবাকে ভীষণ মিস করছেন তিনি। বলেছেন, “আমি তো বটেই, যেখানে যত সঙ্গীতপ্রেমী আছেন, সবাই ওঁর অভাব অনুভব করব।” নিজের ফেসবুক পেজে রবিশঙ্করের কিছু ভিডিও পোস্ট করেছেন নোরা। লিখেছেন, “যাঁরা মুখোমুখি বসে আমার বাবার বাজনা শোনেননি, এই ক্লিপিংগুলো তাঁদের জন্য। আই লাভ ইউ পপস্।”
বাবাকে ছুঁয়ে দেখছেন ন’টা গ্র্যামিজয়ী বড় মেয়ে। ছড়িয়ে দিচ্ছেন বাবার সুর। তাঁর অগণিত গুণমুগ্ধদের জন্য। কে বলে, গ্র্যামির মঞ্চে রবিশঙ্কর থাকবেন না! ভীষণ প্রবল ভাবে থাকবেন। থাকবেন তাঁর মেয়েদের মধ্যে। ভক্ত-শুভানুধ্যায়ীদের মুখে-মনে। গল্পে-গানে। সেতারের মূর্ছনায়। চিরকাল...।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.