আজমল কাসভের ফাঁসির পরে মুম্বই সন্ত্রাসে অভিযুক্তদের দ্রুত শাস্তির বিষয়ে পাকিস্তানের উপরে চাপ বাড়াতে চাইছে ভারত। আগামিকাল দিল্লিতে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিকের সঙ্গে বৈঠকে সেই চেষ্টাই করবেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে। আগামিকাল আনুষ্ঠানিক ভাবে দু’দেশের মধ্যে সহজ ও শিথিল ভিসা ব্যবস্থা চালু হবে। তার বাইরে মালিকের এই সফর যাতে কোনও ভাবেই বাড়তি মাত্রা না পেয়ে যায়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকছে কেন্দ্র। তাই মালিক কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও তা নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।
ভিসা ব্যবস্থা শিথিল হয়ে গেলে ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও পর্যটনে আমূল পরিবর্তন ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাড়বে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগও। কিন্তু সন্ত্রাস প্রশ্নে নয়াদিল্লি কোনও নরম মনোভাব দেখাতে চাইছে না। শিন্দে আজ বলেন, “মুম্বই হামলার যে সব ষড়যন্ত্রী পাকিস্তানে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে, তাদের অবিলম্বে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া উচিত।” হামলায় জড়িত জাকিউর রহমান লকভি-সহ লস্কর-ই-তইবার সাত জঙ্গির পাকিস্তানের আদালতে বিচার চলছে। ২৬/১১-র তদন্তে পাকিস্তানের একটি বিচারবিভাগীয় কমিশনের ভারতে আসার কথা। ওই কমিশনের তদন্তে উঠে আসা তথ্য বা নথি যাতে পাক-আদালতে সাক্ষ্য হিসেবে গৃহীত হয়, সে বিষয়ে ইসলামাবাদের কাছে প্রতিশ্রুতি চাইছে নয়াদিল্লি। কারণ এর আগে পাকিস্তানের বিচারবিভাগীয় কমিশন ভারতে এসে কাসভ ও তদন্তকারী অফিসারদের বক্তব্য রেকর্ড করে নিয়ে গেলেও পাক-আদালত তা সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেনি।
চলতি বছর অগস্টে তেহরানে পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি পাকিস্তান সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানান মনমোহনকে সিংহকে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী তখনই জানান, তিনি যেতে রাজি। কিন্তু মুম্বই হামলার দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা এবং ভারত বিরোধী সন্ত্রাস রোধে কিছু পদক্ষেপ করে ইসলামাবাদকেই তাঁর সফরের জন্য ‘উপযুক্ত পরিবেশ’ তৈরি করে দিতে হবে। সেই হিসেবে প্রাপ্তির ঝুলি এখনও কার্যত শূন্য। তাই সব দিক মাথায় রেখেই সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে মালিকের বৈঠকের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, পাকিস্তানের আবেদন সনিয়ার অফিসে পাঠানোই হয়নি। বিদেশ মন্ত্রকই এতে আপত্তি জানায়। যুক্তি দেওয়া হয়, সনিয়া গাঁধী সরকারের কেউ নন। যে যুক্তিতে কিছু দিন আগে বাংলাদেশের বিরোধী দলনেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গেও দেখা করেননি সনিয়া।
তবে রেহমান মালিকের সঙ্গে বৈঠক করবেন মনমোহন সিংহ। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন ও বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গেও একই দিনে মালিকের বৈঠক হবে। প্রধানমন্ত্রী এবং মেনন, দু’জনেই সন্ত্রাসের প্রশ্নে রেহমান মালিকের উপর চাপ বাড়াতে চাইবেন বলে মনে করা হচ্ছে। সে দিক থেকে রেহমান মালিক কী প্রতিশ্রুতি দেন, সেটাই দেখতে চাইছে নয়াদিল্লি। কারণ পাকিস্তানের ঘরোয়া রাজনীতির চাপও রয়েছে মালিকের উপর। ভারত হাফিজ সইদকে হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে বলে পাকিস্তানের মৌলবাদী দল জামাত-ই-ইসলামি এই সফর বাতিলের দাবি তুলেছে। হাফিজ সইদদের কণ্ঠস্বরের নমুনাই এখনও ভারতের হাতে তুলে দেয়নি পাকিস্তান। শিন্দে তবু আশাবাদী। আজ তিনি বলেন, “মনে হয়, পাক
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মনোভাব ইতিবাচক। এ বারের বৈঠকেও কণ্ঠস্বরের নমুনার প্রসঙ্গ তুলব।” |