দুর্নীতি, পক্ষপাতের নালিশ
পথে শুয়ে প্রতিবাদ কংগ্রেসের
র্থ বরাদ্দে পক্ষপাতিত্ব ও নানা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে সিপিএম পরিচালিত শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের মূল গেট আটকে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শুয়ে থেকে প্রতিবাদ করলেন কংগ্রেসের দু’জন পঞ্চায়েত সদস্য। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি শহরে। প্রতিবাদীদের এক জন হলেন ফাঁসিদেওয়া পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি প্রণবেশ মণ্ডল। অন্য জন, গোঁসাইপুর পঞ্চায়েত প্রধান আনন্দ ঘোষ। বেলা দেড়টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত দুই নেতা শুয়ে থাকায় সভাধিপতি পাসকেল মিন্জ বাইরে বেরোতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত সভাধিপতি ওই দু’জনের অভিযোগ ও দাবি কার্যত মেনে নিয়ে পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক ব্যায়-বরাদ্দের বৈঠক ফের ডাকার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। সভাধিপতি বলেন, “দুর্নীতি ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ঠিক নয়। তবুও ওঁদের দাবিকে মর্যাদা দিয়ে ফের বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
এ দিন পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডাকা হয়। প্রণবেশবাবু এবং আনন্দবাবু ওই দুটি কমিটির সদস্য। দুপুর দেড়টা নাগাদ তাঁরা বৈঠক থেকে বেরিয়ে পঞ্চায়েত সমিতি সভাধিপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ তুলে প্রধান ফটকের সামনে শুয়ে পড়েন। মুহূর্তের মধ্যে সেখানে ভিড় জমে যায়। ধীরে ধীরে কংগ্রেসের জেলা স্তরের নেতা-কর্মীরা সেখানে জড়ো হয়ে প্রতিবাদে সামিল হন। পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত, জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকার সহ অনেকেই যান।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সামনে অবস্থান। ছবি: সন্দীপ পাল।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের আওতায় রয়েছে ৪টি পঞ্চায়েত সমিতি। ফাঁসিদেওয়া ও নকশালবাড়ি যথাক্রমে কংগ্রেস ও তৃণমূলের দখলে। বাকি দুটি সিপিএমের। মোট গ্রাম পঞ্চায়েতের ২২টির মধ্যে কংগ্রেসের দখলে রয়েছে ১২টি। প্রণবেশবাবু ও আনন্দবাবুর অভিযোগ, সাড়ে তিন বছর ধরে সিপিএমের দখলে থাকা পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে রাস্তা, সেতু তৈরির একাধিক প্রকল্পে টাকা দেওয়া হয়েছে। খড়িবাড়িতে সভাধিপতির বাড়ির সামনে ২ কোটি টাকায় রাস্তা তৈরি হচ্ছে। গোঁসাইপুরে শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুধীর বর্মনের এলাকায় কয়েক লক্ষ টাকার প্রকল্পে কাজ হচ্ছে। অথচ ফাঁসিদেওয়া পঞ্চায়েত সমিতির সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েতে কার্যত কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের। বিধাননগর ১ ও বিধাননগর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গত সাড়ে তিন বছরে একটি টাকারও কাজ হয়নি বলে দাবি করেছেন তাঁরা। শান্তিপাড়ায় ২ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকার একটি কাজ করার সিদ্ধান্ত হলেও তা আটকে রাখা হয়েছে। সজলধারা প্রকল্পে গত কয়েক বছর ধরে দুর্নীতি চরম আকার ধারণ করেছে বলেও দাবি করেন তাঁরা। প্রণবেশবাবু বলেন, “পরিষদের প্রতিটি বৈঠকে সরব হয়েছি। প্রতিবাদ পত্র দিয়েছি। কোনও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। সভাধিপতি নিজের ইচ্ছে মতো বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ করছেন। বৈষম্যমূলক আচরণ এবং দুর্নীতি চলছে। এর বিরুদ্ধেই আমাদের আন্দোলন।” পক্ষান্তরে, সভাধিপতির অভিযোগ, রাজনীতি করার জন্যই কংগ্রেসের ওই দুই সদস্য অবস্থানে বসেছেন। তিনি বলেন, “আমরা যতটুকু টাকা পেয়েছি, তা সবার মধ্যে সমান ভাবে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। আমার বাড়ির সামনে ২ কোটি টাকায় যে রাস্তা হচ্ছে তা মানুষের জন্যই। শান্তিপাড়ার কাজে অফিসের সমস্যার জন্য টেন্ডারে একটু দেরি হয়েছে। বিধাননগরের দুই গ্রাম পঞ্চায়েত ২৫ লক্ষ টাকার কাজ হয়েছে।” তিনি জানান, এ দিনের বৈঠকেও বিধাননগর-১ একটি রাস্তা তৈরির জন্য ৯৭ লক্ষ টাকা এবং একটি নলবাহিত জল প্রকল্পের জন্য ১ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মহকুমা পরিষদের বিরোধী দলনেতা আইনুল হক দলের সদস্যদের ওইআন্দোলনকে সমর্থন করেন। তিনি বলেন, “বৈষম্য হচ্ছে এটা পরিষ্কার।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.