নাগপুরে নেমে সচিন তেন্ডুলকরের প্রথম স্টেশন কী?
মাঠ নয়, মন্দির।
বাইশ গজ দেখা নয়, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সম্মান বাঁচানোর যুদ্ধে নামার আগে লিটল মাস্টার ছুটলেন আড়াইশো বছর পুরনো জাগ্রত গণপতির মন্দিরে। গত কাল বিকালেই ভারতীয় দল পৌঁছে গিয়েছে নাগপুরে। সচিন সন্ধ্যাতে চলে যান মন্দিরে।
আগে ভাগেই ঠিক করে রেখেছিলেন এখানকার বিখ্যাত গণেশ টেকরিতে এসে প্রার্থনাটা সেরে যাবেন। সচিনের গণপতি ভক্তির ঘটা কী রকম, গত মাসে শুনিয়েছিলেন তাঁর দ্রোণাচার্য রমাকান্ত আচরেকরের মেয়ে কল্পনা। আচরেকর কোনও অনুষ্ঠানে না গেলেও তাঁর প্রিয় ছাত্রর বাড়িতে গণপতি উৎসবে যাবেনই। এ বছরও গিয়েছিলেন। সঙ্গে তাঁর কন্যা ও পরিবার। সচিন নিজে গাড়ি পাঠিয়ে তাঁর ক্রিকেট গুরুকে আনিয়েছিলেন বাড়ির উৎসবে। হইচই, বন্ধু-আত্মীয়দের ঢালাও খাওয়া দাওয়ার আয়োজন থাকলে কী হবে, সন্ধ্যা আরতি না হওয়া পর্যন্ত কিন্তু গোটা দিনটা উপোস করে ছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার। সেই সচিন গণপতির জাগ্রত মন্দিরে এসে তাঁর দর্শন করবেন না, ভাবাটাই ভুল। |
তবে গণপতি টেকরির চেয়েও বোধহয় বেশি বিখ্যাত নাগপুরের কমলালেবু। তা সেই রসালো কমলালেবুর মতো রসালো উইকেট কিন্তু এখানে দেখার কোনও সম্ভাবনাই নেই। জামথা স্টেডিয়ামের উইকেটকে প্রচণ্ডরকমের রসহীন করার ‘অর্ডার’ এসেছে বোর্ডের কাছ থেকে। কিউরেটর প্রাক্তন রঞ্জি ক্রিকেটার প্রবীন হিঙ্গানিকরকে মুখে কুলুপ এঁটে বসেও থাকতে বলা হয়েছে। সবাই তো আর প্রবীর মুখোপাধ্যায় নন। উনি যতটা বেপরোয়া, ইনি ততটাই ‘ওবিডিয়েন্ট’। কাছে গেলে বা ফোন করলেই রীতিমতো রোবটের ভঙ্গিতে বলছেন, “আয়্যাম নট অ্যালাওড টু স্পিক টু এনিবডি রিগার্ডিং উইকেট”, অর্থাৎ উইকেট নিয়ে কোনও কথা বলার আজ্ঞা নেই তাঁর কাছে।
তবে এখানকার ক্রিকেট মহলে সাফাইওয়ালা থেকে ভিসিএ কর্তা, একটা কথা সব্বাইকে বলতে শোনা যাচ্ছে, টেস্টের ফয়সালা হবেই। উইকেট না কি তেমনই হয়েছে। শুকনো খটখটে, কঠিন, জল দেওয়া হচ্ছে না গত দু’দিন ধরে, ঘাসের ছিটেফোঁটা নেই। ইডেনে ঢুকেই যেমন উইকেট দেখতে ছুটেছিলেন ধোনি, নাগপুরে এসে সেই দায়িত্বটা নিলেন সচিন। নেটে ব্যাট করতে যাওয়ার আগে চেতেশ্বর পূজারাকে সঙ্গে নিয়ে উইকেটের দুই প্রান্তে দাঁড়িয়ে ২২ গজের হাল পরখ করে নিলেন তিনি। পরে কিউরেটরের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেল অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে।
ঘন্টা তিনেকের প্র্যাক্টিসে যতটা সিরিয়াস ভারতীয় শিবির, তার চেয়েও বেশি গম্ভীর সচিন। নেটে ব্যাটিং, নকিং সবই করলেন। ফ্লেচারও দৌড়ে বেড়ালেন সারাক্ষণ। এ দিক থেকে ও দিক। এক জন থেকে আর এক জন। বোঝাই যাচ্ছে টেস্ট সিরিজের খেতাব ইংল্যান্ডকে তাঁদের দেশে না নিয়ে যেতে দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন ভারতীয়রা। টিমের নতুন ব্রিগেডও ঢুকে পড়ল। রঞ্জি খেলে পীযূষ চাওলা, রবীন্দ্র জাডেজা, অশোক দিন্দা ও পরবিন্দর আওয়ানা শহরে এলেন মঙ্গলবার রাতে। তবে অশ্বিন ব্যক্তিগত কারণে এক দিনের ছুটি চেয়েছিলেন। বুধবার থেকে ফের নামবেন অ্যাকশনে। |