প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া-র কর্ণধার মার্কণ্ডেয় কাটজু বলেছেন, ভারতের শতকরা নব্বই জন মানুষই ‘fool’. অভিধানে ‘ফুল’ মানে বোকা, অবোধ, নির্বোধ ইত্যাদি। তবে কিনা, অক্সফোর্ড জানাচ্ছে: ‘ফুল’ হল এমন কেউ, যার কথা শুনে বা চালচলন দেখে মনে হয়, তার বুদ্ধি বা বিবেচনার অভাব আছে।
সে কী? দেখে মনে হয়? কিন্তু দেখে যা মনে হয়, তা যে সত্যি, তার গ্যারান্টি কে দেবে? তবে তো বেশ ভাবনায় পড়া গেল।
ভারতবাসীকে দেখে কাটজুর কেন বোকা বলে মনে হয়েছে? তাঁর একটি বড় যুক্তি, ‘আমাদের দেশের বেশির ভাগ লোক জাতপাত বা ধর্ম দেখে ভোট দেয়, প্রার্থীর গুণাগুণ বিচার করে না।’ খুব চেনা অভিযোগ। চেনা বলে মিথ্যে নয়। ঠিকই তো, ভারতীয় রাজনীতিতে এখনও ব্যক্তির নিজস্ব মেধা, সততা, দক্ষতার দাম কম, ‘আমাদের নিজের লোক’ কি না, সেটাই প্রধান বিচার্য। বড় আক্ষেপের কথা।
কিন্তু কে বলল, সেটা বোকামি? নব্বই শতাংশ মানুষের সামনে আমরা মেধা, দক্ষতা, সততা ইত্যাদি গুণাবলির সম্ভার থরে থরে সাজিয়ে দিয়েছি বুঝি? মেধাবী, দক্ষ, সৎ দু’চার জন প্রার্থী যদি বা ভোটের সিঁড়ি বেয়ে উঠে পড়তে পারেনও, আমাদের রাজনীতি তাঁদের মন ভরে প্রাণ খুলে কাজ করতে দেয় বুঝি?
নব্বই শতাংশ মানুষ ঠেকে শিখেছেন যে, ‘ভাল নেতা’ খুঁজে কোনও লাভ নেই, তার চেয়ে জাতপাত হোক, ধর্ম হোক, কোনও একটা খুঁটি ধরে জোট বেঁধে থাকাই ভাল, জোট যার মুলুক তার। যেখানে অন্য রকম সুযোগ থাকে, তাঁরা সেই সুযোগ নেন, ধর্ম বা জাতপাতের সহজ অঙ্ক ঘেঁটে যায়, লালুপ্রসাদ হাঁ করে তাকিয়ে থাকেন। কিন্তু কোথায় সে সুযোগ আছে, কোথায় নেই, সেটা নব্বই শতাংশ মানুষ নিজেরাই বিচার করে নেন।
তাই বলছিলাম কী, অমিতবাক কাটজুর কথায় নেচে উঠে দুম করে নব্বই শতাংশকে বোকা বলে দাগিয়ে না দেওয়াই ভাল। নিজেই বোকা বনে যেতে পারেন। ‘ফুল’রা অতি বিপজ্জনক। শেক্সপিয়র জানতেন। |